Friday, June 27, 2014

বাবু সূরা কাওসার জানে না

এক বাবু সূরা কাওসার জানত না। তার বাবা বলে, "তুমি সূরা কাওসারটা শিখে ফেল। সূরা কাওসার খুব ছোট্ট। তুমি নিশ্চয়ই তা পারবে।" তারপর তার বাবা-মা মিলে একদিন বইয়ের মেলাতে গেল। বইয়ের মেলায় একটা সূরার বই কিনল। সূরার বইতে কাওসার আছে, নাস আছে, ফাতেহা আছে, ফালাক আছে, সূরা লাহাব আছে, সূরা নাসর আছে- এইসব সূরা আছে। সেই বইটি বইয়ের মেলা থেকে তার বাবা-মা কিনে আনল। বলল, "এই বইটি পড়লে তুমি এগুলো শিখতে পারবে। তারপর সেই মেয়েটা সেই বইটি পড়ল। তার পরের দিন সেই মেয়েটা স্কুলে গেল। স্কুলে অনেক কিছু পড়ল। বাসায় এসে সেই বইটি পড়ে সে সূরা কাওসারটি শিখল। এবার সে বাবুটা সব শিখে গেল। তারপর মা বলে, "যে নতুন বইটা কিনেছি তা তো তুমি দুইবার পড়ে আর পড়তেছ না। যাও, এবার গিয়ে সেই বইটা পড়। সূরা ফাতেহা তো পার। তুমি সূরা লাহাবটা পড়।" সেই বাবুটা সূরা লাহাব পড়ল। সেই মেয়েটার নাম ছিল সোহানা। তার একটি ছোট ভাই ছিল। তার ভাইটি তখন ঘুমাচ্ছিল। তার ভাইয়ের নাম ছিল স্বাধীন। এর আগে সূরার বই কিনতে তার মা-বাবা শুধু একা গিয়েছিল, এবার মেয়েটিও তার বাবা-মায়ের সাথে যায়। এরপর সেই স্বাধীনের বয়স ছিল দুই বছর। আর সেই মেয়েটার বয়স ছিল চার বছর। সে সূরা পড়ে এবার সে একদিন নাস্তায় স্যান্ডউইচ বানালো তার মা। সেই মা তার জন্য স্যান্ডউইচ বানানোর পর সেই মেয়েটি বলল, আগামীকাল টিফিনে নুডুস দিতে। তার মা বলল, "না, আগামীকাল হল আধা ঘন্টা ক্লাস হবে। কালকে শুধু আরবী ইসলাম শিক্ষা হবে। সেই বইটা শুধু নিয়ে যেতে হবে। আধা ঘন্টার মধ্যে কি কারো ক্ষুধা লাগে? দিলে বা একটা দুইটা খেজুর দিতে পারি। ছোট বাটিতে একটা দুইটা খেজুর দিব আমি। তারপর সেটি খেতে পার। তার পরের দিনও তো আমি নুডুস দিতে পারি।" তখন সোহানা বলে, "যেদিন নুডুস দিবে, তার পরের দিন ডিমভাজা দিবে।" বলে, "না, তার পরের দিন তো শুক্রবার।" তারপর সেই মেয়েটি স্কুলে আরবী ইসলাম শিক্ষাতে সূরা নাসটা শিখল, আবার সব ভাল ভাল কথাও শিখল। তারপর বাসায় এসে আবার সেই আরবী বইটা পড়তে বসল। এই ঘটনাগুলো হল তার পরের দিন। সেই মেয়েটি এবার তার ছোট ভাই স্বাধীনকে বলল, "আমরা শুক্রবার একটা বাংলা বই কিনব। সেই বাংলা বইতে না অনেক কিছু আছে। সেই বাংলা বই শিখবে, আরবী বই শিখবে, কিন্তু আরবী বইটাই আমার বেশি দরকার।" স্বাধীন বলে, "শুক্রবার কিন্তু একটা খেলনা ঝুনঝুনি কিনব।" এবার হল কি জান? এইবার হল তারা ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখল। সেই স্বপ্নের মধ্যে দেখে কি, কি সুন্দর একটা দেশ! সেই দেশে তারা গেছে। সে স্বাধীনকেও নিয়ে গেছে। তার বাবা-মা সবাই মিলে গেছে। তারপর সেই সুন্দর দেশটা দেখে। সুন্দর দেশের মধ্যে অনেক সুন্দর পাতা, গাছ-পালা, সুন্দর ফুল-ফল, কি সুন্দর! আবার কী সুন্দর একটা আম গাছ- অনেক আম। তারা আম পেড়ে খেল। এই স্বপ্নটা দেখল। দেখে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে, তার মা তার জন্য সুন্দর একটা ড্রেস কিনেছে। আর স্বাধীনের জন্য একটা সুন্দর ঝুনঝুনি কিনেছে। তারপর সোহানা বলে যে, আমার জন্য আরেকটা কিছু দরকার। আমাকে কি আমার মামীর বাসায় নিয়ে যেতে পার? তার বাবা আর মা বলে, "সে তো কালকে ছুটি। কালকে তো শুক্রবার। তা শুক্রবার বেশি ভিড় হবে না? তোমার মামীর বাসা তো শিশুপার্কের রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।" বলে, "না, আমি যাবই। তোমার শুক্রবার যাওয়া লাগবে কিসে? তুমি শুক্রবার ছাড়া অন্য সময় ছুটি পাওয়া যায় না?" "ছুটি তো আসবে। রবিবার ছুটি।" "তাহলে সেবার নিয়ে যেতে পার।" বলে, "না, সেবার গেলে হবে না। তোমরা বরং মঙ্গলবার যাও। মঙ্গলবার সরকারী ছুটি নয়। আর সেই রবিবার তো সরকারী ছুটি। সরকারী ছুটির মধ্যে আমরা যাব না।" তারপর সেই সোহানা বলে, "স্বাধীন কি যাবে?" "স্বাধীনকে রেখে গেলে কি হবে? স্বাধীনকে রেখে গেলে একা থাকবে না? স্বাধীনকে তো নিয়েই যেতে হবে।" বলে, "ঠিক আছে।" তারপর আবার সেই আরবী বইটা পড়তে বসল। আরবী বই পড়তে আসার পর তার মা-বাবা নিয়ে একদিন মার্কেটে গেল। মার্কেট থেকে একদিন সেই স্বাধীনের জন্য কিছু কিনল না। সেই সোহানাকে একটা ছোট ফুলের সাথে বড় ফুল গিফট দেওয়ার কিনে দিল। তারপর সেইটা তারা বাসায় নিয়ে গেল। বাসায় নিয়ে এসে গিফটা খুলল। সেই ছোট ফুলটা দিল স্বাধীনের কাছে। স্বাধীন তো সেই ফুলটা নিয়ে নাড়ে, চাড়ে আর ফাকে ফাকে ঝুনঝুনি নিয়ে খেলে। আর সোহানা শুধু সেই আরবী বই পড়ে, আর সেই বাংলা বইটাও পড়ে। 

Sunday, June 1, 2014

জন্মদিনের জেদ ধরা

এক ছিল এক বাবু। সেই বাবুটা শুধু বলত, জন্মদিন হবে কবে? তাদের মা বলে, "এই তো, তোমার জন্মদিন জুলাই মাসের ১৫ তারিখ। আর ৩০ বা ৩১ দিন পরের কয়েক দিন পরই তোমার জন্মদিনটা হতে পারে।" "তবু মাগো, আমার জন্মদিন করা লাগবেই।" "তাহলে বেলুন কিনে এনে ঘরে বসে একটা কেক বানিয়ে মধু বা অন্য কোন ক্রিমের মত কিছু থাকলে সেটা দিয়ে সাইন করে দিলেই তাহলেই কেক হয়ে যাবে। তারপর সেভাবে জন্ম তারিখ না করে জন্মদিন করলে তো মানুষে বোকা বলবে। সেটার কি হবে গো?" বলে, "সেটার কিছু হবে না। মানুষে কিছু বললে বলবা যে, আমার মেয়ে খুব বায়না ধরেছে, সেজন্য জন্মদিনটা হয়েছে। এটা বললেই কেউ আর বোকা বলবে না।" "তাহলে দূর থেকে কোন মানুষ পরে আসলে যদি অন্য মানুষের কাছে থেকে জানতে পারে, তাহলে অন্য মানুষেরা যদি বলে না, যে কথাটা আমরা বলব, সে কথাটা যদি বলে না, তাহলে তো দূর থেকে কেউ এসে তোমার বাবাকে, আমাকে আর তোমাকে বলবে, জন্ম তারিখ না হলে জন্মদিন হতে পারে না। জন্মদিন হলে জন্মদিনের তারিখ ঠিক রাখতে হবে। এ বলে তারা সব সময় খিল খিল করে হাসবে। অার এই কথা বলবে। আর করবে কি জান, আর করবে হচ্ছে আমাদের বেলুন ওরা ফুলাবে। ফুলিয়ে ঠাস ঠাস করে ফুটাবে।" এবার বাচ্চা বলল, "মা, তুমি এসব কথা বলছ কেন? জন্মদিন হলে হবে কি, অ্যাঁ। জন্মদিন হলে মানুষ আরো আনন্দ করবে।" বলে, "আরে বোকা, এত বোকা হলে কিছু হয়? জন্মদিন হলে মানুষে তো অন্য দেশে গেলে অন্য দেশকেও বলবে।" "মা, সেই একই কথা! তুমি এসব কথা বলছ কেন? এসব কথা বললে তো জন্মদিন তো উধাও হয়ে যায়।" [প্র: আসলটাও কি উধাও হয়ে যাবে? উ: আসলটা থাকবে, কিন্তু ওর জেদেরটা যে থাকবে না। এই হল কথা] তারপর বলে, "ঠিক আছে, বলছ যখন, একটা কেক বানাই। কিন্তু কেক বানাতে এক-দুই-তিন ঘন্টা লাগতে পারে। বা ত্রিশ মিনিটও লাগতে পারে। এবার কেক বানাতে তো অনেক কিছু লাগবে।" এবার তার মা গিয়ে কেক চুলায় বসিয়ে দিয়ে আসল। বলল, "কেক বানিয়ে এনেছ?" বলে, "না, কেবল কেক বসিয়ে দিয়ে আসলাম। এতক্ষণে কেক বানানো হবে বলে? এবারে আমি কেকটা বানাতে বসিয়ে দিলাম। এবার তুমি খেল।" মেয়েটি খেলল। কিন্তু মেয়েটির নাম ছিল কি সেটা কি তোমরা জান? মেয়েটির নাম ছিল মিহিদা তাসনীম। সে তার নাম খাতায় লিখল। খাতায় লিখে স্কুলে গিয়ে তার মিসকে দিল। মিস সেটি নিল। নিয়ে মিস তাকে একটা কাগজ দিল। সে কাগজে অনেক কিছু লেখা। লেখা, "খেলার সময় ভালভাবে খেলবে, লেখার সময় ভালভাবে লেখবে। ভালভাবে থাকবে। পড়ার সময় ঠিকভাবে পড়বে। আর সব সময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরবে। আর তোমরা ভালমত কাজ-টাজ করবে।" এটুকু ছিল লেখা। কেক বানিয়ে তার মা ফ্রিজে রেখে দিল। সেটা এখন তারা খাওয়ার জন্য বসল চাকু নিয়ে। চাকু দিয়ে বলল, "একা একা কেক কাটব কেমনে? একা একা কেক কাটলে মানুষ জনকে না দিলে কেক খাবে কে? এত বড় কেকটা মানুষ না থাকলে খেতে পারবে? কেক তো নষ্ট হয়ে যাবে। মা, কাউকে দাওয়াত দাও, দাওয়াত দিয়ে আসতে বলো।" তার মা তো দাওয়াত দেয়ার আগে বলল, "কিন্তু শুনে নিও, আমি কিন্তু আর বলতে পারব না, জন্মদিন। আমি বলব, একটা মজার দিন হয়েছে, তাই একটু কেক বানিয়েছি। এটা বলব। আমি কিন্তু জন্মদিন বলে বলতে পারব না।" এবার তাকে সে কল দিল। দাওয়াত দিয়ে বলল, "তোমরা তাড়াতাড়ি চলে আস।"- এ বলে ফোন রেখে দিল। তখন সাদিয়ারা চলে আসল। সাদিয়াদেরকে এক পিস করে কেক দিল। সাদিয়া তার হাতের উপর হাত রাখল। আর যার উপর হাত রাখল, সে চাকুটা ধরে কেকের উপর দিয়ে কেকটা কেটে ফেলল। আর সেই কেকটা সবাই মিলে খেল। তারপর তারা বেলুন লাগাল, বেলুন নিয়ে তারা কেক কাটার সময় হ্যাপি বার্থডে বলে তারা বেলুন ফুটিয়ে-ফাটিয়ে বেলুন নিয়ে খেলে-ধুলে তারা বাসায় চলে গেল।