Monday, December 8, 2014

রিতা, মিতা ও সিতা

মিতা একদিন রিতা ও সিতাকে দাওয়াত দিল। তারা খুব কাজে ব্যস্ত। তার মানে রিতা ও সিতা ব্যস্ত। তাকে তারা দাওয়াত দেবার পর তারা ভাবল যে, আচ্ছা, এত কাজ রেখে আমরা যাব কি করে দাওয়াত খেতে? তখন তাদের একটি মেয়ে ছিল। মানে তাদের একটা বান্ধবী। সে খুব ছোট। রিতা ও সিতা সেই ছোট মেয়েটাকে অনেক আদর করে। মেয়েটার পাচ বছর। রিতা ও সিতার ছয় বছর। সেই মেয়েটা শসা ছিলতে পারে, আলু ছিলতে পারে, আদা ছিলতে পারে ও কাপড় ভাজ দিতে পারে। এবং মেয়েটি কিছু এনে দিতে বললে এনে দিতে পারে, রেখে দিতে বললে রেখে দিয়ে আসে। মেয়েটি খুব কাজ করতে পারে। অনেক কাজ। বিছানা গুছাতে পারে মেয়েটি। আর বালিশের কভারও ভরতে পারে। মিয়েটি খুব কাজ পারে। মেয়েটি খুব সুন্দর্ এমনকি গাজরও সে ছিলে। এবার সবাই বলে, এই মেয়টি সব কাজ করতে পারবে। আমাদের বড়দের শুধু রান্নাবাড়ি আর বটি দিয়ে কোটাকুটির জিনিস করতে হয়। এগুলো করলেই হবে। বাবুটা বাকি সব পারে। আমরা নিজে চোখে দেখলাম, মেয়েটি এত চালাক। সব কাজ ও করে দিলে আমরা তাড়াতাড়ি দাওয়াত খেতে যেতে পারব। মেয়েটি আলু ছিলতে পারে। সেজন্য সে আলু ছিলল। সে আদা ছিলল। এমনকি সবকিছু সে ছোটদের মধ্যে যেটা পারে বড়দের কাজ ছোটরা যেটা করে দিতে পারে সেই সব কাজ সে পারে। সে সব করে দিচ্ছে। এবার মিতা ঙেয দাওয়াত দিয়ে বসে আছে তার দিকে খেয়াল নেই তাদের। তারা ঐ মেয়েটাকে নিয়ে রান্নাবাড়ি করছে। মিতা বসে বসে তবে মিতার বয়স একটু বেশি ছিল। মিতার বয়স ৮/৯ বছরের কাছাকাছি। সে প্লেট ধুইল। খাবার রাধল। আলু রাধল। লাউ রাধল। ঢেড়শ ভাজি করল। ভাত রান্না করল। আর সে ক্লাস টেনে পড়ত। সে অনেক আপেল, কমলা তার বাবা কে দিয়ে কিনে আনালো। তারপর সে এগুলো কোটাকাটি করল, রাঁধল, মজা করে সুন্দর করে রাধল। চামচ-টামচ ধুয়ে ফল-টল কেটে বাটিচতে ভরে রাখল। ভাল করে পরিস্কার করে খাবার রেখে দিল। এবং ঢাকনা দিয়ে সব ঢেকে রাখল। আর সুন্দর একটা ডাক্তারী বই এবং একটা সুন্দর ব্যাগ একটা বক্সের  মধ্যে রেখেই দড়ি দিয়ে বেধে গিফটের মত পেচিয়ে সুন্দর করে রাখল। ঘর-টর সাজালো। বেলুন ফুলিযে রেখে দিল। তবুও দেখল কি, তবুও আসল না। রিতা ও সিতা ছোট মেয়েটির সঙ্গে সব কাজ করে চলে আসল। এসে দেখল, এত সুন্দর ঘরগুলো! তারপর তারা খাবার-দাবার খেয়ে খুব খুশী হয়েছে। এবার বলল, "তোমরা কি আমাদের জন্য কোন সারপ্রাইজ, খবর এগুলো কি আছে আমাদের জন্য?" বলে, "হ্যাঁ, আছে। তোমাদের জন্য উপহার।" বলে, "দাও তো উপহারটি।" তারপর বলল যে, "এর ভিতর দুটি জিনিস আছে। জিনিসের ভিতর আমি একটা সঙ্গীত লিখেছি সীতা আর একটির সঙ্গে লিখেছি রিতা।" এবার তারা গিফটটা নিয়েং ব্যাগে ভরল। খাবার দাবার খেয়ে বেলুন টেলুন নিয়ে খেলতে লাগল। কেউ কেউ বেলুন ফুটাতে লাগল। আর বেলুন ঠাস ঠাস করে ফুটল। মজা করল। নাচল। গান গাইল: 
"নদীর পাড়ে হাটতে হাটতে চললাম মোদের বাড়ি
বাড়িতে গিয়ে দেখি সব ভাল হয়নি কোটি।
আমি একদিন বেড়াতে গেলাম আমার মামীর ঘরে-
মামী দিল কলা খেতে খাইলাম পেট ভরে।
লাল লা লা লা লা-
একদিন মোগো বাড়িতে আইল আমার ফুপুর গিন্নী
খাইতে দিলাম রোস্ট পোলাউ পেট ভইরা খানি-
সে বলল ধন্যবাদ, আমরা বললাম, বলতে হবে না ধন্যবাদ। শুধু খাও।
বলতে হবে না ধন্যবাদ, শুধু খেতে খেতে প্রাণটা ভইরা ফেল।
একদিন দেখলাম ঘড়ির মধ্যে আটটা বাইজ্যা রইল আজ,
বাজল ছয়টার সময়।
এইকথা কবে হইল।
দুই ঘন্টা বাড়াইছে কে মোগো ঘড়িটায়?"

এই গান গেয়ে ঘরে চলে গেল। তারপর মাঠে গিয়ে খেলল। এবার তাদের মজা শেষ হল। ছোট মেয়েটিকে তারা সব কাজ করল। গল্পটা শেষ হয়ে গেল। তবে গল্পটি মনে রেখো।