Thursday, July 30, 2015

হাতি ও পাখিদের বন্ধুত্ব

হাতি একদিন কলাগাছ খুঁজে পাচ্ছিল না। ক্ষুধায় মরে গেল। সেই সময় একটা পাখি হাতিটার এত কান্না দেখে মুখে করে অনেক দূর থেকে একটা একটা করে কলা এনে এনে হাতিকে খেতে দিল। সেটা দেখে হাতি খুব খুশি হল এবং ধন্যবাদ দিল। বলল যে, "ধন্যবাদ! আজ থেকে তুমি আর আমি বন্ধু।" তারপর একদিন পাখিরা খাবার পাচ্ছিল না। হাতি তাদের একটি বুদ্ধি দিল। "বন্ধু, তুমি সেদিন আমাকে কলা এনে দিয়েছিলে। আজ আমি একটি বড় কলাবাগান খুঁজে পেয়েছি। ঐ বাগানে আমি এখন রোজদিন কলা খাই। আমি বরং তোমাকে ঐ কলা এনে দেব। তোমরা সেগুলো খাবে, আর আমি কলাগাছ খাব। ঠিক আছে, বন্ধু?" "আপনাকে অনেক ধন্যবাদ"- পাখি বলল। "আমার বাচ্চাদের জন্যও ছোট ছোট কলা নিয়ে আসবেন। তাহলে আমাদের বন্ধুত্ব আরো গভীরে চলে যাবে।"- এই বলে পাখি উড়াল দিয়ে একটি গাছের ডালে বসল। আর হাতিটা লাফাতে লাফাতে কলা বাগানে ঢুকে গেল। কলাবাগান থেকে কলাগাছ শুড় দিয়ে পেঁচিয়ে সেখানে এনে কাত করে রাখল। পাখিকে ডেকে আনল। পাখিকে বলল, "এই নাও, তোমার কলা।" এখন পাখি বলল যে, "আমার পরিবারের যে লোকরা আছে তাদের সাথেও বন্ধুত্ব কর। আমার পরিবারে অনেকজন পাখি আছে। আটজন পাখি আছে আমাদের পরিবারে। আর আমার তিনটি ছোট ছোট বাচ্চা আছে। সবাই একটা করে ফল খেলেই পেট একদম ভরে যায়। আমি তাদের ডেকে নিয়ে আসছি। তারাও খাবে। আমার ছেলেমেয়েরা উড়তে পারে না। তাই আমি তাদের জন্য কলা নিয়ে যাব। আমাদের না ছোলা খেতে ভাল লাগে না, ভিতরের মিষ্টি কলাটুকু বেশি মজা। আর তাতে পেটও বেশি ভরে। এখন তাহলে ডেকে আনছি। এত কথা বলার দরকার নেই। আগে তো পরিবারের লোকদের খাওয়াই, তারপর না হয় কথা হবে। আসি।" বলে সে চলে গেল। আর হাতি বলল, "তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।"- বলে হাতি বসে পড়ল এক জায়গায়। পরিবারে আটজন ছিল। গাছেও সেই আটটাই কলা ছিল। তারপর তাদেরকে ডেকে আনার পর সবাইকে হাতে একটা করে কলা দিয়ে দিল। দুটি ছিল খুব ছোট কলা। পাখিটি বলল, "শোন সকলে, এই দুটি ছোট কলাগুলো খেও না কেউ। এগুলি আমি আমার বাচ্চাদের জন্য নিয়ে যাব।" তখনই খাওয়া শুরু হল। পাখিরা সবাই ঠোকরাতে ঠোকরাতে সব কলা শেষ করে ফেলল। আর ঐ দুটি ছোট কলা রেখে দিল। তারপরে হাতি বলল, "এবার আমাকে তো এখন গাছটা খেতে দাও। পরে না হয় বন্ধুত্বের কথাগুলো বলব।


গরীব লোকের দোকান

এক ছিল গরীব লোক। গরীব লোকটার কোন জামার অভাব ছিল না। কিন্তু খাবারের অভাব অনেক বেশি ছিল। আর টাকা-পয়সাও ছিল না। সে একদিন একটা মাঠ দেখতে পেল। মাঠের ভিতর একটি ঘর ছিল। সেই ঘরে অনেক হ্যাঙ্গার ছিল। আর ছিল কাপড় রাখার জায়গা, আর চেয়ার-টেবিল। সেটা দেখতে পেয়ে সেখানে তার কাপড়ের দোকান দিল। আরেক ছিল ধনী লোক। তার কোন কাপড় ছিল না। ছিল শুধু একটা মাত্র লুঙ্গি, আর একটা মাত্র গেঞ্জি। সে আগে মিথ্যেবাদী ছিল। তাই তার সব জামা মানুষে নিয়ে গেছে। কেউ তার কাছে জামা বিক্রিও করে না, কারণ ভাবে সে আমাদের আসল পয়সা বলে নকল পয়সা দেবে। সে ঐ গরীব লোকটার দোকানে গেল। সেখান থেকে একটি কাপড় কিনল। গরীব লোকটি চেয়েছিল ৫০ টাকা। কিন্তু ধনী লোকটা তো এখন ভাল হয়ে গেছে। তাই সে বলল, "না, ভাই। আমি আপনাকে ৯০ টাকাই দেব। কারণ, আপনি আমার এতবড় একটা উপকার করলেন। আমি তো জামাই পেতাম না, যদি আপনি আমার কাছে বিক্রি করতে রাজি না হতেন।" গরীব লোকটি বলল, "না, না। এত বেশি দেয়ার দরকার নেই। শুধু কমই দেন, আপনিও তো খুব ভাল।" "না, না ভাই। এই নেন ৯০ টাকা।"- বলে লোকটা ৯০ টাকা দিয়ে জামাটা নিয়ে চলে গেল। যাবার আগে বলে গেল, "এখন থেকে আমরা বন্ধু।" তারপর আরো এক সপ্তাহ কেটে যায়। গরীব লোকটা একদিন পুকুরে গোসল করতে নামে। তখনই কে যেন পিরানহা মাছ পুকুরে ছেড়ে দেয়, যেখানে ঐ গরীব লোকটি গোসল করছিল। ধনী লোকটি তা দেখে পুকুরের অপর পাড়ে পিরানহা মাছের খাবার দিল, যাতে পিরানহা মাছগুলো গরীব লোকটিকে না খেয়ে ঐ খাবারের দিকে যায়। ধনী লোকটি একদিন পতাকার ছবি আঁকছিল। ঐ সময় একজন লোক খাবারে বিষ মিশিয়ে তাকে দিল। গরীব লোকটি তা দেখে ফেলল এবং তাকে গিয়ে বলল, "এটা খেও না, এখানে বিষ মিশানো আছে।" এরপর ঐ গরীব লোকটির দোকানে অনেক মানুষ কিনতে আসে, আর সে ভাল থাকে; আর ঐ ধনী লোকটিকে কাজে সাহায্য করে। আর ধনী লোকটিও তাকে সাহায্য করে।

এখন বলতো তোমরা, এ গল্পে কি কি শিক্ষণীয় বিষয় আছে?

শিক্ষাঃ মোট তিনটি শিক্ষা আছে; যথা-
(১) মিথ্যে বললে সাজা পাবে।
(২) ভাল কাজে সওয়াব পাবে। [যেহেতু গরীব লোকটি কম দাম চেয়েছিল, আর ধনী লোকটি বেশি দাম দিয়েছিল।]
(৩) বিপদের বন্ধুই আসল বন্ধু।


কিরণমালা ও কুমারের গান

সারা জীবন তোমার পাশে আছি
সব যুদ্ধে তোমার পাশে থাকি
মনে হয় হাত ধরে করি নাচানাচি

তাহলে আমার মনটা পায় শান্তি।