Thursday, September 24, 2015

ভাল মানুষ ও গরীবরা

ঈদের আগের দিন, ৩টি গরীব এক ভাল মানুষের বাড়ির পাশে বসে ছিল। কারা ঈদ সম্পর্কে কথা বলছিল। তখন, ভাল লোকটি বাড়ির বাইরেই ছিল। সে সব শুনে ফেলল। গরীব লোকেরা বলছিল, "ও বন্ধু! ঈদ তো প্রায় এসে গেল। আমরা ঈদ করব কী করে? আমরা তো গরীব।" "না! আল্লাহর কাছে দোয়া পড়। বল, ইনশাআল্লাহ। আমি ঈদ করব।" আর একজন বলল, "ঠিক। আল্লাহর উপর ভরসা রাখ।" ভাল লোকটি এসব শুনে ভাবল, "আহারে! ওদের কত দুঃখ। আমি বরং বড় গরু কিনব। সেটা থেকে কিছু ভাগ ওদের দেব।" ঐ দেশে আবার গরুকে ঔষধ দিয়ে মোটা তাজা করত না। তারপর, ঈদের দিন এল। তখনই, ভাল লোকটি মাংস নিয়ে এল। তারপর ঈদ গরীব লোকেরা করে ফেলল। আর গল্পটি এখনই শেষ।

Tuesday, September 22, 2015

Nira and Mushish

Mushish is Nira's brother. They are friend and also brother and sister. They read in a same school. They read in same class and they read in same section. And Nira's roll no. is two and Mushish's roll no. is one. See they are everything in sister that thing is also in brother. One day, they go to school. Mother give tie on their throat. But that day, teacher come and say, "Today will be no class. You can go to your home. Come to the office. Say the mother/father's phone number, and go to your house." Mushish say, "I know only my father's phone number, but my father is in a bank." And Nira said, "Yes, yes. I will also know my father's phone number. My father is also in a bank." The office Sir said, "No, don't think anything. I know everybody's parent's phone number. I write in a diary." Sir see the diary. He say to another Sir, "Take my phone and write the number." The sir read 01579045876. The another sir call Nira and Mushish's mother.

Saturday, September 19, 2015

ফুলের ছড়া

নয়নতারা জন্ম নিল বাগানের পাশে
গোলাপ ও নয়নতারা পাশাপাশি আছে।
মালিক বলে যারে,
তোরা আরো গাছ লাগিয়ে দে রে।

Tuesday, September 15, 2015

বাগান ও বিয়ে

বাগানের ডালিয়া,
কাজ করে কৃষকরা-
গোলাপের গন্ধ
পাঠশালা বন্ধ।

The Lion and His Family

A lion have some children. They did not like meat, but the lion like meat so very very very much. The lion everyday kill animals and eat them. But the children were not happy everyday. The children like Ganga river's fish and the water. And they like a flower's middle some seeds grow that. And one day, Marfuka (lion's child's name) said to father, "Father, father! Not like the meet. One day you will give me Ganga's fish. I like it so very very very very very much." "Ok, I will give you flower's seed for only one day. But another day, I will eat my favourite meat." Marfuka said, "Father! Why only one day? Please give me flower's seed two days." The father said, "Ok, only two days. Now I go." Now the lion think, my child want to eat flower's seed. But my favourite meat I will eat everyday." Now lionees is come. She say, "Hey! Come, come. Your food are also I did not like. I also like Ganga's fish. Ok? And every day you will check Ganga's fish, ok? If you take everyday meat, we are not happy. And my child's grandparents will be also like Ganga's fish, but they don't like meat. Only you want the meat, why?" Now every children come to lionee's house. They said, "Mother, mother. We will eat Ganga's fishes, but father did not give me Ganga's fish. He everyday killed animals and eat meat. But our favourate food he will not bring any day. Please mother! We don't live in this house. My father did not like me. And father did not like you. If he not bring our favourite food, it will a proof that, he is not like us. Please, we did not live in this home." After two days, children and lionees live on another home. The lion see all over, but he did not found them. Now every day, eat Ganga's fish, ganga's water and flower's seed.

সুরাবন রাজ্যের রাজা

এক রাজ্যের নাম ছিল সুরাবন। কিন্তু এই দেশের মানুষেরা শুধু মানুষদের অত্যাচার করত। বাদবাকি নানান দেশের সব মানুষ তাদেরকে ভাল বানানোর চেষ্টা করত; কেউই পারত না তা করতে। একটি ছোট্ট ছেলে আর ছোট মেয়ে ছিল। তারা ছিল একদম সমান সমান যমজ বুদ্ধি এবং যমজ শক্তি। দুজনের একই রকমের সব ছিল। সেই মেয়েটির নাম ছিল মধুমতি আর সেই ছেলেটির নাম ছিল আকিফ। তারা খুব কাছের ভাই-বোন। তারা অসুখ হলেও তারা একদিন একদম ভালভাবে শুয়ে থেকে বিশ্রাম নিয়ে ওষুধ খেয়ে খেয়ে একদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যেতে চাইল। তারা সেটা করতে পারত। তারা এটা কেন করত জান? স্কুল বেশিদিন তারা বাদ দিতে চায় না। একদিন স্কুলে টিচার এসে বলল, "Take out your diary. Write, after four days will be start summer vacation. So tomorrow is parents meeting. If English, Bangla and Maths has any problem, say to me. And other subjects to another miss. Ok? আমি কিন্তু ইংলিশে কথা বলব এখন থেকে। ইংলিশ ভার্সনে এসেছ। আর ডায়েরী বের করে সবাই এটা অবশ্যই লিখবে।" তখন বাচ্চারা ছুটি শেষে সবাই চলে গেল। সেই দুটি বাচ্চারা বাসায় ফিরে গিয়েই মাকে ডায়েরীটা দেখাল। মা বলল, "ইস! ইংরেজিতে তোমার কি গ্যানজাম। কেমন করেছ তুমি? অ্যাঁ!" মধুমতি বলল, "আমি বরং এখন যাই। তুমি ভাইকে সবকিছু বল। কী সমস্যা হয়েছে আবার। আমি এক্ষণি ব্যাগ গোছাতে যাই।" তখন আকীফের মা বলল, "ইস! তোর বোনটার কী অবস্থা দেখ। ইংলিশে word meaning এসেছে। কেজির ক্লাসে word meaning-কে সংজ্ঞা বলে শিখিয়েছিল। তাই সে এখন বাংলা অর্থ লিখতে বলেছিল নাম ছিল word meaning, সেটা দেখে সে সংজ্ঞা লিখে দিল। তোমার বোনের কাণ্ডটা একবার দেখেছ তুমি? এই বলে parents meeting-এ যাবে বলে ভাবল মা। তারপর মা সত্যি সত্যি parents meeting-এ গেল। গিয়ে টিচারকে সব ঘটনা খুলে বলল। তখন টিচার বলল, "আচ্ছা! সংজ্ঞা লিখে দিয়েছে কেন আপনার মেয়ে।" মা বলে, "আগের ক্লাসে থাকতে সে এটাই শিখেছিল।" তখন টিচার বলল, "What? কি হয়েছে? কি বলছেন আপনি? আগের ক্লাসে শিখেছে বলে এই ক্লাসেও শিখবে।? ক্লাস ওয়ার্কের খাতাটার দিকে তো একটু চেয়ে দেখবে। পরীক্ষার আগে তো parents meeting এমনিই দিয়েছিলাম আবার। সেদিন আসলেই তো আমি সব বলে দিতাম, কি করতে হবে। আমরা তো আর ওরকম বোকার মত সংজ্ঞা শিখিয়ে দেই না।" আর ওদিকে সুরাবনের রাজা সবার অত্যাচারের কথা ভাবছিল। রাজা কি করে মানুষদের উপর অত্যাচার কররে, এমন ভাবতে ভাবতে তার মাথাটাই গরম হয়ে যাচ্ছিল। প্রহরী এসে বলল, "রাজামশাই! পেপারে দিয়ে দিয়েছে কি জানেন? এবার তো আর আমাদের রক্ষে থাকবে না। পেপারে দিয়েছে, আমরা নাকি অত্যাচারের কথা ভাবছি।" তখন রাজা বলল, "আরে কি বলছিস তুই? অত্যাচার কি খারাপ কাজ নাকি যে, আমাদেরকে ওরা মারবে?" তারপর প্রহরী বলল, "হ্যাঁ, মহারাজ! অত্যাচার করলে ওরা কষ্ট পায়।" "কী! তোমাদের দেখে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই আমিও এখন শুরু করেছি। তোমরা থামাও অত্যাচার করা। আমাদের বিপদ ডেকে আনছ। অত্যাচার করলে পাপ হয়- এ কথাটা আমার মনে আগে আসেইনি। শুধু তোমাদের জন্যই এটা হয়েছে।" তবে এখন যে রাজা ভাল হয়েছে, এটা কারো পেপারে আসেনি। তারা শুধু ঐ রাজার উপর হামলা করতে আসছিল। রাজা বলল, "এই করছ কি, করছ কি? অত্যাচার একটি খারাপ কাজ। আমার মাথাটা ওরা নষ্ট করে দিয়েছিল সবাই। তোমরা এখন চলে যাও। পেপারে কেটে লিখে দাও, আমরা এখন ভাল হয়ে গেছি। দু'দিন আমাদের দেখ, আমরা কখনো আর অত্যাচার করব না।" সেইখানে ছিল মধুমতি আর আকীফ। আকিফ ছিল ওখানে। ওর মাও ছিল, ওর দাদা-দাদীও ছিল ওখানে। কেউ পেপার কাটল না। মধুমতির দাদা-দাদী আর মাও পেপার কাটা দিল না। কিনউত মধুমতি আর আকীফ বলল, "মা! একটা বুদ্ধি দেই তোমাকে। যখন এমন ভাল করে বুঝিয়ে বুঝিয়ে বলছে, এখন একটা কাটা দাওই না। বেচারী একটা লোককে এমনভাবে মারতে যাচ্ছ। ও তো নির্দোষও হয়ে থাকতে পারে।" আকিফ বলল, "মা, মা। বোন ঠিকই বলেছে। অমন মানুষকে কষ্ট দিতে হয়? আগে পরীক্ষা করে দেখতে তো হবে।" তখন ওরা দু'জনে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে যেন সবার কানে পৌঁছিয়ে যায় সেভাবে বলতে লাগল, "শোন, শোন! আমি বলছি যে, ও নির্দোষও হয়ে থাকতে পারে। ওকে এখন মারতে পারবে না। এসো, আমরা ওকে পরীক্ষা করার জন্য ভাবি।" সবাই মিলে ফিস-ফিস গুজ-গুজ করতে করতে মতলব আঁটতে থাকল, কী করে পরীক্ষা করবে। একজন ফিসফিস করতে করতে মতলবটা এটে ফেলল। মতলবটি হল, একজন সাহসী মানুষ পোশাকে ঐ রাজার সৈন্যদের রং করে রাখবে। সেই কাপড়টি পড়ে রাত্রেবেলা সেই রাজার কাছেই গিয়ে বসে থাকবে। বোন আর ভাইয়ের তো জময শক্তি, তাই এমন তাজা ওরা। আর তারপর সৈন্যদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে চারপাশ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখবে। তার আগে দুই-তিন দিন রাজার দাসী হয়ে থাকবে। তারপর দেখবে যে, রাজা আসলে ভাল না মন্দ। এই মতলবটি এঁটে ফেলল। তার পরের দিনই পোশাকে রং করে একজন রাজার প্রাসাদের দিকে সোজা চলে গেল। তখন রাজ্যের সামনে যে পাহারাদাররা থাকে, তাদেরকে বলল, "ভাই! আমি একটু রাজার জন্য ফল আনতে গিয়েছিলাম, সকালে উঠে খাওয়ার জন্য। আম তো ওনার খুবই পছন্দ, তাই আম নিয়ে এসেছি। আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম। তোমাদের জন্য একটু খাবার আছে। সেটা আমি পথে দৈত্যের হাত থেকে পেয়েছি। দৈত্য আমাকে সাহায্য করে এই জিনিসটি দিয়েছে।" আসলে এসব বানানো, বুঝলে তোমরা? সে হল মতলবটা এটেছিল যেটা সেইমত কাজ করছে। সেই ঘুমের ওষুধটি বের করে বলল, "এই যে, এই দুটি ওষুধ তোমরা খাও। এ দুটি খেলে তোমাদের আর কোন কাজ করতে কষ্ট হবে না। যদি হাতও কেটে যায়, তাহলেও কষ্ট হবে না। আর অমরের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে। এ দুটি খাও, নাও না। রাজার ফল রেখে আসতে হবে তো, খেয়ে নাও ঘট ঘট করে।" তখন দু'জন দুটি ওষুধ খেয়ে ফেলল। খাওয়ার পর প্রচণ্ড ঘুম আসতে লাগল। তখন বলতে লাগল, "হায়রে আমার কপাল! এ তুই কি খাওয়ালি? নিদ্রা যেতে তো চাইনি, চেয়েছিলাম অমরের সংখ্যা বাড়াতে আর কাজ করতে কষ্ট না লাগার জন্য। কি ওষুধ আনলিরে তুই? ওরে, মা, ওরে মা।" করতে করতে এখনি ঘুম পড়ে গেল তারা। তখন ঘুম পাড়িয়ে তাদেরকে নিয়ে ঝোপঝাড়ের পিছনে লুকিয়ে রাখল। তখন সে ভোরবেলা রাজাকে বলল, "রাজামশাই! শুনুন। কালকে না আমি দেখলাম, পাহারাদাররা পাহারাদারের জায়গায়ই নেই।" তখন সে এক রাজা বলল, "না, না। এ কি করে হয়? তাদের কাছে অনেক তলোয়ার, পিস্তল আছে। বাঘ-সিংহ তো আসবে না এ সুন্দর একটা বাগানের ভিতর দিয়ে। বাঘ থাকবে জঙ্গলে।" তখন আকীফের পরিবারে একজন এসেছে না? সে বলল, "রাজামশাই! সেজন্য আপনি প্রহরীদের পাঠান।" তারপর ঝোপঝাড়ের মধ্যে গিয়ে খুঁজে পেল রাজার প্রহরীরা। এবার খুজে পাওয়ার পর সব আবার ঠিকমতো হয়ে গেল। তখন রাজার সামনেই সে দাসীর মুকুট খুলে ফেলে বলল, "রাজামশাই! দেখুন, আমি কে?" "ওমা, আপনি? বলবেন তো। আমাকে ক্ষমা করবেন। তবে ক্ষমা না করলেও হবে আমাকে। আমি আমার দাসীদেরকে অমন খারাপভাবেই বলি। আপনি কেন দাসী হতে গেলেন আমার?" "আমি পরীক্ষা করছিলাম।" এখনই অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করল। তখন রাজা বলল, "হায়রে! ওনার কি সর্বনাশ হলো গো! আরে কে কোথায় আছিস? দেখ না, কি হয়েছে! তোরা গেলি কোথায়?" তখন সবাই এসে বলল, "মহারাজ! অত্যাচার করতে চান না আপনি?" বললেন, "অত্যাচার তোরাই করতে চাস? যা, তোরা এক্ষণি ওর জন্য জল নিয়ে আয়, ওর গায়ে ছিটিয়ে দে।" তখন ছিটিয়ে দেয়ার আগেই সে বলল, "রাজামশাই! আমি বুঝতে পেরেছি, আপনি আসলে ভালই। এবার আমি ফিরে যাই আমার ঘরে।" বলে সে ফিরে গেল। তখন আকীফ আর মধুমতি একসঙ্গে বলল, "আপনি এসে গেছেন? কি হলো সেটা? রাজাটা কি খারাপ হয়েছিল, বলুন না।" তখন বলল, "ইস! রাজাটা কততো ভাল।" বলল, "কেন দাদা, আপনি কি করেছেন, আমার দাদাভাই?" "পরীক্ষা করেছি এই কথা দিয়ে। তারপর সে বলল, আরে আমার কপাল, এ কি হলো। তারপর দাসীদের বলল, তোমরাই শুরু করেছ। এমন ব্যবহার তো তোমরাই আমাকে শিখিয়েছ। খারাপ ব্যবহার করতে চান না আপনি?-এটা বলেছিল দাসীরা। তখন রাজা বলেছিল, অত্যাচার করলে ওরা কষ্ট পায়। এইসব বলে বলে অজ্ঞান অবস্থায় তাদের যদি কোন সেবা না করতে পারি, তাহলে অত্যাচার বলে সেটাকে। এটা বলেছিল রাজামশাই। এইসব বলে বলেই আমি বুঝলাম যে, সে আসলে ভাল।" তখন মা, দাদা-দাদী ও বাবাকে বলল, "কী মজা! তোমাদের কথা সত্যি হয়নি, হয়নি।" তখন মা বলল, "কী! আমার মুখে মুখে কথা বলছিস তোরা? দাঁড়া, একটু পরেই তোদের মজা আমি দেখাব। বুঝতে পারছিস, তুই?" তখন বাচ্চারা হাসল। বলল, "হা-হা-হা-হা-হা! মা, হি-হি-হি। তুমি নিজেই কি অত্যাচার করতে যাচ্ছ?" "ওমা, আমি অত্যাচার করছি কোথায়? ওরা আমাকে খারাপ কথা বলেছে, তাই তো আমি অত্যাচার করছি।" তখন আরো হেসে হেসে বলল, "হায়রে তোমার কপাল! আমরা তো তোমার সত্যিই কোন ক্ষতি করিনি। বড় কোন ক্ষতি তো করিনি। মুখের কথা তো একটা ভাষা বানিয়েছে তাই বলে। মুখের কথা শুনলেই কি অমন রেগে যেতে হবে? খারাপ কাজ, তাকে মারলে না অত্যাচার বলে তাকে। এমন করলে কি অত্যাচার বলে তাকে? হা-হা, হিহিহি।" তখন মা বলল, "আমায় তোরা ক্ষমা করে দে। আমার কথা ভুল হয়েছে।" কিন্তু দাদা-দাদীকে কেউ এমন বলে? বলে, "আচ্ছা, আর বলব না। যত্ত জ্বালা, ভ্যাদ, ভ্যাদ।" "আবার, যত্ত বেশি কথা বলিস?" এরপর প্রমাণ হয়ে গেল, কে ভাল, কে খারাপ। এরপর প্রমাণ হয়ে গেল, কে ভাল, কে খারাপ। রাজা যে আসলে ভাল, তা সবার কাছে প্রমাণ হয়ে গেল। তারপর থেকে সবাই আবার যার যার কাজ করতে লাগল। এবার সবাই গল্পের ঝুড়ি থেকে চলে গেল।

Monday, September 14, 2015

শাফিফের গল্প

একদিন এক ছেলে বসে ভিডিও গেম খেলছিল। অমনি তার মা এসে পড়ল। শাফিফ বলল, "মা, তুমি আর আসার সময় পেলে না? তুমি এক্ষুণি চলে যাও। নাহলে আমি কিন্তু আজকে আর ভাত খাব না। তুমি কেন আমার গেমটা আজ ওভার করে দিলে? তুমি এলে আর আমার নজর তোমার দিকে গেল। আর পট করে আমার গেমটা ওভার হয়ে গেল। তুমি এক্ষুণি চলে যাও।" তখন মা বলল, "আরে আমার খোকা, আরে আমার সোনার শাফিফ, এমন মাকে কেউ বলে? দাড়াও দেখাচ্ছি মজা। আমি তোমাকে আরো দশটি ভিডিও গেমস কিনে দিতে পারব। কিন্তু আমি যা খবর নিয়ে এসেছি সেটা তো শোন আগে। মাকে কেউ অপমান করে এভাবে? এখনকার কথাটা নাহয় একটু শোন। শান্ত হও তুমি।" শাফিফ বলল, "মা, এটা কিন্তু ভাল হচ্ছে না।" মা বলল, "আচ্ছা, শোন তো আমার কথাটা।" তখন মা বলল, "তোর বন্ধুরা এসে কতক্ষণ ধরে বসে আছে খেলার জন্য।" শাফিফ বলল, "মা! তা আগে বলবে তো তুমি। ভিডিও গেমস খেলার সময়ই তুমি এইসব খবর নিয়ে এলে। তুমি এক্ষুণি আমার জন্য দশটি গেম না আনলে বন্ধুদেরকে আমি এক্ষুণি তাড়িয়ে দেব।" মা আর কী করবে! ছোট ভাইয়ের কাছে একটা গেম ছিল, কিন্তু ছোট ভাইটা ঘুমাচ্ছিল। সেই গেমসটা নিল এবং আলমারি খুলে আরো পুরানো গেমস আছে তাতে ব্যাটারি ভরে দিল। তখন শাফিফ বলল, "এবার তাহলে বন্ধুদেরকে ডাকুন।" মা বন্ধুদেরকে ডেকে বলল, "ওরে আমার সোনারা! তোদের বন্ধু তো এখনো বসে বসে ভিডিও গেমস খেলছে। তোদের সাথে খেলার জন্য পাত্তাই দিচ্ছে না, আমার সোনা মানিক। দেখ না, তোমাদের বন্ধু কেমন করে সন্ধ্যার সময় ভিডিও গেম খেলতে বসে আছে। আমার সোনা মানিকরা, গিয়ে দেখই না, কী করছে। ভালই লাগে না আমার।" বন্ধুরা শাফিফের কাছে গিয়ে দেখল, শাফিফ বসে বসে গেমস খেলছে। শাফিফের কাছে গিয়ে বলল, "বন্ধু, বন্ধু, ও বন্ধু! কি করছ কি তুমি? আমাদের সাথে খেলবে না তুমি?" তখন শাফিফ তো মায়ের কাছ থেকে দশটি ভিডিও গেমস নিয়েছিল। বন্ধুও দশটি ছিল। তখন শাফিফ বলল, "তোরা এসে গেছিস। আমি তোদের সাথে খেলব না আজ। প্রতিদিন তোদের সাথে খেলি। আজ আমার সাথে খেলবি তোরা।" তখন শাফিফ ভিডিও গেমগুলো দিল। তখন বন্ধুরা বলল, "ছি ছি ছি ছি! তুমি কুট্টি বাচ্চাদের মত ভিডিও গেমস খেল? ফুটবল খেলবে না?" বন্ধুরা আবার হেসে হেসে বলে, "আস, আমার সোনা বাবু। দাও দেখি ভিডিও গেম কত মজা! হা-হা-হা-হা-হা!" এই বলে বন্ধুরা হাসতে লাগল।" তখন বন্ধুরা ভিডিও গেমস খেলল। খেলে সবাই অনেক মজা পেল। সবাই বলল, "সত্যিই তো অনেক মজার গেম। তুই এই গেমস কোথায় পেলি? এমন সুন্দর ভিডিও গেমস আমি কক্ষণো দেখিনি। দশ মিনিটের মধ্যে ফুলদানিতে ফুল রাখতে হয়। একটি বাক্স থেকে বল বের হয়। সারাক্ষণ বের হতেই থাকে। বলের চারপাশ দিয়ে ফুলদানিতে ফুলটি রাখতে হয়। নাহলে গেম ওভার হয়ে যায়, সময় শেষ হয়ে যায়। এ তো ভারি মজার খেলা!" শাফিফ বলল, "দেখলে তো বন্ধুরা! আমার কেমন ভিডিও গেমস।" বন্ধুরা বলল, "এখন থেকে প্রতিদিন তোর বাসায় আসব। তোর সাথেই ভিডিও গেম খেলব। ফুটবল খেলতে আর ভাল লাগে না। মানুষের গায়ে ফুটবল লাগলে আমাদের নামে দোষ হয়। আর কাদামাটির সময় বৃষ্টি পড়লে তার মধ্যে যদি বল পড়ে, পা-টা ভিজে যায়, তখন মা-বাবা বকা দেয় যে, ময়লা-টয়লা গায়ে মাখিয়ে খালি অসুখ বাজায়। কাদামাটিতে কি থাকে জান? কাদামাটিতে অনেক মানুষ মূত্রত্যাগ করে। তার মধ্যে ইউরিয়া থাকে। এটা বলে মা-বাবারা কাদামাটিতে বল পড়ে সেই পানি দিয়ে পা-টা ভিজে গেলে।" এখন থেকে প্রতিদিন ভিডিও গেমসই খেলে ওরা। ওদিকে মা তো রেগে  একদম মাথা গরম হয়ে যায়। মা ভাবতে থাকে, ইস! ভিডিও গেমস নিয়ে শুরু হল মাখামাখি একদম। মনে হয় যেন খেলনার দোকান, টেস্ট করে টেস্ট করে দেখছে সারাক্ষণ। মনেহয় যেন মজার চোটে টেস্ট করতে করতে মাথাটাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমার মাথা, না তাদের মাথা- কিচ্ছুই বুঝতে পারছি না। মা গিয়ে বাবার কাছে বলল, "দেখ তোমার শাফিফের কাণ্ড! আমি কিন্তু সবাইকে রেখে বাপের বাড়ি চলে যাব। ভিডিও গেমস খেলে আর সময় নষ্ট করে। নিজে তোমার সংসার চালাও। আমার সব কাজগুলো তুমি করবে। ভিডিও গেমস না থামাতে পারলে তোমার মাথাটা যদি আজ আমি না ফাটিয়েছি, তাহলে বাপের বাড়ি থেকে আমি আর ফিরেই আসব না। আর তোমাকে যে আমি বিয়ে করেছি, বিয়েটাই নষ্ট হয়ে যাবে তোমার সাথে। কালই আমি বাপের বাড়ি চলে যাব।"- বলে বউ বিছানায় গিয়ে শুযে পড়ল। তখন বাবা একটা বুদ্ধি খুজে পেল। বাবা একটা ঘর বানালো। তার মধ্যে সমস্ত টিচারদের ডাকল স্কুলের। তখন টিচারদের বলল, "আপনারা নিজেরাই একটা বই তৈরি করে ফটোকপি করে সবাইকে দিয়ে দেবেন। তার মধ্যে ভিডিও গেমস সম্পর্কেও থাকবে। বিভিন্ন রকম ভিডিও গেমসের ছবি দেওয়া থাকবে। আর প্রতিদিন সেই চাপ্টারটাই পড়াবেন। তাহলে বাচ্চারা মজাও পাবে।" এবার সে টিচারদেরকে যেতে বলল আর নিজেও চলে গেল। তোমরা কি জান, শাফিফের বাবা কেন এ কাজটা করেছে? কারণ, ক্লাসে ভিডিও গেম সম্পর্কে পড়তে পড়তে ভিডিও গেম খেলার নেশাটা চলে যাবে। পরের দিন মা সকালে উঠে বাবাকে ডেকে তুলে বলল, "আমি কিন্তু আজই চলে যাব বাপের বাড়ি।" তখন জামাই বলল, "থাক, আর কষ্ট করে টিকেট কাটতে হবে না। দুই দিন একটু থাক, অপেক্ষা করে থেকো। দুই দিনের জন্য মাত্র। পরে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। ব্যাগ-ট্যাগ গুছানোর দরকার নেই। পরে যেতে হলে আমিই গুছিয়ে দেব আনে।" তখন বউ বলল, "ব্যাগ গুছাতে কি জান তুমি? মাথা নষ্ট কর শুধু! কর, কর, আমার ব্যাগ গুছানো লাগবে না।" পরে বউ রাগ হয়ে সত্যি সত্যিই করল না। দু'দিন স্কুলে যাওয়ার পরই ভিডিও গেমস নেশাটা কমে গেল। আর সব নেশা চলে গেল। এখন বউ বলল, "জামাই! তোমাকে এইরকম নামে ডাকতে হচ্ছে এই কাজ করার জন্য। ধন্যবাদ তোমাকে আমি দেবই না। কারণ, এতদিন তুমি কি করছিলে? বুদ্ধি খাটাওনি কেন তুমি? ধন্যবাদের শুধু ধন্যটুকু আমি বলব। বাদটা পরেই বলব। যখন তুমি আরো ভাল একটা কাজ করবে। তারপর এখন থেকে ভিডিও গেমস খেলা বাদ, আর জামাই আর বউয়ের বকাবকিও বাদ। গল্প শেষ।

মাংস দেবেন

মাংস দেবেন, মাংস দেবেন;
     ও আমার কসাই।
মাংস দেবেন, মাংস দেবেন-
     এবার চুলায় বসাই।

ঝিকিমিকি তারা

ঝিকিমিকি তারা 
    আকাশের রাজা-
চাঁদের সাথে থাকে, 

    তবুও বহু দূরে।

Thursday, September 10, 2015

ছাতুর চকলেট

একদিন এক বাবু চকলেট খাওয়ার জন্য জেদ ধরল। কিন্তু সে ভালমত দাত ব্রাশ করত না, একটা ডলা দিয়েই রেখে দিত। বড় বোন তো ভালমত দাত ব্রাশ করতে পারে। তাই বাবা-মা তাকে বেশি বেশি চকলেট কিনে দিত। তাই বড় বোন চকলেট খেয়ে খোসাগুলো খেলার জন্য রেখে দিত। কিন্তু ছোট বোন খেলতে দিত না। বাইরে ফু দিয়ে উড়িয়ে উড়িয়ে দিত। একদিন মা-বাবা বড় বোনটির কাছ থেকে চার-পাঁচটি খোসা নিল। তারপর ছাতু ছোট ছোট গোল গোল করে চকলেটের খোসার মধ্যে ভরে ভরে জমিয়ে রাখতে লাগল। বাবুর (ছোট বোনের) যেদিন জন্মদিন ছিল, সেদিন কেকের সাথে একটা পলিথিনের মধ্যে সেই ছাতুর চকলেটগুলো ভরে দিল। তারপর কেকটা যখন টেবিলে রাখল, কেকের প্যাকেটের সাথে বাবুটি একটি পলিথিন দেখতে পেল। সেই পলিথিনটি নিয়ে দেখল অনেকগুলো চকলেট। সে ছাতুগুলোকে চকলেট ভেবে খুশীমনে খেতে লাগল। সে বলল, "ও মা, আমার জন্য দশটি চকলেট রেখে দিয়েছে মা। মা-বাবা কততো ভাল! আমি  চকলেট খেতে পারছি, মা বকা দিচ্ছে না। কি মজা, আমি চকলেট খাব। দশটি চকলেট দিয়ে দিয়েছে। আমার খেতে খুব মজা লাগবে, নিশ্চয়ই। সে খেয়ে দেখল, সত্যিই অনেক মজা। সে মাকে বলতে গেলে, "মা! আমার জন্য আরো তিন-চারটি  চকলেট দোকান থেকে কিনে নিয়ে এসো।" এখন তো মা-বাবা কি কাজ করবে? তারা চিন্তায় পড়ে গেল, দোকান থেকে আনবে কিভাবে। দোকানেরটা আনলে যে দাঁতে পোকা হয়ে যাবে। বাবাকে একটা বুদ্ধি দিল মা। মা বলল, "শোন! আমি বড় বোনের কাছ থেকে তিন-চারটি খোসা নিয়ে আসছি। আর আমি দুটো ছাতু বাটিতে ভরে একটি ব্যাগের মধ্যে রেখে দিচ্ছি। তুমি সেই ব্যাগটি নিয়ে বাইরে গিয়ে একটা পরিস্কার জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে নিয়ে আসবে। দোকানের কাছে যেতে হবে না। ছাতু ব্যাগে ভরে দেওয়ার পর ব্যাগটা নিয়ে চলে আসবে। আর বাচ্চাকে বলবে, আমার অফিসে একটু কাজ আছে। আমি কাজও করব, তোমার জন্য চকলেটও নিয়ে আসব। এই বলবে বাচ্চাকে। কিন্তু বাচ্চাকে ব্যাগের ভিতর কি আছে তা দেখতে দেবে না।" মা খোসা এনে দিল সেগুলো ব্যাগে ভরার জন্য। তারপর বাচ্চা জিজ্ঞেস করল, "বাবা, এই ব্যাগটি কিসের?" বাবা বলল, "আমার অফিস আছে। অফিসের জন্য একটা হার্ড ডিস্ক লাগবে। সেইটা এই ব্যাগের মধ্যে রেখেছি।" বাবুটি বলল, "দেখিতো, কেমন হার্ডডিস্ক!" এখন বাবা কি করবে, আর কোথায়ই বা যাবে। বলল, "মামুনি! শোন, এই হার্ডডিস্ক আর পুরান কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক একই রকম। আমি বরং পুরানটা নিয়ে আসব। তখন তুমি দেখো। সব একই রকমের হার্ডডিস্ক। এখন আমার অফিসে তাড়া আছে। তাড়াতাড়ি যেতে হবে, সময় নেই।" বাবু বলল, "তাও একটুখানি উঁকি দিয়ে দেখি না!" বলে, "এই যে, এই এক মিনিট পরই অফিসের গেইট বন্ধ করে দেবে। আমি আসি।"- বলে বাবা দৌড় দিয়ে সাঁই সাঁই করে চলে গেল। এখন সে তো আর অফিসে যাচ্ছে না। সে একটি নিরাপদ জায়গায় রেখে চকলেট বানিয়ে নিয়ে এল। এবার মেঝেতে হামাগুড়ি দিয়ে দিয়ে দেরাজ খুলে হার্ডডিস্ক বের করতে গেল। বাবুও তখন দেরাজ থেকে খেলনা বের করার জন্য গেল। বাবাকে দেখে সে চমকে উঠে বলল, "বাবা, তুমি এখানে কি করছ? আমাকে এক্ষুণি হার্ডডিস্ক দেখাও। নাহলে আমি নিজেই তোমার পকেট থেকে টাকা চুরি করে বাইরে গিয়ে চকলেট কিনে নিয়ে আসব। হার্ডডিস্ক দেখাও আমাকে। না দেখালে তোমাকে আমি জোরে বকা ধমক দিব।" বাবা কী আর করবে! বাবা বলল, "আমি তো হার্ডডিস্ক দেরাজে ঢুকিয়েই ফেলেছি, তোমাকে দেখানোর কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।" এই বলে বাবা দেরাজ থেকে হার্ডডিস্ক বের করে দেখাল। তারপর ছাতুর চকলেট খেয়ে বাবুটি বলল, "আচ্ছা। আগামীকালও আমার জন্য দুটি চকেলেট আনবে। সে সময় আমিও তোমার সাথে আনতে যাব।" বলে, "মা, আগামীকাল শুক্রবার। দোকান বন্ধ থাকবে।" আসলে তার পরেরদিন ছিল সোমবার। তাহলে বাবুটি বলল, "আমার আজকে পরীক্ষা ছিল। দেখবে, আমি কি পেয়েছি?" দেখাতে গিয়ে হঠাত বাবুট সেই দিনের তারিখটি দেখল। তার পরে তো সেই তারিখের পরে যে সংখ্যা সেটাই হবে আগামীকালকের তারিখ। বাবুটি দেখে বলল, "বাবা, এই তারিখে তো সোমবার। তুমি কেন শুক্রবার বলছ? কালকে আমি যাবই তোমার সাথে। তুমি যদি না গেছ, তোমার খবর আছে। আমি মাকে বলে দেব। তোমার সাথে আমি যাব।" এই বলে বাবুটি রাত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। পাচ ঘন্টা পর রাত হয়ে এল। তখন বাবুটি সকাল হওয়ার অপেক্ষায় বসে পড়ল। মা ভাত নিয়ে এসে পড়ল। "এই যে চকলেট খাওয়া বুড়ি! ভাত খেতে তো হবে। চকলেটের ভাবনা ভাবলে তো হবে না।" কিন্তু বাবুটি ভাত খেতে যেতে গেল না। বসে বসে দোকানে যাওয়ার চিন্তাই করতে লাগল। মা এসে বলল, এখনো তুমি খেতেই যাওনি।" তখন বাবুটি বলল, "মা, আমার তো খাওয়া শেষ। আমি তো এক মিনিটের মধ্যেই খাওয়া শিখে গেছি। তুমি জান না মা? কালকে আমি পাশের বাড়ির গরুকে দেখে তার খাওয়ার মত তাড়াতাড়ি খাওয়া শিখে গেছি। আমার খাওয়া শেষ, মা।" তখন মা বলল, "মা, তুই না কালগে বলেছিস যে, আজকে মায়ের হাতে ভাত খাবি। ভাতের পাাতিলে তো এক দানা ভাতও কমেনি, যেটুকু ছিল আগে।" তখন বাবুটি বলল, "মা, আমি পাকঘরের ভাত নিয়ে এসে খেয়েছি।" মা বলল, "পাকঘরে তো কোন ভাতই ছিল না। তুমি কি করে খেলে?" তখন বাবুটি বলল, "মা, আমি পাকঘরের বারান্দায় ভাত খেয়েছি।" "ইস, রান্নাঘরের বারান্দায় তো ভাতের একটা দানাও ছিল না। রান্নাঘরে কি ভাত থাকে? একদিনও ভাত থাকে না রান্নাঘরের বারান্দায়।" তখন বলল, "ইস, মা! আমি তো পাশের বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তখনই আমাকে ভাত-মাংস খেতে দিল।" মা বলল, "ইস, মা রে তুমি ভাতই খাওনি। এতবার পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে বলছ। আস, ভাত খেতে আস। দুষ্টু মেয়ে, মিথ্যে বলে।" শেষ পর্যন্ত বাচ্চাকে খাওয়াতে পারল মা। কিন্তু দাঁত মাজাতে পারছে না। দাত সে কিছুতেই মাজছে না। শেষে বাচ্চাকে বলল, "মা, তোমার মুখে একটা চকলেট যাদু করে দিয়ে দিচ্ছি, হা কর।" তখন বাবু হা করল আর দাঁত মাজিয়ে দিল। তারপর পানির সাথে তিতা খাবারের রস দিল। তারপর বেসিনের কাছে গিয়ে তার মুখের মধ্যে সেই রসটা দিয়ে দিল, তারপর সে ওয়াক ওয়াক করে ফেলল। তখন আবার দিতে গেল, বলল, "মা এটা চকলেটের রস।" তখন আবার তিতা লাগল, মুখ থেকে ফেলে দিল। এতে কুলি করার কাজটা হয়ে গেল। আর তিতা রসটা ছিল যা মুখকে পরিস্কার করে। তারপর বিছানায় এনে শোয়ালো। কিন্তু সে কিছুতেই ভালভাবে শোবে না। উল্টিয়ে পাল্টিয়ে চিন্তা করতে লাগল দোকানের কথা। মা-বাবা কেউই তাকে ঠিকমত শোয়াতে পারল না। শেষে মা বলল, "যদি তুমি এমনভাবে ঘুমাও, তাহলে তোমার যত চকলেট আছে সব পরীরা নিয়ে চলে যাবে। আর যদি তুমি ঠিকমত করে ঘুমাও, তাহলে যেগুলো আছে সেগুলোও থাকবে আবার আরো অনেক চকলেট দেবে পরী। ফুলপরী এসে দিয়ে দিবে। মোচড়ামুচড়ি করলে তো সব চকলেট নিয়ে যাবে পরীরা।" বাবুটা বলল, "কোন্‌ পরী?" মা বলল, "ঐ যে মা, অনেকদিন আগে তোমার সজিব ভাইয়া এসে একটা ফুলপরীর গল্প শুনিয়েছিল সেই পরীটা।" "মা, ঐ পরীটা তো ভাল। কেন মানুষের জিনিস নেবে?" "আরে বাবা, যারা ভাল মত থাকে না, তাদেরকে ক্ষতি করে। আর যারা ভালমত লক্ষ্মী হয়ে থাকে তাদেরকে আরো দেয়।" তখন বাবু বলল, "আচ্ছা, গল্পে কখনো সত্যি হয় না। তার পরেও পরীরা সত্যি থাকে না। পরী হল মেয়ে জিন। জিনরা মানুষের ভাল কখনো করে না, যদিও তাদের কোন উপকার করে থাকে।" "এই, ঘুমানোর সময় কখনো জিনদের গল্প করতে হয় না। জিনদের গল্প করলে সত্যি সত্যি জিন আসে।"- মা বলল। বাবু বলল, "না, মা। পরীর গল্প বলতে তুমিই শুধু করলে।" মা বলল, "আচ্ছা, আমিই শুরু করেছি। এবার তাহলে ঘুমাও। একটুও কিন্তু চোখ খোলার চেষ্টা করবে না। আমি সারারাত জেগে থাকব, ঘুমাও কিনা দেখব।" আসলে এটা ঘুম পাড়ানোর জন্য বলেছে। কিন্তু মা তো আসলে ঘুমোবেই। এটা বাবুটি জেনে গেল। সে চুপি চুপি উঠে বাবার পকেট থেকে টাকা নিয়ে পকেটের সামনে গিয়ে টাকা চুরি করল। টাকা নিয়ে সে কোয়ার্টারের সামনেই যে একটা দোকান আছে ওখান থেকে তিন-চারটি চকলেট নিয়ে এসে টেবিলের উপর রেখে দিল যে, সকালে উঠে খাবে। সকালে বাবা আরো চকলেট নিয়ে আসবে, তাহলে আমি বেশি চকলেট খেতে পারব- এই ভেবে। সেই চকলেট রাখল। চকলেট ওখানে রাখার পর সকাল হল। তারপর মা বাবুর আগে উঠে দেখে, টেবিলের উপর অনেক চকলেট রাখা। তাই বাবা করল কি জান? বড় বোনের কাছ থেকে খোসা নিয়ে চকলেটগুলো পাল্টে দিল। আর পকেটের কাছে গিয়ে দেখল, দশ টাকা উধাও। 

Saturday, September 5, 2015

দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক

একদিন এক দার্শনিক কি নিয়ে চিন্তা করবে বুঝতে পারছিল না। তার বন্ধু ছিল এক বৈজ্ঞানিক। সে এসে বলল, "বন্ধু, শোন! গাছপালা, ফুল ও ফল নিয়ে ভাব। গাছ, ফুল ও ফল আমাদের অনেক কিছু উপকার করে। সেগুলো নিয়ে ভাব।" দার্শনিক বলল, "আচ্ছা, তুমি এখন তোমার কাজ কর। আমি এখন গাছপালা নিয়েই ভাবছি, তুমি যাও।" দার্শনিক গাছপালা নিয়ে চিন্তায় বসল। সে খাতা, কলম এসব নিয়ে বসে গেল। যা ভাবল সেগুলো লিখার জন্য। সে তখন ভেবে ভেবে দেখল, গাছ সত্যি অক্সিজেন দেয় কিনা। এটা পরীক্ষা করার জন্য সে একটুও গাছ নেই যেখানে এমন এক বদ্ধ ঘরে জানালা আটকানো অবস্থায় দরজা আটকানো অবস্থায় অন্ধকার স্থানে পরীক্ষা করল। গাছপালা ছাড়া সে নি:শ্বাস নিতে পারল না। তখন সে বদ্ধ ঘর থেকে বের হয়ে ভাবল, তাহলে সত্যিই গাছ অক্সিজেন দেয়। তখন সে বুঝে যাওয়ার পর সে খাতায় লিখে ফেলল। এখন আবার বৈজ্ঞানিকটি ঠিক পাচ্ছিল না, কি নিয়ে গবেষণা করবে। এখন দার্শনিক বৈজ্ঞানিকের ঘরে গিয়ে বলল, "বৈজ্ঞানিক, মানে আমার বন্ধু, শোন! তোমাকে একটা কথা বলি। তুমি মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা কর। রোগ, অসুখ, নিজের শরীরকে পরিস্কার করে রাখা সম্পর্কে গবেষণা কর তুমি। দেখবে, তাহলেই সব মানুষকে সুস্থ রাখতে পারবে। সব মানুষকে সুস্থ রাখলে সবাই তোমাকে টাকা-পয়সা ইত্যাদি দেবে। তুমি উপায় নিয়ে গবেষণা করে এর উপায় যদি তুমি সবাইকে বল, তাহলে সবাই তোমাকে টাকা দেবে। তুমি এগুলো নিয়ে গবেষণা কর।" তখন বৈজ্ঞানিক বলল, "ধন্যবাদ। তুমি এখন তোমার কাজ করতে চলে যাও।" এখন বৈজ্ঞানিকটি খাতা ও কলম নিয়ে শিরোনামে লিখল, "নিজের শরীরকে পরিস্কার রাখুন।" তারপর এক ঘন্টা ধরে চিন্তা করে পরে বর্ণনায় লিখল, "প্রতিদিন সকালে ও রাতে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার নখ কাটতে হবে। প্রতিদিন স্নান করতে হবে। টেবিলে রাখা খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। না ঢাকা খাবার খাবে না। যদি তুমি টেবিলের উপর বাটিতে করে কিছু আপেল রাখ, পোকা বাইরে থেকে আসতেই থাকবে, আসতেই থাকবে। সেগুলো এসে ঘরও নোংরা করে ফেলবে, খাবারও নষ্ট করে ফেলবে, আর খাবার অর্ধেকটুকু তারাই খেয়ে নেবে। এইজন্য সব খাবার ঢেকে রাখতে হবে। ঢেকে রাখলে গন্ধটাও ঠিকমত পোকাদের নাকে যায় না। গন্ধ না পেলে পোকারা বোঝেও না যে, খাবার আছে। তখন তারা অন্যদিকে চলে যায়। আর প্রতিদিন সকাল বা দুপুরে ঘর ঝাড়ু দেবে আর মুছবে। দুই সপ্তাহ পর পর টেবিল সাবান দিয়ে মুছবে। স্কুল থেকে আসার পর জামা-কাপড় খুলে হ্যাঙ্গারে রাখবে। যখন দেখবে, জামা ময়লা, তখন মায়ের বলার আগেই বালতির মধ্যে রেখে দেবে জামা। বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ পা সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে ধোবে। মশায় ঘর ভরে গেলে মশার ওষুধ দেয়ার সাথে সাথে সবাই বাইরে বের হয়ে যাবে, মশার ওষুধ নাকে গেলে অসুখ হতে পারে। এমনকি অন্য যেকোন পোকার ওষুধ নাকে গেলে অসুস্থ হয়ে যেতে পার তোমরা। বাস এবং গাড়ি বাতাসকে ময়লা করে। বাড়ির চারপাশে গাছ লাগাবে। গাছ বাতাসগুলোকে পরিস্কার করে ফেলবে। পোষা প্রাণীদের সাথে খেলার পর হাত সাবান দিয়ে জোরে জোরে ঘষে ঘষে পরিস্কার করে ফেলবে। সাবান এবং পানি দিয়ে অবশ্যই হাত ধুবে। হাত না ধুলে ক্ষুধা পেলে যখন বুঝতে পারবে না তখন হাত চাটতে গেলে সেই ময়লাগুলো পেটে চলে যাবে।" এক ঘন্টা ধরে সেগুলো চিন্তা করে খাতায় লিখে ফেলল। ততক্ষণে দার্শনিক লিখল গাছ সম্পর্কে। প্রথমে ভাবল, "গাছের পাতা ছেড়া ভাল নয়। গাছের প্রাণ আছে। এখন গাছের পাতা ছিড়লে গাছ ব্যথা পায়। এটা অনেক মানুষে বোঝে না।" তখন সে এই মাত্র যেগুলো ভেবেছে সেটাই লিখেছে। আরো লিখল, "অনেক লোক বোঝে না, গাছের পাতা ছিড়লে গাছ কষ্ট পায়, গাছের ব্যথা লাগে। তাই সে লিখে দিল, যারা জানে যে, গাছের প্রাণ আছে, তারা তাদেরকে বুঝিয়ে বলার পরও যদি তারা না শোনে, তাহলে তাদের চুল ধরে টান দিবে। তারপর তাহলে যদি সে ব্যথা পায়, তখন তাকে বলবে, সে ব্যথা পেল কিনা। তখন বলতে হবে যে, দেখলে, গাছ এরকমই কষ্ট পায়। এটা বলতে হবে যারা জানে তাদেরকে।" এরপরে চিন্তা শেষ হল দার্শনিকের। সে বৈজ্ঞানিককে গিয়ে বলল, "বন্ধু! এবার কি নিয়ে গবেষণা করি বলতো।" "ফুরিয়ে গেছে, বন্ধু! আমারও তো ফুরিয়ে গেছে। একটু পড়ে দেখ না লেখাটা, আমি কি লিখেছি।" তখন দার্শনিক বলল, "ঠিক আছে, দাও দেখি।" দার্শনিক লেখা পড়ে বলল, "এই তো কেমন সুন্দর লিখেছে। আমার খাতা আমি নিয়ে আসি বাসা থেকে।" বলে দার্শনিকও দার্শনিকের খাতা নিয়ে গেল। খাতা নিয়ে আসার পর বৈজ্ঞানিক দেখে বলল, "খুব ভাল। তোমারটা অনেক ভাল হয়েছে। এবার শোন, এবার তাহলে তুমি ফুল নিয়ে গবেষণা কর। তার পরের সপ্তাহে ফল নিয়ে গবেষণা করবে।" "আর আমি কি নিয়ে গবেষণা করব?" "তা তুমিই ভাব।" "আমারটা ঠিক আছে। তুমি নিজেই ভেবে দেখ তুমি কি নিয়ে গবেষণা করতে চাও।" তখন বৈজ্ঞানিক ভাবল, "আমার বন্ধু আমার সাথে এমন করল কেন?" তখন বৈজ্ঞানিকটা বলল, "দাড়াও। আমি তোমাকে এত উপকার করলাম, আর তুমি আমার একটুও উপকার করলে না। আর তুমি আমার সাথে এমনভাবে কথা বললে, যেমনভাবে পাগলিরাও কথা বলে না।" বলেছে এভাবে, "এই, তুমি কি পাগল নাকি, আমি তোমাকে বলে দেব। আমি কি তোমার দাসী? যাও। আমি তোমার দাসী নই। আমি চলে যাচ্ছি। পাগলী কোথাকার!" এমনভাবে বলেছিল দার্শনিকটা। তখন বৈজ্ঞানিকটি মজা দেখাতে আসল। দার্শনিকের যখন ফুলের গবেষণা শেষ হয়ে ফলেরটাও শেষ হয়ে গেল, তখন দার্শনিক যখন কি নিয়ে ভাববে জানতে আসল, তখন বৈজ্ঞানিক তার আলমারি-টালমারি ওয়্যারড্রব-ট্রয়ারড্রব সব নিয়ে বিদেশে বাড়ি বানাতে গেল। বিদেশেই এখন থেকে সে থাকতে লাগল। আর দার্শনিকটাও কষ্টে নিজেই ভেবে ভেবে সবকিছু করল।

শিক্ষা: অন্য কেউ যদি বেশি সাহায্য করে তোমায়, তাহলে তুমি যদি ছোট সাহায্যও না কর, তার সাথে আজেবাজে ব্যবহার কর, তাহলে দার্শনিকটার মতই হবে। সাহায্য যে করে, তার সাথে দুর্ব্যবহার করতে হয় না।