শরত কাল। রিতা ও দাদা রোদে বসে শিউলি ফুলের গন্ধ নিচ্ছে। তাদের হাতে খবরের কাগজ।
রিতা: শরত কালে শিউলি ফুল এত সুন্দর হয় কীভাবে?
দাদা: শরত কালে শিউলি ফুলই তো আসল্। অন্য সময় শিউলি ফুল তো ফোটেই না। শিউলি ফুল আসলে এমনি অনেক সুন্দর হয়। অন্য দিন ফোটে না তাই।
রিতা: এবার বুঝেছি।
বর্ষা কাল হবে। দাদা বাজারে যাচ্ছে।
রিতা দাদাকে: দাদা! তুমি কী কী কিনতে যাচ্ছ?
দাদা: আমি টব, মাটি, গাঁদা ফুলের বিচি ও কুঠার কিনতে যাচ্ছি।
রিতা: আমিও যাব।
দাদা: তাহলে চলে এসো।
তারা বাজারে গেল। যেতে যেতে------
রিতা: আমরা কেন এসব কিনতে যাচ্ছি?
দাদা:বর্ষা কালে বৃষ্টি পরে তো,তাই।এর মধ্যে গাছ লাগাতে পারলে বর্ষা কালে গাছগুলো তাড়াতাড়ি বড় হতে পারবে। তাই কিনতে যাচ্ছি।
তারা এসে গাছ লাগালো।
রিতা: বর্ষা কাল শুরু হচ্ছে। দাদা এটি বারান্দায় রাখি। চলো বৃষ্টি শুরু।
বর্ষা কাল হলো । গাছটা বড় হলো । গল্প শেষ।
আমরা শিখলাম - দুটি ঋতু।কী হয় তাতে। যথা- শরত, বর্ষা।
শরত- শিউলি
বর্ষা-বৃষ্টি
Sunday, January 24, 2016
Friday, January 22, 2016
সন্তানের গান
মাগো দেখে যা না গো আমার কোলে কে রে-
সন্তান আসিয়াছে
তোমার নাতিনটা রে।
মাগো দেখে যা না গো আমার কোলে কে রে।
(প্রেক্ষাপট: মায়ের সন্তান হয়েছে। তাই মা নিজের মাকে অর্থাত বাচ্চার নানীকে ডেকে বলে, মা, দেখে যাও, আমার কোলে কে? তোমার নাতিন হয়েছে।)
সন্তান আসিয়াছে
তোমার নাতিনটা রে।
মাগো দেখে যা না গো আমার কোলে কে রে।
(প্রেক্ষাপট: মায়ের সন্তান হয়েছে। তাই মা নিজের মাকে অর্থাত বাচ্চার নানীকে ডেকে বলে, মা, দেখে যাও, আমার কোলে কে? তোমার নাতিন হয়েছে।)
Thursday, January 21, 2016
শরীফার গল্প
শরীফা খুব লক্ষ্মী মেয়ে। সে চিরুলিয়া গ্রামে বাস করে। তাদের জেলার নাম মধুরপাড়া। মধুরপাড়ায় প্রায় ২০ হাজার লোকজন আছে। অমনি করে শরীফা কিসের জেদ ধরল জান? শহরের বাড়ি যাওয়ার জন্য। শহরে তার দাদীরা আছে। এমন করে হয় দাদুর বাড়িতেই তো তারা থাকে। নাতিনরা তো দাদির বাড়িতেই থাকে। কিন্তু শরীফার বাবার চুরুলিয়া গ্রামটি অনেক পছন্দ হয়। আর যেই বাড়িতে তারা বাস করে, সেটা তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। যদিও শরীফার দাদী তার মা হয়, কিন্তু সে নিজের শহর ছেড়ে ঐ গ্রামের বাড়িতে চলে আসে বাস করতে। আর সেই বাড়ির পাশে এত্ত সুন্দর পুকুর। পুকুর ভরা মাছ। একদম সবুজ বা নীল পানি নয়, দেখতে খুব সুন্দর স্বচ্ছ পানি। খুব পরিস্কার। তাই বাবা এইভাবে গ্রামেই বাস করতে থাকে। কিন্তু পরিচয়টা তো শেষ। এবার আসল গল্পটা শুরু করি। শরীফা তো শহরের বাড়ি যাওয়ার জন্য জেদ ধরেছে। আর চুরুলিয়া গ্রামে তারা যেই বাড়িতে থাকে, সেইখানে তার নানা-নানুকেও নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জেদটা ধরল সেই ঘুমের সময়। অন্য সময় হলে হতো না? তাও আবার ঘুমের সময় এসেই জেদটা হল। তখন নানা বলল, "যদি এখন না ঘুমাও, আমি কিন্তু আগামীকাল টিকেট কাটব না। আর টিকেট কাটলেও তোমাকে রেখেই আমরা চলে যাব। ঘুমাও। নাহলে কিন্তু হবে না।" তখন শরীফা বলল, "তাহলে আমাকে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়াও। নাহলে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াও। গল্প হলেই বেশি পছন্দ করি।" তখন নানা গান গাওয়া শুরু করল: "ঘুমাও ঘুমাও ঘুমাও। ঘুমাও ঘুমাও ঘুমাও আমার খুকুমনি....। ঘুমাও ঘুমাও ও আমার লক্ষ্মী... সোনা..মনি।" (সুর: তোরা দেখে যা...) তখনই ঘুমিয়ে গেল। তারপর নানা, নানু পিঠা বানাতে শুরু করল। বাবাও চালের গুড়ো কিনতে গেল। আর মা চাল কিনে আনার পর সেগুলো বাটল। বেটে পানির সাথে ভিজিয়ে দিল। ফুপা-ফুপু এসে গেল। ফুপু বাগান থেকে খেজুরের রস নিয়ে এল। আর ফুপা চিনি কিনে আনল। পিঠা বানানো শুরু হয়ে গেল। নানু বানালো ভাপা আর পাটিশাপটা। নানা বানালো সেই পিঠা আর সাজের পিঠা। অন্যরা সবাই মিলে বানালো চিতৈ পিঠা, ভিজানো পিঠা ও কুলি পিঠা। সবাই মিলে নানা রকমের পিঠা বানালো। শরীফা ঘুম থেকে উঠে মা মা করে ডাকতে লাগল। রান্নাঘরটা ছিল দূরে। তখন বাবুটি ভাবল, মা বোধহয় কাজে ব্যস্ত। তাই বাবুটি বলল, "বাবা, বাবা। আস।" তারপর ভাবল, বাবাও বোধহয় কাজে ব্যস্ত। তারপরে ডাক দিল, "নানা, নানু। তোমরা কোথায়, আস।" তখন বাবু ভাবল যে, কি, সবাই একসাথে কাজে ব্যস্ত কি করে হতে পারে? এত কাজ এখানে তো থাকতে পারে না। বিয়ে বা বৌভাত নাকি, তার জন্য এসব বানাচ্ছে? কোন মেলা টেলা নাতো? তখন শরীফা উঠে বাগানের দিকে গেল। বাগানে ঘুরে হাটতে থাকল। তখন সে কাউকেই দেখতে পেল না। শরীফা বাগান থেকে বের হয়ে গেল। সে গরুর খামারে গেল। পেল না। মুরগীর খামারে গেল। পেল না। বাথরুমের সামনে গেল। বাথরুমের দরজাও খোলা। বাবুটি নদীর কিনারে গিয়েও অনেক খুঁজল। পেল না। তার বয়স কিন্তু মাত্র পাঁচ বছর। এত কম বয়সেই সে বাগান, বন সব জায়গায় ছুটে বেড়াতে পারে। তখন তার মনে পড়ল, নানা নানু তো সবসময় থালাবাসন মাজে বা রান্না করে। সে দৌড়ে কলতলায় গেল। তখন সে সেখানে শুধু নানাকেই দেখতে পেল। তখন নানাকে জিজ্ঞেস করল, "আমার মা-বাবা আর নানু কোথায়?" নানা বলল, "আরে, রান্নাঘরে একটুও খুঁজলে না? দেখতো ওখানে আছে নাকি?" কিন্তু গিয়ে দেখল, এত মিষ্টি গন্ধ, মিষ্টি গন্ধের জোরে সে দৌড়ে গেল। তখন সে ফুপা-ফুপুকে দেখে লাফ দিয়ে ফুপাকে জড়িয়ে ধরল। ফুপুকেও জড়িয়ে ধরল। ওখানে চাচা-চাচীরাও ছিল। চাচা-চাচীকে জড়িয়ে ধরল। সে চাচীকে এততো ভালবাসত, সে লাফ দিয়ে চাচীর কোলে উঠে গেল। আর বলল, "এত মিষ্টি গন্ধ কিসের? চুলায় কি রান্না করছ? ঢাকটানা উঠাও তো দেখি!" তখন নানু বলল, "দেখ। তবে তো তোমায় নামতে হবে।" তখন শরীফা বলল, "না না না। আমি চাচীর কোল থেকে নামব না। চাচীর কোলেই থাকব। কি রান্না করেছ না দেখতে পেলেও চাচীর কোলে থাকব। কিন্তু নামব না।" তখন নানা, নানু, মা, বাবা হা-হা-হা করে হাসতে লাগল। মা বলল, "হা-হা-হা হা হা।" বাবা বলল, "হি-হি-হি।" নানু বলল, "এত বড় মেয়ে কি বাবা ছাড়া আর কারো কোলে ওঠে?" নানা বলল, "কি রান্না করেছি তা না দেখে তুমি চাচীর কোলে উঠে রয়েছ?" তখন শরীফা ঝাপ দিয়ে চাচীর কোল থেকে নেমে গেল। বলল, "আচ্ছা আমাকে দেখাও না কি রান্না করছ?" তখন নানু বলল, "চোখ বন্ধ করে হা কর দেখি!" তখন শরীফা বলল, "মিষ্টি না ঝাল?" তখন নানু বলল, "তোমার পছন্দের স্বাদ।" তখন শরীফা বুঝল, মিষ্টি। তখন চোখ বন্ধ করে হা করল আর নানু চিতৈ পিঠা ঢুকিয়ে দিল। আর বলল, এখনো চোখ খুলো না কিন্তু। আরো অনেক দেব।" শরীফা মুখেরটা শেষ করে আবার হা করল। তখন নানা সেই পিঠা (সেমাই পিঠা) দিয়ে দিল। সেটা শেষ করে শরীফা আবার হা করল। ফুপু দিল সাজের পিঠা। সেটা শেষ করে আবার হা করল। ফুপা দিল কুলি পিঠা। এর মধ্যে সব পিঠাই খাওয়া হয়ে গেল। আর পিঠার কথা ভাবতে ভাবতে শহরের বাড়ি যাওয়ার কথা ভুলে গেল। নানা-নানু দাদু বাড়িতে যেতে পারে না দেখেই এই পিঠাটা বানালো, যাতে ওর জেদটা কমে যায়।
শিক্ষা: এমন জেদ হলে জেদ ভাঙ্গানোর জন্য বুদ্ধিই তোমার আসল পথ।
শিক্ষা: এমন জেদ হলে জেদ ভাঙ্গানোর জন্য বুদ্ধিই তোমার আসল পথ।
Wednesday, January 20, 2016
সমুদ্র সৈকত
[সূর: শুকনো পাতা]
আমার সাহেব নাইতে নামে
সমুদ্রেরই পায়-
ঢেউ করে ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি
মানুষেরই গায়।
সব মানুষের পায়ের ছাপ
ঢেউ আগিয়ে দেয় এক লাফ;
সৈকত জুড়ে বসিছে মেলা
বন্দর পতেঙ্গায়।
ঢেউ করে ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি
মানুষেরই গায়।
আমার সাহেব নাইতে নামে
সমুদ্রেরই পায়-
ঢেউ করে ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি
মানুষেরই গায়।
সব মানুষের পায়ের ছাপ
ঢেউ আগিয়ে দেয় এক লাফ;
সৈকত জুড়ে বসিছে মেলা
বন্দর পতেঙ্গায়।
ঢেউ করে ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি
মানুষেরই গায়।
Tuesday, January 19, 2016
জেসমিনের গল্প
এক বাবু খুব দুষ্টু ছিল। তার নাম জেসমিন। তার বয়স ৬ বছর। সে ক্লাস কেজিতে পড়ে। চিথিলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেটা তার বাসা থেকে একটু দূরে। কেমন দূরে জান? যেমন উদয়ন স্কুল থেকে নীলক্ষেত যতটুকু ততটুকু। সে ফেরার পথে সিভিট-টিভিট এসব কিনতে চাইত। সে একদিন তার বাবাকে বলছিল, "দেখ দেখ বাবা, দোকানে কি সুন্দর ট্যাবলেটের মত সাদা রঙের। হলুদ আর গোলাপী রঙেরও আছে। ওটা আমি কিনব। ওটা কিনে দাও না।" তখন বাবা বলল, "ধূর। এসব ফাও ফাও জিনিস কিনে এসব সময় আর টাকা নষ্ট করব কেন বল দেখি।" তারপর তার বাবা একদিন তরকারির বাজারে যাচ্ছিল। তার মেয়েটি ভাবল যে, এমনি দোকান। সে বাবাকে বলল, "আমিও যাব তোমার সঙ্গে। যাই না বাবা!" তখন আবার বাবা বলল, "আমি আধা ঘন্টায়ই ফিরে আসব। তুমি বাসায় বসে একটুখানি খেল। ঘরে কিছু নেই। একটু কিছু কিনে আনি।" তখন বাবুটি একটি বুদ্ধি বের করল। বাবুটি দরজার সামনে আস্তে দাড়িয়ে থাকল। বাবা যেই লিফটে টিপ দিল, আর যেই দরজাটি খুলল লিফটের, অমনি সে বাবার পিছু পিছু দৌড়িয়ে চলে গেল লিফটের মধ্যে। বাবা লিফট থেকে নেমে দেখে, পিছনে কে যেন হাসছে। তাকিয়ে দেখল যে, জেসমিন। তখন সে বলল, "জেসমিন! তুমি এখানে কেন? কিভাবে এলে?" তখন জেসমিন হাসতে হাসতে বাবার কানটি ফাটিয়ে দিল। বাবা তো বলছে, "কী এসব করছ তুমি? কারণটা তো বল। খিলখিলিয়ে হাসলে হবে?" তখন বাবুটি বলল, "তুমি যখন লিফটে ছিলে, পিছন পিছন গিয়েছি আমি। টেরও তবু পাওনি। হা-হা-হা।" বাবা বলল, "উহ! তোমায় নিয়ে আর পারলাম না। এসো বাজারে যাই।" জেসমিন বাবাকে নিয়ে বাজারে গেল। সে বাজারে মূলা দেখে ভাবল, এটা বোধহয় শক্ত আইসক্রিম। বাবা তখন কোন সবজিই দেখতে পাচ্ছিল না বাজারে। বাবু বলল, "বাবা আমি ঐ আইসক্রীমটা খাব।" তখন বাবা ভাবল, "যাক বাবা, এটাকে আইসক্রীম ভাবল। বাচ্চাদের তো সহজে খাবার খাওয়ানো যায় না। আমি বরং মূলা সেদ্ধ করে মধু আর বাদাম দিয়ে ডিজাইন করে দেব। আর সেটা অডার দিয়ে এটাকে আরও মজা বানিয়ে দেব।" তখন বাবা সেই মত কাজ করল। জেসমিনকে বলল, নাও তুমি এটা কিনতে চেয়েছিলে না? এখন মন ভরে খাও। তখন জেসমিন মূলা খেয়ে বলল, এখন থেকে আমি আর ভাত খাব না। ঐ আইসক্রীমটাই খাব । তুমি আরও কিনে আন । বাবা বলল, তাহলে আমার সাথে কিনতে যেতে পারবে না। তখন বাবুটি বলল, ঠিক আছে কিন্তু আমি আইসক্রীম খাব।" এখন থেকে আইসক্রীম খেয়েই জেসমিন থাকল।
Subscribe to:
Posts (Atom)