এক দেশ খুব পরিস্কার ছিল। কিন্তু রাজা একটু দুষ্টু। সে
শুধু খাবার খেতে চাইত। সবাই এত খাবার পাবে কোথা থেকে? নিজেদেরও খেতে হয়, রাজাকে
তার থেকেও আরও বেশি খাবার দিতে হয়। এ আবার কেমন কথা! এগুলো রাজার প্রজারা অনেক
চিন্তা করত। একদিন তার মন্ত্রী রাজাকে গিয়ে বলল, "রাজা মশাই! আপনি এত খাবার
খেতে চান। তাহলে আপনি দুটি মাছ নিয়ে এসে নিজে নিজে খান। আপনিই নিয়ে আসেন। আমরা এত
খাবার আনতে পারি না।" তারপর রাজা নিজে বাইরে গিয়ে মনে ভাবল, "ওরা এত
খাবার আনতে পারে না। ওদের কি এত টাকা-পয়সা নেই? রাজার প্রজা হয়ে আমার থেকে আমি
একটু ওদেরকে একটু টাকা দিয়েছিলাম সবাইকে, একশ টাকার নোট দিয়েছিলাম, সেই টাকাগুলো
ওরা কি করে নিল? একটু খাবার আনতে পারে না।" এই কথা রাজার মনে ভেবে সে গাছে
উঠে ফল পেড়ে খেতে লাগল। ফল খেয়ে তারপর ও গেল। দেখল যে, ঐখানে এক ঝুড়ি রূপচান্দা
মাছ রাখা আছে, আর সাথে একটু খাসির গোশত রাখা আছে। সে মজা করে খেল। আসলে সেই
খাবারটা একটা মানুষের বাচ্চা খেতে চাইছিল না। তখন তার মা যখন দেখে সে খাবেই না,
তখন সে ঝুড়িতে সেগুলো রেখে মাটিতে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। সেগুলো সেই রাজা মন ভরে খেল।
তবে সেই খাবারটা মজা ছিল, তবুও সেই মেয়েটি খেল না। সেই দেখে রাজা তাই খেল। খেয়ে
বলে, আর কত খাবার লাগবে আমার খেতে। এত খাবার আমি পাব কোথা থেকে? এই বলে সে গরুর মত
ঘাসপালা খেতে লাগল। তারপর গরু-ছাগল ওরা যখন আসল, এসে দেখল যে, একি! রাজা মশাই এত
বোকা? আমাদের ঘাষ খাচ্ছে? গরু বলল, হামবা হামবা, ছাগল বলল, ভ্যঁ ভ্যঁ। তবুও রাজা
ঘাস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে উঠল। উঠে সে দেখল, একটা জঙ্গল। সেই জঙ্গলে থাকত একটা শিয়াল। শিয়ালকে
দেখে রাজা ভয় পেল। আসলে শিয়ালটা কিছু করবে না। রাজা তারপর দেখল, সেইখানে পঞ্চাশটা
ভুট্টা আছে। সেটা খেল। সেটা খেয়েই রাজার পেট ভরল। পঞ্চাশটা ভুট্টা খেল খুটে খুটে,
মজা মজা করে খেয়ে ফেলল। তাতেই রাজার পেটটা ভরে গেল বটে। তারপর সে পানি পাবে কোথা
থেকে? সে গেল। কিন্তু রাজার তো অনেক ধন-সম্পদ। সেখান থেকে একটা সোনার টুকরা নিল।
সে নিয়ে দোকানদারের কাছে গেল। বলল, আমার দশটা বড় বড় পানির বোতল লাগবে এবং বোতলে
পানি ভরতে হবে। তারপর রাজা মজা মজা করে পেটটা ভরে খেল পানি, আরেকটু পারলে নদী থেকে
মিষ্টি পানি এক ফোটা খেয়ে নিল। তারপর দৌওেড় ঘরে গেল। রাজপ্রাসাদে ঢুকে সে বলল, এই
যে! আমাকে আজ দুপুরের খাবার দিতে হবে না। আমি মন ভরে অনেক খাবার খেয়ে এসেছি। তোমরা
কি মনে কর গো! তখন রাজার প্রজারা বলল, রাস্তার থেকে কিছু খেয়েছিলেন? তখন রাজা বলল,
না, না। রাস্তার মধ্যে ঝুড়ি ছিল। সেই ঝুড়ি থেকে ফল-টল খেয়েছি। ঠিক আছে মহারাজ,
আপনি যখন খেয়েছেন, তখন আর কি বলা যায় মহারাজ। তাই তো রাজার একটু পরেই চিকেন খেতে
ইচ্ছে করল। সে দৌড়ে গিয়ে বাজার থেকে মুরগী কিনে এনে রানীদের মত মুরগীর গোস্ত কুটে
সে নিজেই রান্না করতে শুরু করল। রান্না করে নিজেই খেতে শুরু করল। নিজে চিকেন ফ্রাই
করল। সেটা কী মজার একটা কথা না! রাজা ছেলে মানুষ। রাজা করল রানীর মত রান্না। আর
রানী ওদিকে খাবার রান্না করে হাপিয়ে পড়ল। তারপর রানী শুতে গেল। শুয়ে বিছানায় একটু
বিশ্রাম করে নিল। বিশ্রাম করে রানী আবার একটি মাছ ভাজল। এখন রাজাকে তো সে খেতে
দেবেই না। শুধু দু টুকরো সবজি খেতে দিল। আর কিছু খেতে দিল না। আর সাথে একটি শসা
দিল। এতটুকু খেতে দিল, আর সাথে এক বোতল পানি দিল। বোতলটা ছিল একটু ছোট। তারপর রাজা
একটু খেয়ে তো রাজার পেটে কী ক্ষুধা! রাজা গেল। দেখল যে, একটা মৌমাছির গাছ। ও! আমি
তো আর এত বেশি খাবার পেলাম না। একটি বড় বাটিতে করে একটু মধু নিয়ে খাই। এ বলে রাজা
একদিন ক্ষুধাটা একটু কমার ওষুধ দিল তার মন্ত্রী। ক্ষুধাটা একটু কমল। তখনই তাকে
খাবার খেতে সাথে নিল। তারপর তারা সবাই সুখে-শান্তিতে থাকল আর আমার গল্পের এই
কথাগুলো খুব মজার হয়ে গেল। তখন রাজা মনের সুখে তাদের সঙ্গে খাবার খেতে লাগল।
No comments:
Post a Comment