এক
ছিল এক লোক। লোকটির নাম মহিনাথ চৌধুরী। তাকে সবাই চৌধুরী বলে ডাকে। সে হল
সংসারের সবথেকে ভাল কাজ করে দেয়। একদিন তার একটি ছেলে হল। তারা ছেলেটাকে খুব আদর করল। এবং
ছেলেটাকে মধু, দুধ এগুলো খাওয়ালো। বাচ্চাটির বয়স দুই দিন। ছেলেটাকে জন্মের সাথে সাথে দুধ খাওয়ালো। দুধ
খাওয়ালো এবং বাচ্চাটাকে খুব আদর করল এবং বাচ্চাটাকে নরম খাটে ঘুমাতে দিল। ছেলেটাকে
এত আদর করে সুন্দর চাদর বিছিয়ে কষ্ট করে ঘুম পাড়িয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল। এরপর
বাচ্চা ঘুমালো। এবং তার মাও ঘুমালো। একটু পর বাচ্চা নিজেই ঘুম থেকে উঠে
"ওয়্যাও" করে কাঁদতে লাগল। বাচ্চার "ওয়্যাও" শুনে মা চমকে ঘুম
থেকে উঠে গেল। উঠে বাচ্চাটাকে কত আদর করে কান্না থামাল। বাচ্চাটাকে
কোলে তুলে নিয়ে ঘুরল। এবং সেই চৌধুরীকে ডাকল। ডেকে বলল যে, ছেলেটার ঘুম ভেঙ্গে "ওয়্যাও" করে কেদে উঠেছে। আমি ওকে আর কান্না থামাতে পারছি না। তুমি
একটু কোলে নিযে ওকে নাচাও, বাইরে গিয়ে একটু দৌড়াদৌড়ি কর। তখন
সে বাচ্চাকে কোলে তুলে নিয়ে হাটল এবং মাঠে দৌড়াল। তারপর বাচ্চার কান্নাটা থামল। বাচ্চাকে
এমন আদর করতে করতে দিনরাত গেল,
তবুও আদর করতে থাকল। বাচ্চার
কান্নাও থামল না। তারপর বাচ্চাটিকে ওরা এমন আদর করতে করতে রাতের খাবার খাওয়ার
সময় হয়ে গেল। তারপর বাচ্চার কান্না থামল। তখন ওরা দৌড়ে নামাজ-কালাম পড়ে প্লেট ধুয়ে খাবার
আনল। তারা খেয়ে দেয়ে তার মা বেশি করে পানি খেয়ে বাচ্চার পাশে
শুয়ে বাচ্চাকে কত আদর করে দুধ খাওয়াল। বাচ্চাটা এত মজা করে দুধ খেল যে, দেখলে মনে হয় যেন সারা জীবনে কিছু খায়নি। তারপর
সে খেয়ে দেয়ে উঠে ঘুমাতে লাগল। অনেক অনেক দিন পর ছয় মাস হয়ে গেল। তখন
তার বাচ্চাটি পাতলা খাবার খাওয়া শিখল। ছয় মাস না হওয়া পর্যন্ত খাওয়া শিখাতে পারছিল না। দুধ
ছাড়া অন্য কিছু খাওয়াতে শিখাতে পারেনি। শুধু ছয় মাস পর পর বাচ্চা অন্য পাতলা খাবার
খাওয়া শিখল। তখন গাজর ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে ফিডারে ভরে এনে তারপর একটু
গরম করে বাচ্চাকে দিল। বাচ্চা খেতে লাগল। খেয়েদেয়ে তারা উঠে বাচ্চাকে আবার ঘুম পাড়িয়ে
বিছানায় শুইয়ে দিয়ে গেল। তিন বছরের নিচে তার বাবা-মা কথা শিখালো। এরপর ছেলেটা আরও অনেকদিন পর বড় হল। তার
তখন ১২ বছর বয়স। তখন সে আস্তে আস্তে একটু করে দুষ্টু হতে লাগল। সে
শুধু লুকিয়ে থাকে। খাবার খায় ভাত নিয়ে এসে লুকানোর জায়গায় বসে বসে খায়। কত
দুষ্টু! লুকানোর জায়গায় লুকিয়ে সব কাজ করে। লুকানোর জায়গায় বসে বসে ফুটবল খেলে। আর
যখন ইচ্ছা হয় যে, বন্ধুদের সাথে খেলবে, তখন মাঠে গিয়ে গাছের পিছনে গিয়ে লুকিয়ে ফুটবল খেলত। অনেক
দিন পর সে খুব ভাল ছেলে হল। ১২ বছরের আগে সে স্কুলে গিয়েছিল না? স্কুলে
অনেক পড়ালেখা শিখেছিল। সে লিখতে গিয়ে ২ নম্বর কাটা গিয়েছিল। কারণ, তাকে লিখতে দিয়েছিল যে, সকাল
থেকে তুমি কি কর? সকাল থেকে কি কি করার মধ্যে সে লিখে ফেলল যে, আমি সব সময় বই-খাতা আউলিয়ে রাখি। সেজন্য সে দুই নম্বর কাটা গিয়েছিল। এখন
সে অনেক লক্ষ্মী এবং ১২ বছরে যেই ক্লাসে ভর্তি হয় সেই ক্লাসে খুব ভাল মানের
লেখাপড়া করে এবং বাসায় এসে খুব ভাল করে লেখাপড়া শেখে এবং থাকে। একদিন
চৌধুরী বাড়িতে অচেনা কয়েকটি লোকজন এল। কলিং বেল দিল। দরজা খুলে দেখল যে, কয়েকটা মানুষ,অপরিচিত। আত্মীয়-স্বজন
না। তার বাসায়ও কখনো যায়নি। তারপর দেখল, তারা
বলে ওঠে যে, কিছু খাবার দেবেন? কিছু খাবার খেতে এসেছি। অন্য বাড়িতে কেউ খাবার দিচ্ছে না। শুধু
এক বাড়িতে একটুখানি এক চিমটি ভাত খেতে দিয়েছে। আমরা সেটুক খেয়েই খিদে মিটে আছি। আপনারা
কি একটু খেতে দেবেন? বলে, "হ্যাঁ, আমাদের বাসায় অনেক খাবার দাবার আছে। আমার
একটা ছেলে আছে। সে রান্না করা শিখে গেছে। আমাদের এই বাড়ির সবাই রান্না-বান্না করতে পারে। তাই
এখানে বেশি বেশি খাবার পাবেন। আমাদের খাবার শেষ হবার পর কিছু খাবার রয়ে যায়।" "আসেন আসেন, তবে ভিতরে আসেন। আমি পাটি বিছিয়ে দিচ্ছি। তবে আপনি যদি বলেন যে, আমাদেরকে খাবার দিয়েছেন। এটা কিন্তু বলবেন না কারো কাছে। বললে
কিন্তু আবার এসে অন্যরাও খাবে। আপনারা শুধু আরেকবার খেয়ে যেতে পারবেন।" এই
বলে পাটি বিছিয়ে শেষের কতটুকু ভাত এনে পাটিতে বিছিয়ে দিল। আর খেতে দিল। তারপর মাছ, মুরগী, ডিম, মাংস, ভাত
এগুলি খেয়ে ওরা আনন্দ করল। ওদের পেটটা ভরে গেল। এবং ওরা সুখে-শান্তিতে থাকতে লাগল। এবং
বাড়ি থেকে বের হয়ে যেই বের হতে গেল, অমনি
বলল, ভাই যাইয়েন না, একটু থাকবেন। বলে, হ্যাঁ, তা তো
থাকবোই। ইচ্ছে করল,
অন্য বাড়িতে বেশি বেশি ভাত
থাকলে একটু খেয়ে নেই।" বিশ্রাম নিবেন? হ্যা, আমাদের মাঠে একটি পাটি আছে, সেখানে বিশ্রাম করবেন। "না, না। আমি আপনাদেরকে মাঠে যেতে দেব না। আপনারা এখানে এসে বিশ্রাম করেন। কত সুন্দর একটা খাট! আমরা সেই খাটটায় উঠতেই পারছি না। খাটটাতো এখন নোংরা হয়ে আছে। একটু পরিস্কার করে আপনাকে শুতে দেব।" বলে যে, "ঠিক আছে, আপনি যখন অনেক কাড়াকাড়ি করে আপনাদের বিছানায়ই শুতে দিচ্ছেন, তখন কি আর আমি যাব? আপনি আমাদের খাবার-দাবার খাইয়ে যখন অন্য আদর-যত্ন করেছেন, তখন আপনাদের বিছানায়ই শুয়ে পড়ি। আপনারাই মনে হয় বেশি আদর করবেন।" তখন সে বলে ওঠে, "হ্যাঁ, আদর তো করবো। কারণ, আমাদের বাড়িতে যে বেশি বেশি ভাত রান্না হয়, জান? আমরা তো বইয়ের ব্যবসা করি। কত টাকা পেলাম! এই টাকা দিয়ে চাল কিনতে গেলাম। ওরা অনেক বড় একটা বস্তায় অনেক চাল দিল। সেই জন্যই তো আমরা বেশি বেশি খাবার রান্না করি আর শেষেরটুকু রয়ে যায়। সেজন্যই তো তোমাদের খাবার দিলাম। কিন্তু আমরা অনেক ভাল। এর পরে আসলেও খাবার খেতে পারবে। এখন তাহলে শুয়ে পড়।" তারপর তারা বিছানায় গেল। তারপর অনেকক্ষণ হল। তারপর রাত্রে বেলা তারা ঘুমালো। তারপর রাত্রে উঠে তাদেরকে আরো কি সুন্দর খাবার দিল। ভাত, মাংস, মাছ, মুরগী, খাসীর গোশত, শাক, ভাত এগুলো খেতে দিল। তারা খুব মজা দিয়ে খেল। তবু তাদের মনটা খুব ভাল। তারা একেবারে মনের আনন্দে ঐ বাড়িতে ফুলের গাছের কাছ দিয়ে ঘুরল এবং আনন্দ করল এবং তারা বাড়ি থেকে বের হল। বলল যে, "ভাই, তোমরা এত খাবার দাবার দাও। পরে আসলেও কিন্তু খাবার দাবার দিবে।" "হ্যাঁ, অবশ্যই দিব। তুমি তাহলে যাও। তোমার বন্ধুদের নিয়ে।" তখন তারা ঘর থেকে বের হয়ে দৌড় দিয়ে সারা দেশ ঘুরে ঘুরে বেড়াল যে, আর কোথায় যাব, আর কোথায় যাব, আর কোথায় ঘুরব, আর কোথায় বিশ্রাম নিব এরকম করে ওরা কথা বলতে লাগল। ওরা যে তিনজন ছিল, তিনজন মিলে ওদের বাসায় যে গিয়েছিল, এখন ওরা ঘুরতে ঘুরতে আরেক বাড়িতে গেল। সেই বাড়ির নাম গোটা চাচার বাড়ি। সেই বাড়িতে খাবার দাবার কেউ বেশি করে রান্না করতে পারত না। ওরা নিজেরাই খেত। এখন ওরা এসে পড়ল। বলল যে, ভাই, একটু খাবার দেবেন? কিছু খাইনি। শুধু একদিনই আমরা কিছু খাবার খেয়ে আছি। কোনদিনই খাইনি, একদিন শুধু খেয়েছি। আপনারা কি একটু দেবেন? দিলে আমাদের ক্ষুধাটাও মিটে যাবে। তবে আমরা এ খাবার দাবার খেয়ে মাথায় বুদ্ধি এনে কিছু ব্যবসা করে টাকা নিয়ে আমরা নিজেরা চাল কিনে ভাত খেতে পারব। এখন হয়তো একটু খাবার খেতে দেন। বলে যে, "খেতে দিব, কিন্তু আমরা তো তাহলে খেতে পারব না।" "কেন, আপনাদের বাসায় কি ভাত রান্না বেশি হয় না?" "বলে, না। আমাদের বাসায় কিছু রান্না হয়। তবে আমি খাব না, আপনারা খান। আপনাদের সঙ্গে আমি খেতে পারব না। আমরা খাবার খেয়ে আরেকটু রান্না করে রাখি। এখন তো তবে একজনের ভাত রান্না করলাম। একজন খেতে বসুন, ততক্ষণে আরেকজনের ভাত রান্না করি। তখন একজন ...। এরপরে সবার শেষের লোকটিকে খাবার দিল। তখন তাদের মাথায় বুদ্ধি এল। তখন তারা ব্যবসা করে টাকা নিয়ে চাল কিনে তরকারি কিনে ভাত রান্না করে খায়। এবং বড় একটা বিল্ডিং বানিয়ে ছোট্ট একটু ঘর থেকে বের হয়ে বড় বিল্ডিংয়ের ভিতর ঢুকল। যারা একটু খাবার দিয়েছিল সেই দুই বাড়ি চৌধুরী বাড়ি ও গোটা চাচার বাড়ির মানুষদেরকেও বড় বিল্ডিংয়ে এনে ঢুকালো। আর বলল যে, "চৌধুরী বাড়ির মানুষ, গোটা চাচার মানুষ তোমাদের বাড়ির মানুষরা একটুখানি ছোট ঘরের ভিতর থাক। এখন বড় বিল্ডিংয়ের ভিতর এসে থাক।" এবং তারা সুখে-শান্তিতে বাস করল। এবং সেই ছোট্ট কুড়ে ঘরগুলো তাদের এক জায়গায় রয়ে গেল। এবং গরীব লোকেরা ঘর খোঁজে যে, তারা ঐখানে গিয়ে থাকল। তারাই ওই দুই বাড়িতে এসে থাকল। এবং আমার বাবা গল্পটাকে বেশী মজার মনে করেছিল।
No comments:
Post a Comment