Wednesday, January 21, 2015

দুষ্টু মেয়ে

এক ছিল দুষ্টু মেয়ে। তার নাম মুনসাবিনী। ও রোজ স্কুলে যায়। স্কুলে গিয়ে একদিন দেখা গেল, তার একজন বন্ধু দুষ্টু বুদ্ধি করছে। তার দেখাদেখি সেও দুষ্টু মেয়ে হয়ে গেল। এইভাবে সেও দুষ্টু মেয়ে হল। তারপর থেকে সে শুধু খেলাধুলা করে লেখাপড়া বাদ দিয়ে। সে এখন তার মা-বাবার কাজে ডিস্টার্ব করে। সে সারাক্ষণ শুধু মাঠে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে, খেলে। আর সারাক্ষণ শুধু বসে বসে দুষ্টামির মধ্যে থেকে কোন দুষ্টামিটা করবে সেটা ভাবে। একদিন তার মাথায় একটা দুষ্টামির ভাবনা এল। সে ভাবল, আর দুষ্টামি করতে হলে আমাকে আরো বুদ্ধিমান হতে হবে। তখন সে দৌড়ে গিয়ে কিছু বইতে কিছু একটু চোখ দিয়ে না দেখতেই বুদ্ধি পেয়ে গেল। গিয়ে সোফার গদি কেবল গুছিয়ে গেছে তার দাদা, সেটা এলোমেলো নোংরা করে চলে গেল। তারপর আরো একটু দুষ্টুমি বুদ্ধি করল। সে গিয়ে যে পর্দা রাত্রেবেলা পর্দাটা টানিয়ে ক্লিপ দিয়ে তার মা যে জানালা বন্ধ করে গেছে, সে ক্লিপটা খুলে পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিয়ে চলে গেল। আর তাদের রুমের মধ্যে বিছানার মশারি টানাতে ভিতরে যখন তার মা ঢুকল ঘুমানোর জন্য বালিশ ঠিক করে দেয়ার জন্য, তখন সে মশারির এক কোণা খুলে মশারিটা খুলে দিয়ে দৌড়ে পালাল। তার মা ছোট্ট একটি বেত নিয়ে পিটানোর জন্য তার পিছে পিছে আসল তাকে মারার জন্য। এবং তার হাতে একটা পিটানি দিয়ে তাকে কান মলে দিল। আর তাকে জোর করে পড়তে বসতে দিবেই বা কেমনে? সেটা ভেবে তাকে পিটিয়ে সোজা করল। মেয়েটি তবুও তার শিক্ষা হল না। সে আবার দুষ্টামি করল। সে তার ছোট বোনটা তার বাসায় একদিন এল যখন, তখনই তাকে যখন দুধ খাওয়াতে দিল তার মাকে, যখন সে পানি খাবে, তখন দৌড়ে গিয়ে তাকে ভয় দেখাল। ছোট বোন তো ভয় পেয়ে কাঁদল। তখন সে আবার দৌড়ে পালাল। আর যখন ছোট বোন বিছানায় বসে খেলছিল, তখন কাঁথাটা দিয়ে ওকে পুরোদমে ঢেকে দিল। ঢেকে দিয়ে দৌড় দিয়ে আবার পালাল। সবকিছু করার পর সে পালাবে। এখন সে আবার একটা দুষ্টামি করবে। একজন কিছু ইট গাড়িতে উঠিয়ে দেবে ঘর বানানোর জন্য, তাতে গিয়ে সে ইটগুলো যে কষ্ট করে জাগাচ্ছিল সেগুলো থাবা দিয়ে ফেলে দিল। এরকম করতে করতে একদিন সে একটা কাণ্ড হল। সে শুধু দুষ্টামি করতে থাকে, স্কুলে যাচ্ছে না। সকাল বেলা খালি ঘুমায়। স্কুলের টাইম নয়টায়। সে ঘুম তেকে ওঠে দশটায়। এক ঘন্টা পার হয়ে যায়। একদিন তার মা তাকে সাজা দিতে হবে। যখন সে বড় হল, তারপরও সে দুষ্টামি করল। বড় মানে সাত বছর হল যখন তার পাচ বছর তেকে। যখন সে অন্য বিছানায় ঘুমাতে শুরু করল মা-বাবার থেকে, তখন তার মা তাকে সাজা দেয়ানোর জন্য তার রুমের মশারি খুলে দিল আর তাদের ড্রাজটা সুন্দর বন্ধ রেখেগিয়েছিল তসেটা খুলে দিল। বালিশগুলো এলোমেলো করে একটা কাপড় দিয়ে পরিস্কার একটা জায়গায় লাগিয়ে দিল। আর তার ঘরে সমস্ত নোংরা ফেলে নোংরা করে দিল। আর তখন সে (মা) হাটতে হাটতে তার রুমে গিয়ে নিজের বিছানায় ঘুমাল। তখন মেয়েটি গিয়ে সে তার বিছানায় গিয়ে  দেখল এই এই কান্ড। সে ঘর পরিস্কার করার জন্য ঝাড়ু দিয়ে ঘর যেই পরিস্কার করছে অমনি সে একটা কাপড় দেখতে পেল। কাপড় নিয়ে উঠানোর জন্য চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। মা সেটা লাগিয়ে দিয়েছিল, সে টেনেটুনে ছুটাতে পারে না। তখন সে তার বন্ধুদের নিয়ে কিছু টাকা-পয়সা নিল। টাকা-পয়সা নিয়ে একটা দুষ্টামির বই কিনল। তার মা সাজা দেবার জন্য সেই বইয়ের মধ্যে যা লেখা ছিল তা মুছে ভাল হওয়ার লেখা লিখে দিল। তারপর তার ঘরের সে সোফা-টোফায় কিছু নষ্ট না ধোয়া মোজা গন্ধ সে মোজাটা রেখে গেল (তার মা)। তখন সে দুষ্টু মেয়েটি সেই বইটা যখন পড়তে বসল তখন সেখানে লেখা দেখল, দুষ্টামি যেসব কাজ করা হয় যেমন নষ্ট করা ইত্যাদি এগুলো করবে না। আর লেখা ছিল যে, ঘর নোংরা করবে না। আর নিজের ঘর সুন্দর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে। আর কারো কোন কাজে ডিস্টার্ব করবে না। আর কারো কোন কাজে ক্ষতি করবে না। আর সবাইকে ভালভাবে চলতে দেবে। আর নিজের কাজ নিজে করতে শিখবে। এবং যে কাজ তুমি করতে চাও সেগুলো করবে না। আর যেগুলো করতে বলিনি সেগুলো একদম করবে না। আর তুমি অন্য যেটা করতে চাও সেগুলো করবে। আর কিগুলো করা ভাল সেগুলো আমি বলছি। সেগুলো হল গিয়ে, সবসময় সত্য কথা বলবে। সন্ধ্যা বেলা পড়ালেখা করবে। মায়ের কাজে সাহায্য করবে। তোমাদের পরিবারের সবাইকেই সাহায্য করবে। আর নিজের বইখাতা নিজে গুছাবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরে সবাইকে থাকতে বলবে, নিজেও থাকবে। আর আস্তে আস্তে কোরআন শরীফ পড়ে আরবী শিখবে। আলিফ বা তা ছা শিখবে। এবং বড়রা ঘর বানাতে গেলে তাদের ইট-টিট এনে সাহায্য করবে। আর ঘরের ছাদে যদি কোন পোয়াল টোয়াল (খড়/ধান) যেগুলো গরুতে খায়, সেগুলো নিয়ে তাদের দিবে, তাতে সাহায্য হবে। এবং নিজের ছোট বোনকে আদর করবে। নিজের পোষা ঘোড়াকে ঘাস এনে দেবে আর পুকুর থেকে পানি এনে দেবে। আর নিজে ঘর ময়লা করবে না। আবর্জনা, ময়লা এগুলো ফেলবে ডাস্টবিনে। এগুলোই বইয়ে লেখা ছিল। তখন সেটা দেখে তার বিশ্বাস হল না। কিন্তু সে ভাবল, আচ্ছা, কেউ কি আবার বদলে দেয়নি তো? না, তা হতে পারে না। সবকিছু তো নির্ভুল না, তাহলে নিশ্চয়ই কেউ আসেনি। এটাই মেনে নেয়া দরকার। আর সোফার উপর একটা মোজা, মোজা তো গন্ধওয়ালা। আমার তো মোজা পরলে মোজা ময়লা হয়ে গন্ধ হয়ে যায়। নিশ্চয়ই আমার মোজা। এই মনে করে মেয়েটি সেটাকে গুছিয়ে সেটাকে পানিতে দিয়ে কিছু কাপড় দিয়ে সেটাকে ঘষে মেজে সাবান দিয়ে ডলে টলে ধুয়ে ফেলল। এবার সেটা পরিষ্কার করে রেখে দিল। আর সে ভাল কাজ করতে শিখল। 
একদিন একটা ব্যাপার দেখা গেল। সেই দুষ্টু ছেলে দুষ্টু মেয়েটাকে বলল, আচ্ছা, তোমাকে না স্কুল থেকে আমি শিখিয়ে দিয়েছিলাম যে, এরকম কাজ করবে। এরকম দুষ্টুমি করবে! এটা বলেছিলাম, তুমি এরকম করছ কেন। মেয়েটি বলল, "সে কি বলছ, দোস্ত?" তখন সে বলল যে, এই যে একটা তুমি দুষ্টু বই দিয়েছিলে না, সেইটা দেখে আমি এরকম শিখেছি। এবার তুমিও আস, ওটা শেখ। তাহলে আরো ভাল করে দুষ্টুমি শিখবে। তারপর সে ওই বইটা পড়ে সেও ভাল হয়ে গেল। তখন তারা হাত মিলিয়ে সবাইকে ঐ বইটি দেখাল সবাইকে ক্লাসের। তখন সবাই শিখে দুষ্টামি বাদ দিয়ে লেখাপড়ায় মন দিল এবং ভাল কাজে মনোযোগ দিল। এখন তারা মিলে অন্য ক্লাসে তার পাশের সেকশন হল গিয়ে মধু সেকশনের নাম। সেই মধুতে সবাই দুষ্টামি করে। এখন সেই ক্লাসে যদি এই বইটা পড়তে দেই, তখন তো খুব ভাল হবে। তখন সেই টিচারের কাছে দিয়ে বলল, ম্যাডাম! এই বইটা দেখলে আপনার ক্লাসের সব বাচ্চা ভাল হয়ে যাবে। আপনি এই বইটা মেলায় সবাইকে একজন একজন করে পড়তে দেবেন। তখন ওরা ভাল হয়ে যাবে। এখন আপনারা কাগজে সবার কাছে লিখে দেন, কালকে মেলা হবে ক্লাসে। সেই মেলায় এটা কাগজে লিখে দেবেন বাচ্চাদের মা-বাবার কাছে। তখন দেখবেন কি হয় এগুলো পড়ে। তখন সেই ক্লাসে সবাই ঐ রকমই হয়ে গেল। সবাই মিলে হাত মিলালো। হুররে বলে হাত মুঠ করে জাগিয়ে তুলে নিজেদেরকে ওয়েলকাম করল। এখন তাদের মধ্য থেকে কয়েকটা বাচ্চা ভাল মত পরীক্ষা দিয়ে ফার্স্ট-সেকেন্ড হয়েছে, তাদেরকে রং পেন্সিল বক্স দেয়া হবে। তখন সবাই স্কুলটা ভাল করল, পাশের স্কুলের ম্যাডামরা দেখল, এ কি! আমরা দুষ্টামির থেকে ওদের ছাড়াতে পারি না দুষ্টামি, আর ওরা এই হয়ে গেল এরকম? এখন ঐ বইটা এবার ফটোকপি করে এক হাজারটা বই বানিয়ে সবাই সেগুলো স্কুলের বাবুদের বিক্রি করল। এখন দোকানের উপরে একটা কাগজ টানিয়ে রাখল। আর দোকানে ঐ বইগুলো বিক্রি করল। আর ঐ কাগজে লিখে দিল যে, "স্কুলের বই।" লিখে এগুলো বিক্রি করল। যেই বাচ্চারা কিনেছে, পড়েছে, তারা অনেক বুদ্ধিমান হয়েছে; দুষ্টামি ছেড়ে লেখাপড়ায় মন দিয়েছে এবং সবাইকে সাহায্য করতে শুরু করেছে। এবার তারা যারা স্কুলে যায় সবাই ফূর্তি করে বড় হয়ে তারা লক্ষ্মী মেয়ের মত কাজ করে। এবার তারা সবাই মিলে ঐ দেশে যতগুলো ছেলেমেয়ে সবাইকে বই কিনে ভাল হয়ে গেল। এবার ওরা বসে যখনই মেলা দেয় ঐ বইটা পড়ে। এবারে ওরা গল্পের ঝুলি থেকে চলে গেল।