Tuesday, May 29, 2018

মজার ক্লাস

এক ছিল এক স্কুল। সে স্কুলে একদিন এক মজার শিক্ষিকা এলো। সে আবার বাচ্চাদের ৩০% পড়িয়ে ৬০% মজা দিত। আর ১০% তাদেরকে ইচ্ছামত কথা বলা ও খেলার সুযোগ দিত। এতে বাচ্চারা তার ভক্ত হয়ে যেত, আর পরীক্ষার আগে ৪০% পড়িয়ে ৬০% মজা দিত, আর ইচ্ছেমত কথা বলা ও খেলার সুযোগ টিফিন টাইমে উপভোগ করতে বলত। একদিন ক্লাসে সে পড়ানো শেষ করে বাচ্চাদের সাথে মজা করার পালা। আজকে একটু অন্যরকম হবে মজার জিনিসটা। শিক্ষিকাটি বলল, "বাচ্চারা! আজকে আমি তোমাদেরকে একটা ধাঁধা বলব। আমার নিজের বানানো ধাঁধা। বলতো, এমন কি জিনিস আছে, যা ধনী মানুষেরাও মজা দিয়ে খায় আবার গরীব মানুষদেরও পিপাসা মেটানো আর মজার খাবার খাওয়ার অসুবিধা মিটে যায়?" বাবুরা একেকজন একেক জিনিস বলতে থাকল। কারোটাই সঠিক হলো না। কারণ, সেদিন সবথেকে বুদ্ধিমান বাবুটি অনুপস্থিত ছিল। তবে তার বেস্ট ফ্রেন্ড তার কাছ থেকে বুদ্ধিমান হওয়ার চেষ্টা করেছিল। তার কাছে প্রত্যেকদিন বুদ্ধির ক্লাস করত। কিন্তু তাতে কি আর ১০০% বুদ্ধি পাওয়া যায়? ৩০%ই না হয় পাওয়া গেল। বুদ্ধিমান বাবুটির বেস্ট ফ্রেন্ড হাত জাগিয়ে বলল, "নারকেল হতে পারে?" শিক্ষিকা বললো, "কিছুটা হলেও পুরোটা হয়নি। কারণ, নারকেল তো শক্ত থাকে। শুধু পানিটাই খুব মজা দিয়ে খাওয়া যায়। বাকিটা তো সবার কাছে মজা নাও লাগতে পারে। আমার উত্তরের থেকে এটার দাম কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে।" স্কুলটির পাশের বিল্ডিংয়েই ছিল সবথেকে বুদ্ধিমান বাবুর বাড়ি। তাদের বারান্দা থেকে তার স্কুল দেখা যেত। বাবুটি তখন বারান্দায় বসে ছিল। সে বেখেয়াল হয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ সে দেখল, সবাই খুব চেঁচামেচি করছে ক্লাসে। সে তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে জোরে ডাক দিয়ে বলল, "তানিশা! শোন্ না। সকাল বেলা মাথাব্যথা করছিল, তাই আজ স্কুলে আসিনি। এত চিৎকার চেচামেচি করছিস কেন তোরা?" তানিশা বলল, "তোর মাথা ব্যথা ছিল? আমরা চেচামেচি করছি; কারণ মিস আমাদেরকে একটি ধাঁধা দিয়েছে। আমার উত্তরটা না সঠিক হয়নি।" বুদ্ধিমান বাবুটি বলল, "হ্যাঁ, হ্যাঁ! কি বললি? ধাঁধা? I Love ধাঁধা! বল্ না রে, কি ধাঁধা? আমিও তোদের সাথে একটু মজা করি। তুই তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, হিংসা করবি না যে, আমরা পড়ার পর মজা করছি, আর তুই না পড়েই মজা করছিস।" তানিশা বলল, "শোন, ধাঁধাটা হচ্ছে, এমন কি জিনিস আছে, যা ধনী মানুষেরাও মজা দিয়ে খায় আবার গরীব মানুষদেরও পিপাসা মেটানো আর মজার খাবার খাওয়ার অসুবিধা মিটে যায়? এই ধাঁধাটির উত্তর আমি নারকেল বলেছিলাম, কিন্তু হয়নি; কারণ, দাম নাকি খুব বেশি, আর নারকেল নাকি খুব শক্ত। সবার পছন্দ নাও হতে পারে। তুই নিশ্চয়ই পারবি। বল্ না রে।" বুদ্ধিমান বাবুটি বলল, "এটাও এখনো পারলি না? এটা তো পানিতাল!" বুদ্ধিমান বাবুটি খুব জোরে চিৎকার দিয়ে ডাকল, "ম্যাম! আমি নিশা। উত্তরটা পানিতাল। ঠিক হলে পরের ক্লাসে জানিয়ে দিবেন। এখন আমার মা ডাকছে, বাই!" এই বলে সে দৌড়ে মা'র কাছে চলে গেল। শিক্ষিকা তানিশাকে বলল, "এ কি তানিশা? নিশাকে তো জ্বলজ্যান্ত দেখছি। ও আজকে আসল না কেন?" তানিশা বলল, "ম্যাম, ওর নাকি মাথাব্যথা। উত্তরটা কি ঠিক হয়েছে?" ম্যাম বলল, "১০০% ঠিক। ওকে আমি কালকে একটা লজেন্স দেব। মাথাব্যথা দিয়ে ধাঁধার উত্তর এত সহজেই দিয়ে দিল? ঠিক আছে। আমি যাচ্ছি। বাই, বাই, স্টুডেন্ট! তোমরা যা ইচ্ছা তাই কর। আমি একটু বেলুন নিয়ে আসছি। বেলুন নিয়ে এসে আজকে আমরা সবাই মিলে মজা করব। ফাটাবো, আজকে প্রত্যেকের জন্য দুটা দুটা করে বেলুন এনেছি। আসলে তিনটা করে দেব। কিন্তু দুটো ক্লাসে মজা করবে, আর একটা বাড়িতে নিয়ে যাবে। আর যাদের ভাই-বোন আছে, আর বেশি দরদী, তারা যাদের কোন ভাই-বোন নেই আর বাসায় খেলতেও চায় না, তাদের থেকে শেয়ার করতে পারবে। চল, আমরা মজা করি।" তারা অনেক মজা করল। পাশে যে একটা বিল্ডিং আছে, আর অসংখ্য বুড়ো-বুড়ি আছে, তা তারা মনেই রাখল না। এমন সময় প্রিন্সিপাল মিস ক্লাস ভিজিট করার জন্য আসলেন। ক্লাসে এসে তো তিনি রেগে গেলেন। কারণ, একজন দরজার দিকে একটা বেলুন ছুঁড়ে মারছিল, আর সেই মুহুর্তে প্রিন্সিপাল মিস এসে প্রিন্সিপালের মাথায় বেলুনটা লাগল। প্রিন্সিপাল তো রেগে গড়গড় করা শুরু করল। বলল, "সেলিনা! এইসব কি? এসবের জন্য কি তোমাকে নিয়োগ দিয়েছি? এটা কি ক্লাস পার্টি নাকি? কি হচ্ছে এইসব? আরেকদিন ক্লাস ভিজিট করতে এসেছিলাম, তখন দেখেছি সবাই মিলে দাবা খেলছে। যাদের দাবা পছন্দ নয়, লুডু খেলছে। আর যাদের কোনটাই পছন্দ নয়, তারা প্লেন উড়াচ্ছে। সেদিনও একটা প্লেন এসে আমার মাথায় পড়েছিল, আর এখন আবার একটা বেলুন এসে পড়ল। তোমায় আমি আজকেই বরখাস্ত করব।" শিক্ষিকা বলল, "আরে আর আপা! কি সব বলছেন? কিসের সাথে কি, পান্তা ভাতে ঘি! আজকে সব স্টুডেন্টরা আমার দেয়া ছোট্ট টেস্টে সক্কলে এমনকি বোকা স্টুডেন্টরাও ১০০ তে ১০০ পেয়েছে, আর যারা একদম ভাল করেছে, ১০০-এর ও ভাল, তাদেরকে আমি আর কিছু করতে পারিনি, ১০১ দিতে বাধ্য হলাম।" তখন আবার বুদ্ধিমান বাবুটি এসব শুনছিল। তার আবার তিন সেকেন্ডে পাঁচ পৃষ্ঠা লিখে ফেলার অভ্যাস ছিল। সে তাড়াতাড়ি একই প্রশ্ন বারবার অনেক ভালোমত সাজিয়ে ঝটপট করে এক মিনিটের মধ্যে ৬০টি কাগজ বানিয়ে ফেলল। সাথে ১০০ তে ১০০ নম্বরও লিখে দিল। আর একজনেরটা খুব ভালো দিল। আরো দু'জন বন্ধুকেও খুব ভালো করে লিখে দিল। আর তাদের ১০০ তে ১০০ না দিয়ে ১০০ তে ১০১ দিয়ে দিল। এরপর তাড়াতাড়ি পৃষ্ঠাগুলো ভাঁজ করে তানিশার দিকে নিক্ষেপ করল। দু'জনই আবার ভালো thrower ও catcher ছিল। নিশা আস্তে আস্তে তানিশাকে বলল, "শোন! আমি তো জানি যে, তোরা খুব তাড়াতাড়ি অনেক কিছু মুখস্থ করে ফেলতে পারিস। এমনকি ১০ সেকেন্ডের মধ্যেও করে পারিস আশপাশে ঢাকঢোলের শব্দ থাকলেও। তাড়াতাড়ি এগুলো সবাইকে একজন একজন করে পাস করে দে। তাড়াতাড়ি কর। খুউব তাড়াতাড়ি। এই নে তাড়াতাড়ি।" তানিশা বলল, "ধন্যবাদ, নিশা। অনেক ধন্যবাদ।" এই বলে তানিশা খুব তাড়াতাড়ি সবাইকে পাস করে দিল, আর কিছু করতে হবে না, শুধু মুখস্থ কর। আর প্রিন্সিপাল মিস খাতা দেখতে চাইলে এই কাগজটা উপরে জাগিয়ে তুলবে। আর আমি খুব তাড়াতাড়ি চোখ টিপ মারতে পারি। আমি মিসকে চোখ টিপ মারব। তুই এটা তাড়াতাড়ি তোর সামনের জনকে পাস করে দে, আর তাকেও বল সামনের জনকে পাস করে দিতে। এমন করতে করতে চলতে থাক, আর একদম সামনের বেঞ্চে চলে গেলে খুব জলদি করে পাশের বেঞ্চে পাস করে দিবি। এরকম করতে করতে এক মিনিটের মধ্যে যেন খুব তাড়াতড়ি সব ঠিকমত হয়। আর এই এক মিনিট কি করতে হবে, তা আমার জানাই আছে।" এই বলে তানিশা হাত তুলল। তানিশা প্রিন্সিপাল মিসকে বলল, "ম্যাম! আপনার তো সোনালী রং খুব পছন্দ। ঐ দেখুন, সোনালী গ্লিটারস সহ এই বেলুনটা আপনার জন্য। ঐ হার্ড বেলুনগুলোও আপনার জন্য। দেখুন, আমরা তো আপনার স্কুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যই ক্লাসরুমটাকে কততো সুন্দর করে সাজিয়েছি! আরো সাজাবো ভেবে বেলুন নিয়ে এসেছি। বেলুনগুলো দিয়ে প্রথমে না হয় বাচ্চারা একটু খেলতেই পারে। একটু পর এসে আপনি দেখবেন, আপনার ক্লাসটা একদম রাজপ্রাসাদ হয়ে গেছে। আপনার স্কুলের নাম হোক, এটা কি আপনি চান না? তাহলে এই বেলুনটা নিয়ে গিয়ে বাইরে জাগিয়ে তুলে বলুন, আমার স্কুলের মত সুন্দর স্কুল আর হয় না, দেখুন বাচ্চাগুলোও কি ভালো, নিজেদের বেলুনও আমার জন্য উৎসর্গ করছে! এই কথা বলুন আপনি, আর দেখুন আপনার স্কুলের খুব নামও হতে পারে। এ কাজটা আপনি করে দেখুন না! আপনার কি মনে হয়, এটা একটা ফালতু আইডিয়া? তাই যদি মনে হয়, তাহলে আপনার স্কুলের নাম তো জীবনেও হবে না। আপনি এক্ষুণি ওদিকে গিয়ে কাজটা সেরে ফেলুন।" এই বলে তানিশা চুপ করে বসে পড়ল। প্রিন্সিপাল বলল, "ওহ! Brilliant Student! তুমি খুব বুদ্ধিমতী। শোন, তুমি এখন চুপটি করে বসে থাক, আমি এক্ষুণি এটা জাগিয়ে তুলে কাজটা সেরে আসছি।" এই বলে প্রিন্সিপাল মিস চলে গেল গ্লিটারের বেলুনটা নিয়ে। তারপর তানিশা দৌড়ে গিয়ে মিসের কাছে গেল। "ম্যাম! বুদ্ধিটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন! আর চলবে না। প্রিন্সিপাল মিস নিশ্চয়ই অনেক সময় ধরে এ কাজ করবেন। তিনি চান, তার স্কুলের নাম হোক। আপনি এই ফাঁকে আপনার signature গুলো করে ফেলুন। তবে আপনার সিগনেচার যা সহজ, আপনি একজনকে করে দিন, আমরা ঝটপট করে কপি করে ফেলি। শুধু আরিয়ান আর সামিয়াকে রিয়ালটা দিতে হবে। তারা আবার কপি করায় খুব একটা পারদর্শী নয়।" মিস বলল, "আরে পাগল নাকি? দাও, তাড়াতাড়ি করে ফেলি।" Signature করা শেষ হতে না হতেই প্রিন্সিপাল মিস এসে হাজির। বলল, "তা তো আমি করেছি। এখন দেখি স্কুলের নাম হয় কিনা। তোমরা যে বলছ, তোমাদের টেস্ট হয়েছে, তার প্রমাণ কি?" সবাই তাদের শিট জাগিয়ে তুলল। কারোটাই ৯৯.৯৯ ই পেল না। সবাই ১০০। কেউ কেউ ১০১। প্রিন্সিপাল বলল, "বাহ! কিন্তু ১০১ যে কি করে তোমরা পেয়েছ, তা তো দেখতে হবে। আর নকল করেছ নাকি, তা তো দেখতেই হবে।" সে বেশির ভাগ স্টুডেন্টেরই পড়া নিল। সবাই খুব জলদি উত্তর দিয়ে দিল। এরপর প্রিন্সিপাল মিস চলে গেল। এরপর মিস 'নিশা' বলে জোরে ডাক দিল জানালার কাছে। "নিশা! এদিক এসো। তুমি আমাকে বাঁচালে। তোমার এত বুদ্ধি আমি আগে ভাবতে পারিনি। তবে এখন বুদ্ধি নয়, গুণও লেগেছে। আর শুধু তোমার বুদ্ধি আর গুণই নয়, তোমাদের সবার গুণ। আর তানিশার বুদ্ধি। সবাই খুব ভালো কাজ করেছ। নিশা, তোমাকে আগামীকাল আমি পাঁচটা লজেন্স এনে দেব। আর তোমার এক মাসের বেতন আমিই দিয়ে দেব। তুমি শুধু Fees Book টা আমার কাছে দিয়ে দিও। আর তোমাদের সবাইকে একটা করে ছোট চকলেট দেব। কিছু মনে করো না, যে নিশা absent থেকেই এত কিছু করে ফেলল। তবে শুধু নিশা থাকলে কিন্তু কিছুতেই আমায় উদ্ধার করতে পারত না। আর নিশা যদি present থাকত, তাহলেও তো হতো না। ঘটনাটা কি সুন্দর একের পর এক সিরিয়ালি ঘটে গেল!" এইভাবেই তারা বুদ্ধির জোরে মিসকে বাঁচিয়ে দিল।

পচা মেয়ে

এক ছিল এক মেয়ে। সে খুবই দুষ্টু ও পচা ছিল। তার দাদু তাকে বলেছিল, 'বিসমিল্লাহ' না বলে খেলে নাকি খাবারটা শয়তান খেয়ে ফেলে। সে (মেয়েটির দাদু) আবার বাড়িয়েও কিছু কথা বলত। সে বলেছিল, 'বিসমিল্লাহ' প্রথমে না বলে পরে যদি কেউ বলে, তাহলে শয়তান আবার বমি করে তা প্লেটের মধ্যে ফেলে দেয়। আসল কথাটা হলো, মাঝখানেও বলা যায়, তবে প্রথমেই বলা উচিত। আর কেউ যদি নাই বলে, তাহলে তো পুরো খাবারটাই শয়তান চেটেপুটে খেয়ে নেয়। বাবুটি আবার খুব জেদী আর পচা ছিল। একদিন তার মা একটা সুন্দর জেলির কেক তৈরি করেছিল। দেখেই সে দৌড়ে এসে সবার আগে গবগব করে অর্ধেকটা খেয়ে নিল। তখন তার বাবা আবার অফিস থেকে কাচা আম নিয়ে আসল। বাবুটি কিন্তু জেলির কেক খাওয়ার সময় 'বিসমিল্লাহ' বলেছিল। আর বলেছিল, এত সুস্বাদু জেলি কেক আমি শয়তানকে দেব নাকি? বাবা যেই এসে বলল, "মামুনি, দেখ তোমার জন্য কাঁচা আম নিয়ে এসেছি। টক হলেও খুব ভালো।" বাবুটি আবার টক খুব ঘৃণা করত। এক ফোঁটা টক কিছু দিলেই সে 'ওয়াক' বলে ফেলে দিত। দাদু আবার এমন ভাবে বলল, যাতে সে না খাওয়ার কোন চান্সই না পায়। আর যাতে না খাওয়ার কথা বললে সে খারাপ প্রমাণিত হয়। দাদু বলল, "আরে, আরে! টক আম এনেছ? আমার দাদুমনিটা তো অনেক সুন্দর করে টক আমটা খেয়ে নেবে! কোন কথা বলবে না। লক্ষ্মী হয়ে গেছে না? আর যদি না খায়, তাহলে তো আমার সোনা দাদুটা আবার পচা হয়ে যাবে। খুব পচা হয়ে যাবে। আর সেটা কি আর আমার দাদুমনি কখনো করবে নাকি? আমার দাদুমনিটা তো খুব লক্ষ্মী!" মেয়েটা বেকায়দায় পড়ে গেল। সে আবার বেশ পাকাও ছিল। তাই সে বলল, "ঠিক আছে, আমি না হয় খেয়েই নেব।" এই বলে সে নাক ভেঁচকিয়ে বিরক্তির মত শব্দ করল। এরপর আমটা খাওয়ার সময় তার 'বিসমিল্লাহ' এর কথা একদম ভালোমত মনে থাকলেও সে মনে মনে বলল, "ইস! টক আম? একদম বাজে লাগে আমার খেতে। এই টক আম আমি খেতে যাব কোন্‌ দু:খে শয়তান থাকতে? আমি বিসমিল্লাহ বলবই না। যাতে আমার আর বেস্বাদ খাবার না খেতে হয়। শয়তানই আমার কাজটা করে দেবে। মাও আমায় বকবে না, আমার খাওয়াও লাগবে না। আর দাদুও আমাকে পচা বলে প্রমাণিত করতে পারবে না।" তার বিসমিল্লাহর কথা একদম মনে থাকলেও সে 'বিসমিল্লাহ' বলল না। কাজটা কি সে ঠিক করল? যতই বুদ্ধি কাজে লাগাক না কেন, বিসমিল্লাহর কথা মনে না থাকলেও একটা কথা, তার জলজ্ব্যান্ত বিসমিল্লাহর কথা মনে থাকলেও সে একটুও বলল না; সে আরো ভাবল, শয়তানই বুঝি তারটা খেয়ে নেবে।" আসলে তো শয়তান আর তার বদলে আমটা পুরো খেয়ে নেবে না। বরং ভাগ বসাবে, আর মেয়েটারও খাওয়া থেকে অব্যাহতি মিলবে না, বরং তাকে যে প্রকারান্তরে শয়তানের লালাই খেতে হলো! এভাবে অতি চালাকি করতে গিয়ে সে লাভবান হবার পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্তই হলো।

Friday, May 25, 2018

মেলার ছড়া

সেই যে বসেছে মেলা
আজকে দুপুর বেলা-
দুই বোনের এক নীলা
আরেকজন শীলা।
চল্‌ না গিয়ে দেখে আসি মেলা,
নইলে তুই মিস করবি খেলা।
দাঁড়াও ভাই আসছি আমি
শেষ করে নেই কলা।

Tuesday, May 22, 2018

গরীবদের স্কুল

এক ছিল এক ধনী লোক। সে সবাইকে সমানভাবে দেখত। নিজে যা খেত, নিজের পরিবার থেকে শুরু করে ভিক্ষুককেও তাই খাওয়াতো। একদিন সে দেখল, একটি গরীব ছেলে তার মাকে বলছে, "মা! আমিও স্কুলে যেতে চাই।"
আর মা কষ্ট পাচ্ছে। পরদিন সে দেখল, একটি গরীব মেয়ে ধনী বাচ্চাদের স্কুলে যেতে দেখে কান্না করছে। লোকটি ভাবল, 'ওই  বাচ্চারাও তো বাচ্চা। ওদের জন্যও তো কিছু করা উচিত। তাদেরও শিক্ষার অধিকার আছে। আমার চোখে ২জন ধরা পরলেও এমন বাচ্চা আছে অনেক। কেউ ওদের কথা না ভাবলেও আমি ভাবব। তাই প্রথমে ওই ২জন বাচ্চাকে ডাকতে হবে।' এই ভেবে সে ওই ২জন বাচ্চাদের কাছে গিয়ে বলল, "তোরা কি লেখাপড়া করতে চাস? স্কুলে যেতে চাস? তবে ওই মাঠে আমার ছোট ঘর যাতে কেউ থাকে না সেখানে তোদের বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আয়।" গরীব বাচ্চারা এক কথায় রাজি হয়ে গেল। ওই মাঠে লোকটির যে ছোট ঘর ছিল সেটি স্কুল হিসেবে ধরা হল। সব গরীব ছেলেমেয়েরা এসে হাজির হলো ঐ ঘরে। তারপর লোকটি বলল, "আমি এখন জরুরী কিছু কথা বলল। আর এগুলো শোনার পর তোমরা এখানে পড়াশুনা করতে পারবে। তবে আমার বলা নিয়মগুলো মেনে চলবে। ভেবো না যে, খুব কঠিন। তবে শুরু করছি। প্রথম তিন মাস আমি তোমাদের ফ্রি পড়াবো। এরপর মাসের বেতন হবে ৩০ টাকা। আর বেতন দেয়ার উপায়ও বলে দিচ্ছি। তিন মাস তোমাদের এমনভাবে পড়াব, যাতে নিজেরা তো বুঝবেই, অন্যদেরকেও ভালভাবে বুঝাতে পারবে। এরপর তোমরা তোমাদের মা-বাবাকে শেখাবে, আর তাদের বলবে অন্য কোন জায়গায় টিচিং করে টাকা আয় করে আনতে।" একজন বাচ্চা হাত তুলে বলল, "টিচিং মানে কি? এরকম কথা বলছেন কেন? পাঠশালায় তো একদিনও পড়িনি। ইংরেজি শব্দ জানব কিভাবে?" লোকটি বলল, "ঠিক আছে, ঠিক আছে। টিচিং করা মানে শেখানো। তোমাদের মা-বাবা টিচিং করে যে টাকা পাবে, সেই টাকা থেকেই প্রতি মাসে ৩০ টাকা আমাকে দেবে। আর তোমরা তো লেখাপড়া করে টায়ার্ড হয়ে যাবে। সরি, টায়ার্ড নয়, ক্লান্ত। সেজন্য খাবারও দেয়া হবে। তোমাদের নিশ্চয়ই খাবারের অভাব। তবে একটু কষ্ট করে তোমাদের মা-বাবাদেরকে তাদের নিজেদের খাবার যোগাড় করতে হবে। তবে তোমাদের খাবার যোগাড় করতে হবে না। আমি তোমাদের খাবার দেব। খাবারেরও আবার মান আছে। এখানে এখন মানুষ হয়েছে ৩০ জন। ৫ টা ডিম আনা হবে একদিনে। তিনটা আম আনা হবে। আর ৩০টা স্ট্রবেরী আনা হবে। একেক দিন একেক জনের ভাগে একেক খাবার পড়বে। কেউ ঝগড়াঝাটি করবে না, আর এমনও করবে না আমি ভাল খাবার পেয়েছি, তুই পাসনি! আর কারো যদি পাঠশালায় এসে ক্লান্তি ক্লান্তি বা অস্বস্তির ভাব লাগে, তাহলে তাকে ভাল খাবার দেয়া হবে। আর তোমাদের মধ্যে যাদের যাদের খারাপ স্বভাব আছে, তাদের স্বভাব এমনিতেই ভাল হয়ে যাবে। কারণ, প্রথম এক মাস আমি সবার থেকে বেশি স্পেশাল করে তোমাদের পড়াব। সবাই নিয়মগুলো বুঝেছ? কাল থেকে তোমাদের আমি পড়াব। আর পানির ফিল্টারও থাকবে। আর একটি গ্লাস থাকবে। প্রত্যেকে একটু একটু করে ধুয়ে পানি খেয়ে তারপর বাড়ি যাবে। কেউ ডিম পেলে অর্ধেক ডিম পাবে। আমগুলোকে অনেক ভাগ করা হবে, যাতে ১০ জন পায়। আর স্ট্রবেরী পেলে তিনটা তিনটা করে পাবে। সবাই নিয়মগুলো বুঝেছ তো? দুষ্টুমি করলে কিন্তু আর পড়তে দেব না। দেখবে, আস্তে আস্তে এখানে পড়তে পড়তে তোমরা অনেক বড় হয়ে যাবে এবং তোমাদের জীবনও ধনীদের জীবনের মত হয়ে উঠতে পারে। আমি সবাইকে কিন্তু একইভাবে দেখব। কাউকে বেশি পছন্দ, কাউকে কম পছন্দ- এরকম করবো না। কিংবা কারো দিকে একটু বেশি নজর দেব না। কোন ভিক্ষুক এসে যদি একটু খাবার চায়, তাহলে নিজেদের টিফিন থেকে ছয় ভাগের এক ভাগ তাকে দিয়ে দিতে হবে কিন্তু। নইলে কিন্তু হবে না। আর যদি কোন ধনী ব্যক্তি এসে বলে, আজকে আমার ফ্রিজের খাবার শেষ হয়ে গেছে, কিনতে যেতে পারব না, তাহলে তাকেও কিছু দিতে হবে, তবে তাকে বলে দিতে হবে, বেশি অলসতা কখনো করবেন না। অলসতা করলে কোন না কোন দিন খারাপ ফলই হবে। এবার সবাই বাড়ি যাও, আর খুশীর খবরটা মা-বাবাকে জানিয়ে দাও যে, তোমরাও স্কুলে পড়তে পারবে। আর যদি তোমাদের পোশাকের দরকার হয়, তাহলে মাসে ৩০ টাকার সাথে ৫ টাকা যোগ করে ৩৫ টাকা দিতে হবে। একটা ড্রেস দিয়ে দেব। আর তোমার মা-বাবাকে পড়াতে ভুলো না। এরপর নতুন স্কুলটিতে ছাত্র-ছাত্রী বাড়তে থাকল। এরপর গরীব বাচ্চারাও একদিন খুব জ্ঞানী হয়ে উঠল। এভাবেই লোকটি অনেক বছর স্কুল চালিয়ে যাচ্ছিল। এরপর দেখা গেল, তার দেখাদেখি অন্য কিছু মানুষেরাও এরকম স্কুল খুলছে। এরপর সে স্কুলগুলো দেখেও তার কাজ বন্ধ করল না। সেও তার কাজ চালিয়ে গেল, আর অন্য স্কুলগুলোও তাদের কাজ চালিয়ে গেল। আর এখন থেকে গরীব বাচ্চাদেরও পড়াশুনার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো।

Tuesday, May 15, 2018

সবচেয়ে ধনী ও ভালো রাজা

এক ছিল এক রাজা। সে ছিল খুবই ধনী এবং ভালো। তোমরা নিশ্চয়ই ভাবছ যে, ধনী মানে অনেক হীরা-জহরত এবং সোনাদানা আছে। কিন্তু সে কতটা ধনী, গল্পটা পুরোপুরি পড়লেই বুঝতে পারবে। একদিন এক ভিক্ষুক রাজার কাছে গিয়ে বলল, "মহারাজ! আমি এখানে নতুন এসেছি। রাজ্য কেমন, রাজা কেমন, কিচ্ছু জানি না। তবে আমাকে কি একটা সাহায্য করা যাবে? আমার এখন কিচ্ছু নেই, আশ্রয়, খাবার, পানি কিচ্ছু না। আপনি কি সাহায্য করবেন?" রাজা বলল, "অবশ্যই! আমি কেমন রাজা, এক্ষুণি বুঝতে পারবে। প্রহরী! রাজ্যের পশ্চিম দিকের ঐ ছোট্ট ঘরটাতে এই ভিক্ষুককে থাকতে দাও। এক মাসের খাবার ঐ ছোট্ট ফ্রিজটাতে ভরে ফ্রিজটা তাকে দিয়ে দাও। ছ্টে একটা ওভেনও দিয়ে দাও। আর পড়ার জন্য মজার কোন বইও দিয়ে দাও। তাকে ভালো ভালো পোশাকও দাও। আর তার সাথে কয়েকদিনের মধ্যে যদি অন্য কোন ভিখারী আসে, তাহলে তাকেও ঐ ঘরেই থাকতে দেবে। এবং তাকে যে পরিমাণ জিনিস দিয়েছ, তার দ্বিগুণ জিনিস দিয়ে দেবে। তাহলে সে আরো একজন সঙ্গী পাবে। যাও, যা যা বললাম, তা তা কর।" তোমরা ভাবছ, শুধু ভিখারীর প্রতিই রাজা দয়া দেখিয়েছেন। প্রহরী যে রাজার এত কথা শুনবে, তার জন্য প্রহরীকে কিছু দেবে না, এটা ভাবছ? একদমই না। রাজা বলল, "আর প্রহরী! তুমি কাজগুলো করে আসার পর তুমি আমার ফ্রিজ থেকে তিনটা রসগোল্লা খেতে পার।" প্রহরীটা আবার মিষ্টি জিনিস খুব পছন্দ করত। সে তো শুনে ৫ মিনিটের মধ্যেই সব কাজ শেষ করে ভিখেরীকে ঐ বাড়িতে বসিয়ে দিয়ে চলে আসল। তারপর বলল, "আমার রসগোল্লাটা কি এখন নিতে পারি?" মহারাজ বলল, "এত তাড়াতাড়ি করলে যে! সব কাজ ঠিকমত করেছ তো? ও আচ্ছা, তাকে কি তুমি পানি দিয়েছ?" তখন প্রহরী "আ---!" বলল। রাজা বলল, "মিষ্টির লোভে কাজ ঠিকমত করছই না। যাও, তিন বোতল পানি দিয়ে এসো।" সে এক মিনিটের মধ্যে দৌড়ে এক চোটেই ছয় লিটারের তিনটা বড় বড় বোতল কাঁধে করে চলে গেল। আর ঐ ভিখারীকে দিয়ে এক দৌড়ে চলে আসল। এরপর বলল, "মহারাজ, আমার রসগোল্লা!" মহারাজ বলল, "মিষ্টি খাওয়ার জন্য এত তাড়াহুড়োর কি আছে? তাকে তুমি কয়েকটা ছোট ছোট পাখি দাও। আর এমন পাখি দিতে হবে, যেগুলো কথা বলতে পারে আর সবকিছু বোঝে। আর পাখিগুলোকে ধরে নিয়ে যাওয়ার মত করবে না। এমন ভাব দেখাতে হবে যে, আরেকটা নতুন বন্ধুর কাছে নিয়ে যাচ্ছ, তার কাছে থাকতে পারবে। যাও, ওরকম পাখি দিয়ে আস। যাতে ভিখারীটা্ একা বোধ না করে। প্রহরী এক দৌড়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি ওরকম পাখি খুঁজে নিয়ে ভিখারীকে দিয়ে তাড়াতাড়ি এক দৌড়ে আবার ফিরে এল। রাজাকে বলল, "মহারাজ! এবার তো আমায় রসগোল্লাগুলো দিন!" রাজা বলল, "তার বাড়ির সামনে এক ঘন্টার মধ্যে একটা টিউবওয়েল বসিয়ে দাও।" তোমরা হয়তো ভাবছ, রাজা ওয়াদা ভঙ্গ করল। কিন্তু এটা প্রহরীর ভালোর জন্যই করল। কারণ, প্রহরী তাড়াতাড়ি কাজ করতেই পারত না। একদমই করত না। এক মিনিটের কাজ এক ঘন্টায়ই করত। আর এখন তার অভ্যাসও হচ্ছে। আর তাড়াতাড়ি যদি সে সব কাজ করে, তাহলে মাসের শেষে তার টাকাটাও সে অনেক বেশি পাবে। তাই রাজা এমন করছে। অবশেষে সব কাজ করার পর রাজা খুশি হয়ে প্রহরীকে চারটা রসগোল্লা দিয়ে দিল। প্রহরী খুব খুশী হলো। তারপরে চারটা রসগোল্লা একবারেই মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। আর একবারেই তা শেষ করে ফেলল। এরপর রাজা একদিন ভিক্ষুকের সাথে দেখা করতে গেল। সে বলল, "কেমন আছ? তোমাকে তো এক মাসের খাবার দেয়া হয়েছে। তো বিশ দিন তো চলেই গেল। দেখি তো, তুমি কতটুকু খাবার শেষ করেছ?" ভিক্ষুক রাজাকে ছোট ফ্রিজটা হাতে করে এনে দেখালো। রাজা বলল, "এ কি, তুমি তো অর্ধেকও শেষ করনি। এত কম খাও কেন?" ভিক্ষুকটি বলল, "আমার অভ্যাস নেই। তাও আমি অভ্যাসের অনেক বেশিই খেয়েছি।" রাজা তো খুব অবাক হয়ে গেল। একেই বলে অভ্যাসের বেশি? আর রাজাটি ছিল এই রকমই ধনী এবং এইরকমই ভালো। তবে এটা কাল্পনিক।

Monday, May 7, 2018

স্বাস্থ্য-রহস্য

এক ছিল এক লোক। সে খুবই স্বাস্থ্যবান ছিল। একদিন সে তার বন্ধুদের সাথে একটা মাঠে দেখা করতে গিয়েছিল। তার বন্ধুদের মধ্যে একজন তাকে জিজ্ঞেস করল, "এই, তুই সবসময় এত স্বাস্থ্যবান থাকিস কি করে? কয়দিন আগে আমার মেয়েটার জ্বর হয়েছে। দু' সপ্তাহ আগে তো আমারও জ্বর জ্বর ভাব এসেছিল। তুই কি করে এত স্বাস্থ্যবান থাকিস?" আরেকজন বলল, "এই দেখ, আমি তো আমার সাথে রুমালই নিয়ে এসেছি। কারণ, এখন আমার ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব আছে। কিন্তু তুই কি করে সবসময় স্বাস্থ্যবান থাকিস? আজকে সেটা নিয়েই গল্প বল।" আরেকজন বুদ্ধিমান বন্ধু বলল, "তোর ডেইলি রুটিনটাই না হয় বল। তারপর তো বুঝেই যাব।" লোকটি বলল, "ঠিক আছে, শোন। আমি সকাল ৫ টায় ঘুম থেকে উঠি। ফজরের নামাজ পড়ে বাইরে হাঁটতে যাই। হেঁটে এসে আরো এক্সারসাইজ করি। ৬টা বাজলে দিনটার জন্য ভালো করে রেডি হই। আর খাবার জোগাড় করি। ৭টা বাজলে নাস্তা করি।" তখন আরেক বন্ধু বলল, "কি নাস্তা কর? সেটাই তো আসল।" লোকটি বলল, "আমি একটা ডিম পোস, একটা রুটি আর এক বোতল মাঠা নাস্তায় খাই। তারপর খাওয়া শেষ থেকে ১০টা পর্যন্ত বই পড়ি। আর ১০টা থেকে ১১টা আবার কিছুক্ষণ ব্যায়াম করি। তারপর হালকা পাতলা কিছু নাস্তা খেয়ে নেই; যেমন- বিস্কুট। এরপর গোসল করতে যাই। আর গোসল থেকে বের হয়ে দুপুরের খাবার যোগাড় করি। আর সাড়ে বারোটায় দুপুরের খাবার খাই। তোমরা নিশ্চয়ই ১টা ২টার সময় দুপুরের খাবার খাও। কিন্তু আগে আগে খাবার খাওয়াই ভালো। এরপর থেকে বিকাল পর্যন্ত খেলাধুলার কাজ করি। তারপর আবার বিকালের নাস্তা খাই। আর সন্ধ্যায় এক কাপ দুধ খাই। আবার কিছুক্ষণ বই পড়ি। আর রাতে খাবারের যোগাড় দেই। আর রাত ৭টা বাজলেই রাতের খাবার খেয়ে ফেলি। তোমরা নিশ্চয়ই এটা শুনে অবাক হচ্ছ, কিন্তু এটাই ঠিক। এরপর আমি দাঁত ব্রাশ করে নাইট ড্রেস পরে ঘুমাতে যাই। এটাই হলো আমার ডেইলি রুটিন।" তার অন্যান্য বন্ধুরা বলল, "আমরা তো এর পুরোটাই উল্টো করি। এইভাবে তুমি সুস্থ থাক? এখন থেকে আমরাও সেটাই ফলো করব।" এই হলো ঐ লোকটির ডেইলি রুটিন আর এই হলো গল্পের শেষ।

Saturday, May 5, 2018

চালাক কাজের লোক

এক ছিল এক অফিসার। সে অনেক ইনকাম করত। তার বাসায় ছিল এক কাজের লোক। তার (অফিসারের) একটি মেয়েও ছিল। অফিসার একদিন মেয়ের জন্য কাজের লোককে বলল, "তুমি ৬০০ টাকা দিয়ে আমার মেয়ের জন্য গলার গয়না নিয়ে আসবে। ৬০০ টাকায় কেমন হয়, তা তো জানই। সিটি গোল্ড হয়।" কাজের লোকটি আবার ছিল খুব চালাক চতুর। সে বলল, "বাঁচলে ফেরত আনব না? সে কথাটা বললেন না যে!" অফিসারটি বলল, "অত বলার দরকার নেই। তুমি তো জানই।" চালাক কাজের লোক "ঠিক আছে" বলে বেরিয়ে পড়ল। সেই কাজের লোকটি ৬০০ টাকা দিয়ে গলার চেইন কিনতে গেল। দেখল, দাম ৫৮০ টাকা। সে খুশীমনে ৫৮০ টাকা দিয়েই কিনে নিল, আর বাঁচল ২০ টাকা। সে আবার টাকা মারতে পছন্দ করতো। যাতে কেউ সন্দেহ না করে, সেজন্য সে ১৫ টাকা নিজের কাছে রেখে ৫ টাকা ফেরত দিল। আবার কেউ যাতে একদমই সন্দেহ না করে, সেজন্য ক্লান্তি ক্লান্তি ভাব নিয়ে বলল, "উফ! আপনার মেয়েকে যে কত ভালবাসি! তার চেইনের জন্য আমি অনেক দরদাম করেছি। দরদাম করতে করতে হয়রান হয়ে গিয়েছি। শেষে কথার প্যাঁচে দোকানদারকে ৫৯৫ টাকা দিয়ে এটা দিতে বাধ্য করলাম। তারপর অফিসারটি তো দারুন খুশী। বলল, "তোমার মাসের বেতনের সাথে আরো কিছু টাকা যোগ করে দিলাম। আহারে, আমার মেয়ের জন্য কতই না দরদাম করেছ!" আর কাজের লোকটি তো মনে মনে হাসতে থাকল। একদিন অফিসারের মেয়ে বায়না ধরল, লাচ্ছি খাবে। তার বাবা তো লাচ্ছি এনে দিতে চাচ্ছে না। যদি কোন বিষাক্ত কিছু থাকে! কারণ, কয়েকদিন আগে সে ইউটিউবে বাইরের জিনিসের বিষের খবর দেখেছে। এমনিতেই এসবের প্রতি এখন তার ভয়। কিন্তু তার মেয়ে আবার ঘরে বানানো লাচ্ছি কিছুতেই খাবে না। বাবা কত করে বলল, "ইউটিউব থেকে একটি রেসিপি বের করে তা দিয়ে বানিয়ে দেই।" কিন্তু কে শোনে কার কথা? বাবুটি একদমই ছাড়বে না। দোকানের লাচ্ছি কিনে দিতেই হবে। অবশেষে অফিসারটি কাজের লোককে বলল, "যাও, দোকানের লাচ্ছি নিয়ে আস। কিন্তু এক ফোঁটাও যেন বিষ না থাকে। অথবা, আমি তো শুনেছি তোমার বাবুর্চি বন্ধু আছে। তাই তার কাছ থেকে বিষ ছাড়া লাচ্ছি রান্না করিয়ে আন। কিন্তু এনে ভুলেও বলো না যে, ওটা রান্না করা। বলতে হবে, দোকান থেকে কেনা।" চালাক কাজের লোকটি আবারও "ঠিক আছে" বলে চলে গেল। সে গিয়ে মিষ্টি মাঠা কিনে এনে বলল, লাচ্ছি এনেছি। আর বোতলটা বদলাতেও ভুলল না।