Sunday, November 24, 2019

Uncommon-প্রিয় রাজা

এক ছিল একটি ছোট দেশ। সেই দেশের নিয়ম ছিল, রাজপুত্রের বয়স ১৫ বছর হলেই রাজ্যভার তার হাতে ছেড়ে দেয়া হতো। তখন দেশের রাজা ছিল খুব uncommon-প্রিয়। তার দাদা ছিল নম্র, সাধাসিধে ও ন্যায়পরায়ণ। রাজা সবসময় সবার কাছ থেকে পরামর্শ নিত এবং সব মিলিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিত। সে চাইত তার দেশ যেন অন্য দেশের চেয়ে ভালো হয়। তার দাদা তাকে পরামর্শ দেয়, "আমি যখন রাজা ছিলাম, তখন আমি নিয়ম করেছিলাম, একেকজনের একেক রকম জিনিস থাকবে না, মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হবে। ধনী এবং গরীব। এবং ধনীদের সংখ্যা ও প্রত্যেক ধনীর সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি থাকবে। এমন ধনী থাকা যাবে না, যে গরীবকে সহায়তা করতে অক্ষম। আবার এমন গরীবও থাকা যাবে না যে, ধনীদের সহায়তা ছাড়া নিজেরাই খেতে-পরতে ও চলতে-ফিরতে পারে। অর্থাৎ, প্রত্যেককে হয় বেশি ধনী অথবা হতদরিদ্র হতে হবে, যাতে ধনীরা শ্রমের জন্য দরিদ্রদের উপর নির্ভরশীল থাকে এবং দরিদ্ররা সম্পদের জন্য ধনীদের উপর নির্ভরশীল থাকে। প্রতি ধনী পরিবার এক মাসে একজন গরীব মানুষকে সহযোগী হিসেবে রাখবে। সেই গরীব মানুষ ধনীদের কাজে সহায়তা করবে, এবং ধনীরা গরীব মানুষদেরকে পরিবারের সদস্য হিসেবে এক মাস রাখবে। এর পরের মাসে ঐ একই গরীব মানুষ আরেক ধনীর বাড়িতে গিয়ে থাকবে। এবং ঐ ধনী পরিবারে আরেকজন গরীব মানুষ আসবে। কিন্তু তখন সবাইকে একইভাবে একই খাবার খেয়ে এবং একই পোষাক পরে থাকতে হবে। এভাবে সবাই মিলেমিশে থাকবে। কিন্তু তোমার বাবার সময় তোমার বাবা এই নিয়ম বাতিল করে। সে চায়, সবাই নিজের মতো থাকবে। আমি তোমাকে পরামর্শ দেব, তুমি আমার সময়ের মতো নিয়ম কর। তাহলে তোমার নিয়মটাকে uncommon হবে। আর আমি জানি যে, তুমি uncommon পছন্দ কর।" রাজা তার দাদার পরামর্শ গ্রহণ করল। এবং এভাবেই সে দেশ চালাতে লাগল। কিন্তু তার একটি দোষ ছিল, সম্মানিত ব্যক্তিদের সকল পরামর্শই সে গ্রহণ করার চেষ্টা করতো। এক সময় তার দাদা মারা যায়। তাদের নিয়ম দেখাদেখি অন্য কিছু দেশও এই নিয়ম চালু করে। তাই রাজার আর এই নিয়ম ভালো লাগে না। সে নতুন uncommon নিয়ম খুঁজতে লাগল। তার এক শিক্ষক ছিল। সে ছিল বয়স্ক ও সম্মানিত। তাই রাজা তার কাছ থেকে পরামর্শ চাইলো। শিক্ষক যদিও ভালো শিক্ষক ছিল, কিন্তু তার পরামর্শ সবসময় ভালো হতো না। সে পরামর্শ দিল, "আপনাকে সর্বক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এমনকি মানুষের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার বেলায় খাবারের পরিমাণের ক্ষেত্রেও ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। অর্থাৎ, এক ব্যক্তি আরেক ব্যক্তির বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়ে যেই পরিমাণ খাবার খাবে, পরে সেই ব্যক্তি আবার প্রথম ব্যক্তির বাসায় এসে একই পরিমাণ খাবার খাবে।" রাজা এই অদ্ভুত নিয়ম গ্রহণ করল শুধুমাত্র uncommon হওয়ার জন্য। 
এই নিয়ম চালু করার পর সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও রাজা বলে দিয়েছিল, এই নিয়ম ভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হবে। এই ঘোষণার পর থেকে সবাই এই নিয়ম মানতে শুরু করল। সবার এই নিয়মে অসুবিধা হচ্ছিল। তারা রাজার কাছে বিচারও দিল। কিন্তু রাজা এসব কথা কানেই নেন না। তিনি বলেন, "আপনারা কি চান না যে, আমাদের দেশটি uncommon হবার দিক থেকে এগিয়ে থাকুক? যদি চান, তাহলে এক্ষণি চলে যান। আর না মানলে শাস্তি পাওয়ার জন্য তৈরি হোন। কারণ, এই নিয়ম না মানলে আমার আদেশ ভঙ্গ করা হবে।" এরপর একদিন রাজার এক ডায়াবেটিস রোগী আত্মীয় রাজবাড়িতে বেড়াতে এলো। তখন রাজা তাকে দুই মুঠো ভাত ও একটি ছোট রুটি সামান্য সবজি দিয়ে খেতে দিলেন। ডায়াবেটিস রোগী এসবই খেল। ধন্যবাদ জানিয়ে পরের সপ্তাহে রাজাকে দাওয়াত দিয়ে গেল। রাজা পরের সপ্তাহে দাওয়াত খেতে গেলেন। গিয়ে দেখলেন, তাঁর প্লেটে দুই মুঠো ভাত, একটি ছোট রুটি ও সামান্য সবজি দেয়া আছে। তিনি রাগ হয়ে গেলেন। বললেন, "এটা আমাকে কি খেতে দিয়েছেন? রাজাকে অপমান করছেন! কী ভেবেছেন? রাজার আত্মীয় বলে কিছু হবে না? এসব কি মানুষে খায়? এসব কেবল খায় ডায়াবেটিস রোগীরা। আমি কি আপনার মত নাকি? সুস্থ মানুষের পক্ষে কি এসব খাওয়া সম্ভব? এক্ষনি শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।" ডায়াবেটিস রোগী বললেন, "এ কী কথা বললেন! আমি তো আপনার আদেশ অমান্য করতে চাইনি। তার জন্যই তো আপনাকে এসব খেতে দিয়েছি। আচ্ছা, আমরা কি মানুষ নই? আমাদের কি কোন অধিকার নেই? যা করি, তাতেই দোষ!" রাজা বললেন, "মানে কি?" আত্মীয় বললেন, "আপনিই বলছেন, মানে কি! আপনিই তো নিয়ম জারি করেছেন যে, একজনের বাসায় এসে কেউ যা খেয়ে যাবে, তার বাসায় গিয়ে সে আবার সেই একই জিনিস একই পরিমাণে খেতে হবে। তাহলে এখন কেন আবার শাস্তি হবে?" এরপর রাজা ভুল বুঝতে পারলেন। তিনি তখনই রাজপ্রাসাদে গিয়ে ঘোষণা দেন, "ঐ নিয়ম এখন থেকে বাতিল করা হলো। আমি আমার ভুলের জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি।" এরপর থেকে আগের নিয়মই চালু রইলো। এখন আর রাজা uncommon এর চিন্তা করে না। এরপর থেকে সবাই রাজাকে আবার পছন্দ করতে শুরু করে এবং সবাই সুখে-শান্তিতে বাস করতে থাকে।