Thursday, July 10, 2014

বাবু স্কুলে যেতে চায় না

এক ছিল এক বাবু। সেই বাবুটার নাম ছিল তানিয়া। সেই বাবুটা স্কুলে যেতে চায় না। তার মা-বাবা বলে, "তুমি না অংক বেশি ভাল পার। তুমি স্কুলে না গেলে তো তুমি অংক শিখতে পারবে না। আজকে তো অংক লেখাবে। অংক বইও দিয়েছি, অংকের খাতাও দিয়েছি।" বাবু বলে, "না, মা। অংক পারি তো কি হল? অংক পারলে কি সবসময় অংক পড়ালেখা করব? বাংলা, ইংরেজি কিছু শিখা লাগে না?" "সেই তো, তাহলে তো স্কুলে যেতে হবে। স্কুলে না গেলে তো বাংলা-ইংরেজীও শেখা যাবে না।" "তাতে কি হবে? বাসায় বসে পড়ালিখা করব। তার মা বলে, "তবে পরীক্ষার সময় তুমি কি করবে?" "পরীক্ষার সময় স্কুলে যাব।" বলে, "তাহলে পরীক্ষার সময় যদি স্কুলে না যেতে চাও, তাহলে কিন্তু তোমার ফুফারা এসে চকলেট আনবে, সেই চকলেট শুধু তোমার ছোট বোনটা খাবে। তাহলে তোমাকে রেখে শুধু তোমার ছোট বোন খাবে।" তবে ওর ছোট বোনের নাম ছিল মতি। সেই মতি মজা দিয়ে চকলেট খাবে তোমাকে কিছু দেব না। পরীক্ষার সময় কিন্তু স্কুলে যেতেই হবে। "ঠিক আছে মা, স্কুলে যাব। তবে যেন দুই ঘন্টা বসিয়ে না রাখে।" "ঠিক আছে, তোমাকে দেড় ঘন্টা বসাবে। তোমাকে দুই ঘন্টা বসাবে না। আর তুমি পরীক্ষার সময় ভালভাবে লিখবে, আর ছবি আঁকবে। ছবি আকার রঙ যেন বাইরে না যায়।" তারপর তার মা বলছে, "তুমি স্কুলে যেতে চাও না কেন? এখন গেলেও তো অংক শেখা যায়। স্কুলের টাইম কিন্তু শেষ হয়ে যাবে। তুমি এখন দৌড়িয়ে যাও স্কুলে।" বলে, "মা, তবে আমার ব্যাগ কি তুমি গুছিয়ে দিয়েছ?" "কেন, আমি তো গুছিয়েই দেই রোজদিন।" "ঠিক আছে মা, স্কুলে যাই।" এ বলে চলে গেল। তারপর একদিন স্কুল থেকে এসে বলে, "মা, কালকে একটু স্কুলে যাব না।" "কেন? স্কুলে যাবে না কেন? স্কুলে না গেলে তো তুমি নতুন বই পড়তে পারবে না। নতুন বইতো আরবী বই। তুমি ক্লাসে না গেলে আরবী অক্ষরের কোনটা 'ছা', কোনটা 'তা' এটা তুমি শিখবে কি করে? তুমি তো আরবী অক্ষরই জান না। তোমরা শুধু বাংলা, ইংলিশ, অংক এসব শেখ। এখন তোমরা এইসব শিখতে পারবে, তুমি যদি কালকে স্কুলে যাও।" আসলে সেই মেয়েটির ইচ্ছে ছিল তার ছোট্ট বোনের সঙ্গে খেলা। এটা ছিল তার ইচ্ছা। সেইজন্য স্কুলে যাবে না। তারপর তার মা-বাবা তার কাছে এসে বলে, "তুমি নাকি রঙ করতে পছন্দ কর। আজকে তোমাদের ড্রইং হবে। তুমি তাই বলে স্কুলে যাও।" বলে, "না, মা। আজকে স্কুলে যাব না।" বলে, "কেন?" বলে, "মা, তুমি নিশ্চয়ই স্কুলে যাওয়ার জন্য ড্রইংয়ের কথা বলছ। আসলে সত্যি সত্যি ড্রইং হবে তো।" বলে, "না, ড্রইং তো হবেই। তুমি কেন এরকম করছ?" এরপর তার বাবা-মা বুঝল যে, তার ছোট বোনের সঙ্গে খেলার জন্য এরকম স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। তার বাবা-মা বুঝে বলল, "এখন ছোট বোনটাকে একটু ঘুম পাড়াই, হ্যাঁ।" তখন ঠিকই বাবুটা স্কুলে যেতে চাইল। তারপর স্কুলে গিয়ে দেখে, সত্যিই স্কুলে একটা গাছ আঁকতে দিয়েছে। আর পাশে একটা নৌকাও আঁকতে দিযেছে। অংক শেখে, বাংলা ছড়া লেখে, বই পড়ে, নতুন আরবী বইয়ের কোনটা কি অক্ষর সেইটাও বোঝে। বাসায় এসে দেখে, তার ছোট বোনটা ঘুম থেকে উঠে খেলছে তার ঝুনঝুনিটা নিয়ে। দৌড়িয়ে এসে ব্যাগ থেকে বই-টই বের করল, লেসন প্লানটা বের করে মাকে দিল, আরও কত কি করল। ব্যাগ গুছালো, ব্যাগ জায়গামত রাখল, বই-টইও গুছিয়ে রাখল। তারপর একদিন নাকি সেই একই কান্ড- স্কুলে যেতে চায় না। বলে, "মা, তুমি বলেছিলে না যে, দুই ঘন্টা বসাবে না। ড্রইংয়ের দিনে দুই ঘন্টা বসিয়েছে। তাই আমি স্কুলে যাব না।" "না, ড্রইংয়ের সময় তো গাছ, মাছ, টুল, নৌকা সব আঁকায়। সব আকতে দিলে তো দুই ঘন্টাই তো লাগবে ছবি আঁকতে। তবে আজ তুমি স্কুলে যাও। আজকে তো খালি লেখাপড়া, আজ আর দুই ঘন্টা তোমার বসতে হবে না। ড্রইংয়ের দিন তো অনেক সময় লাগে। তুমি অনেক শেখ, হ্যাঁ। তুমি তো কঠিন জিনিস উচ্চারণ করতে পার না। তুমি আজ স্কুলে গেলে কঠিন শব্দগুলি শিখতে পারবে।" তারপর সে স্কুলে গেল। অনেক কিছু শিখে এসে বলল, "মা, তুমি অনেকদিন টিফিনে নুডুস দাও না। কাল তো রবিবার, তুমি রবিবার আর সোমবার আমাকে নুডুস দেবে টিফিনে।" তখন তার মা-বাবা বলে, "ঠিক আছে, নুডুসই দেব। তুমি কি নুডুস খাবে? কোকোলা, নাকি সুপি নুডুস?" বলে, "মা, সুপি নুডুস ঝোল দিয়ে।" "ঠিক আছে, দিবনে ফুজি নুডুস। তবে তুমি সোমবার কি খাবে?" বলে, "সোমবার কোকোলা।" বলে, "ঠিক আছে, তাই দেবনে। তুমি সেদিন এসে বলো কি কি শিখিয়েছে।" তার পরের দিন সে এসে সব বলল। 

No comments:

Post a Comment