Monday, June 25, 2018

সঞ্চয়ী বউ

এক ছিল এক লোক। তার ছিল এক বউ। তার আবার একটি টাকার ড্রয়ার ছিল। ড্রয়ারে ছিল তিনটি তাক। একটাতে অনেক টাকা কিন্তু সে টাকা ব্যবহার করে না। দ্বিতীয় তাকটিতে ছিল ইমার্জেন্সির জন্য টাকা। আর সবথেকে নিচের তাকটিতে ছিল রেগুলারলি যে টাকা ইউজ করতে হয় সেই টাকা। তবে তার বর টাকা ইনকাম করত। তার অর্ধেক দিত বউকে, আর বাকি অর্ধেক লাগাতো নিজের কাজে। প্রথম ড্রয়ারে শুধু টাকা রেখেই দিয়েছে। কোনদিন ড্রয়ারটা খোলেও না, শুধু শুধু টাকা ভরে রেখেছে। আস্তে আস্তে তো অনেক দিন পার হচ্ছে। রেগুলার টাকা তো অনেকই শেষ হয়। আর ইমার্জেন্সি মানে সিরিয়াস জ্বর বা কোন অসুখ। আবার যখন রেগুলার টাকা শেষ হয়ে যায় আর মাসিক বেতনও তার বর পায় না, সেই সময় ইমার্জেন্সি ড্রয়ার থেকেই টাকা নেয়া হয়। দিন তো চলেই যাচ্ছে। একসময় দেখা গেল, তার বরের অফিসে খুব সমস্যা হয়েছে। তাই এক বছরের জন্য অফিস আর চালানো যাবে না। এই কথা শুনে লোকটি ভেঙ্গে পড়ল। এরপর সে তার বউকে বলল, "তোমার এমার্জেন্সি ড্রয়ার থেকে টাকা দাও তো!" তার বউ গিয়ে দেখল, বেশিরভাগ টাকাই খরচ হয়ে গেছে। ২০ টা ১০ টাকার নোট আছে, তার মানে ২০০ টাকা মাত্র। ২০০ টাকাই সে আপাতত বরকে দিল। তখন তার বর বলল, "আমাকে কি ৩০০ টাকা দেয়া যায়?" বউটি বলল, "কেন গো, তুমি কি করবে এত টাকা দিয়ে?" বরটা আমতা আমতা করে বলল, "আমার প্যান্টের পকেট ছিঁড়ে গেছে। আবার শার্টের বোতামও খুলে গেছে। সেগুলো আমি একটু মেরামত করব।" বউটি বলল, "তুমি কিভাবে মেরামত করবে?" বরটি রাগ হয়ে বলল, "ধূর! আমি মেরামত করব নাকি? মেরামত করাব।" এই বলে সে বারবার ৩০০ টাকা চাইতে লাগল। কিন্তু বউটি বলল, "আমার কাছে ৩০০ টাকা নেই। রেগুলার ড্রয়ার তো ফাঁকা। আর ইমার্জেন্সি ড্রয়ারে কেবল ২০০ টাকাই বেঁচে ছিল।" লোকটি বলল, "উপরের ড্রয়ার তো একদিনও খোল না। ঐ ড্রয়ারে টাকা আছে? অবশ্যই থাকবে। তোমাকে তো একদিনও দেখি না ঐ ড্রয়ার খুলতে। ঐ ড্রয়ার থেকে কি ১০০ টাকা আমাকে দেওয়া যায় না, নাকি?" বউ বলল, "আচ্ছা, তোমার কি আর শার্ট-প্যান্ট নেই? অন্যগুলো পর। হঠাৎ উপরের ড্রয়ার খুলতে যাব কেন? অনেকদিনই তো খুলি না। তাই এবারও না খুললেই হয়।" তারপর বরটি চলে গেল। এবার বউ উপরের ড্রয়ার থেকে কিছু টাকা দ্বিতীয় ড্রাজে রাখল। তারপর বর আসলে তাকে সেই দ্বিতীয় ড্রয়ার খুলেই প্রয়োজনীয় টাকা দিল। উপরের ড্রয়ারের সম্পদের হদিস বরের কাছ থেকে আড়ালেই রেখে দিল। কারণ, বর জানলে খরচ করে ফেলবে। এক সপ্তাহ পর একটি সুখবর হলো। বরের অফিস আবার চালু হয়েছে। কোনমতে সমস্যা মিটে গেছে। এরপর থেকে আগের মতই জীবন চলতে থাকল তাদের।

No comments:

Post a Comment