Tuesday, October 28, 2014

তালহা

এক বাড়িতে থাকত এক ছেলে। ছেলেটির নাম তালহা। তালহার একটি ছোট বোন ছিল। তালহা একদিন মায়ের কাছে বলল, "মা! আমার ছোট বোনটা কবে বড় হবে, মা?" এমন সময় তার বাবা মায়ের কাছে বলল, "জান, বাচ্চাদের একটা গুড়া গুড়া খাবার থাকে। সেই গুড়াটা পানির মধ্যে দিয়ে নাড়লে সেটা দুধের মত পাতলা হয়ে যায়। তারপর সেটা ফিডারে ভরে বাচ্চাকে খাওয়ালে বাচ্চার খুব মজা লাগে, সেটা খুব মিষ্টি। এটা খেলে বাচ্চার শরীর ভাল থাকবে, খেতে খেতে বড় হয়ে যাবে, তখন আর তালহা আমাদেরকে চেতাবে না। আমাদেরকে খালি সবসময় বলবে না যে, আমার বোনটি কবে বড় হবে। আমি সেটা এনেছি। কিন্তু ডেট এক্সপায়ার হয়ে গেলে আর খাওয়া যাবে না। ফেলে দিতে হবে। ফেলে দিয়ে আরেকটা প্যাকেট কিনে এনে সেটা খেতে হবে।" এটা বলে বাবা প্যাকেটটা দিয়ে গেল মায়ের কাছে। আর বলে গেল, "পানির মধ্যে তিন চামচ দিয়ে নাড়লেই খাওয়া যাবে। কিন্তু এক চামচ চিনি দিতে হবে।" তারপর একদিন তালহা একদিন ওর মাকে বলল, "মা, এ খাবারটা আমি ওকে খাইয়ে দেই।" তারপর তার মা বলল, "না বাবা, তুমি খাইয়ে দিতে পারবে না। তার একটা সিস্টেম আছে। এটা বেশি গরম করে খেতে হবে। কিন্তু সেটা এমন জিনিস, যেটা বেশি গরম হলে গলা পুড়ে যায় না, পেটের নাড়ি-ভুড়িও পুড়ে যায় না। এবং সেটা বেশি গরম করে খেতে হয়। নাহলে সেটির স্বাদটা মজা লাগে না। কিন্তু তুমি করলে বানাতেও তোমাকে হবে। কিন্তু তুমি এটা ওভানে দিতে পারবে না, বাবা। ওভেনে দিলে তোমার হাতটাও গরম হয়ে যেতে পারে। তুমি যদি ওটা ওভেন ছাড়ার সময় আগে ওভেনটা ছেড়ে তারপর ওটা ঢুকিয়ে দাও, তাহলে তোমার হাতটাও গরম হয়ে যেতে পারে। সেজন্য তুমি দিতে পারবে না, বাবা।" এ বলে বোনটি খেতে খেতে খেতে খেতে বড় হয়ে গেল। এবং সে ওটা খেয়ে অনেক মজা পেল। এবং বড় হয়েও সেটা খেতে চায়। এখন তার মা-বাবা তো বেকায়দায় পড়ে গেছে। এটা ছোটদের খাবার। এখন বড়রা খেলে কেমন দেখায়। এটা তো দুই বছর, এক বছর, আধা বছরের বাচ্চারা খায়। এখন ওর বয়স ৫ বছর, ছোটবেলায় খেতে মজা লেগেছে, এখন খাবে কি করে? তখন তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তখন তার বাবা বলল, "তোমরা চিন্তায় পড়ো না। পাঁচ বছরের জন্য আরেকটা আছে ওরকম। কিন্তু সেটা দুধের মত পাতলা নয়, আইসক্রিমের ক্রিমের মত পাতলা। সেটা আঙ্গুলে ভরিয়ে ভরিয়ে চেটে চেটে খেতে হয়। সেটা ফিডারে ভরে খাওয়া যাবে না।" এটা তার বাবা বলল। তখন তার মা তো একবারে খুশী হয়ে গেল। তার মা বলল, "ঠিক আছে, তাহলে তুমি সেটা কিনে আন।" তখন তার বাবা দৌড়ে একটা পয়সা নিয়ে দোকান থেকে কিনে আনল। তখন তার মা দানাগুলো পানির মধ্যে দিল। তখন থেকে আইসক্রিমের ক্রিমের মত গলে গেল। আর সেটা বার বছর পর্যন্ত খাওয়া যাবে। বার বছরের পর থেকে এমন একটা থাকবে, যেটা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে হয়। শুধু সবগুলোই বেশি গরম করে খেতে হবে। তখন তার মা সেটা সেই মেয়েটিকে খেতে দিল। মেয়েটি মজা করে খেতে লাগল। এদিকে তালহা কাঁদতে লাগল। "কেন যে এরা শুধু ঐটা খাওয়ায়? আর খেলতেই পারে না আমার সাথে। আমার দিকে খেয়ালই দেয় না, শুধু ঐটা খায়।"-বলে তালহা কাঁদতে কাঁদতে চোখের সব পানি শেষ করে দিল। তখন কিন্তু তালহা আর কাঁদতে পারে না। চোখের সব পানি তখনই শেষ হয়ে গেছে। তারপর তালহা কক্সবাজারে যেতে চাইল। তবুও সেই মেয়েটি বাসে চড়ে সেই খাবারটা খেতে লাগল। তালহা কক্সবাজারে গেল। তারপর তালহা একদিন চুপে চুপে হোটেল থেকে বাইরে এসে সমুদ্রের কাছে গেল। সমুদ্র থেকে একটু পানি নিয়ে চোখটা খোলা রেখে চোখটার ভিতরে সমুদ্রের পানি দিয়ে কিছুক্ষণ চোখ দুটো বুজে থাকল। তারপর খুলে কাঁদতে পারে। চোখের পানি আবার ফিরে পেল। তার পর চুপে চুপে আবার হোটেলে ফিরে এল। তারপর হোটেলের খাবার দাবার খুব মজা। কিন্তু বাচ্চাটি সেগুলো খেতে চাইল না। আসলে বাচ্চাটা ওটা খেলে ওটাই চিরদিন খেতে চাইত। তাই পাঁচ বছরের মেয়টিকে ওই মিষ্টি খাবারটাই খেতে দিল। তারপর যখন বার বছর হল, তখন তো আর সেইটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তখন আরেকটা কিনে আনল, সেটা পনির ভিতরে দিতে হয় না, সেটা কোন গুড়াই না, বড় বড় দানা, পানি তে ভিজিয়ে ভিজিয়ে কুচ কুচ করে ছোট ছোট দানা করে দুধে ভিজিয়ে একটা পাউরুটির সমান বানিয়ে কামড়িয়ে কামড়িয়ে খেতে হয়। মেয়েটি খেল। এখন মেয়েটির কথাই শুধু লেখা হচ্ছে। তালহার কথা আর লেখা হচ্ছে না। মেয়েটি সুখে-শান্তিতে থাকল। আর তালহা মেয়েটির সঙ্গে খেলতে পারল। কারণ, বার বছর থেকে পনের বছর পর্যন্ত সেটি খাওয়া যায়। ১৫ বছর পর্যন্ত খেতে খেতে খাওয়ার স্বাদটিই নষ্ট হয়ে গেল। তার আর ওই খাবারটাই ভাল লগল না, সবসময় খেত বলে আর ভাল লাগে না। তাই তালহার সাথে খেলতে পারল। কিন্তু সেই মেয়েটির নামটা লিখতে পারিনি। সেটা এখন লিখছি। মেয়েটির নাম হচ্ছে আদিবা। তবে এখন গল্পটা শেষ করে ফেললাম। 

No comments:

Post a Comment