Tuesday, June 2, 2015

বাবুর গল্প লেখা

একদিন এক মেয়ে সুমিতা যাচ্ছিল গল্প লেখতে। গল্পের বই বানানোর জন্য। বয়স খুবই কম। তারপরও আবার কম্পিউটারে গুগল ক্রোমটাও উল্টাপাল্টা টাইপ করে সেটা ফেলে দিয়েছে। এখন বলে, "আমি অনেক গল্প লিখব। কিন্তু ওয়েবসাইটে।" বাবা বলে, "না, এটা তো করা যাবে না। তুমিই তো আবোল তাবোল লিখে কি সব বানিয়ে দিয়েছ। আমার ইন্টারনেট গেছে। এত কষ্ট করে ইন্টারনেটটা ভালমত ভাইরাস থেকে বাচালাম, আর তুমি ইন্টারনেটটাকে ফলেই দিলে একেবারে! এমনকি ইন্টারনেটের একটা ওয়েবসাইটও আসছে না। ইন্টারনেট কেন তুমি ফেলে দিলে? এখন তো আর এটা লেখা যাবে .......না! লিখতে পারবে না! লিখতে হলে তো আবার তোকে উল্টাপাল্টা লিখে আবার নিয়ে আসতে হবে গুগল ক্রোম।" এবার বাবু বলল, "না, এবার আমি লিখব।" "ঠিক আছে, তাহলে তুমি ইন্টারনেটের সিডি কিনে নিয়ে এসো একা একা। এই আট বয়সী বাচ্চা বলে তারপরও সে আবোল তাবোল টাইপ করে গুগল ক্রোম ফেলে দিল।" তারপর মা এসে বলে, "কি হলো? আবার কিসের জেদ করল? তোমরা কিছু দেখ না বুঝি?" এখন বাবা আবার উত্তর দেয়, "দেখ যে তোমার মেয়ে কি কাণ্ড করে! বলে নাকি ইন্টারনেটে গল্প লেখবে ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইট কি করে বানায় সেটা তো আমি জানিই না। আমি জানি ইউটিউব, বিজয় ডিজিটাল, ব্লগার.কম। কিন্তু ব্লগারে ওয়েবসাইটটা বানাবোই বা কি করে, সেটাই তো আমি জানি না। আরো কত কি জানি, কিন্তু এটা জানি না।" তখন বাবার কথা শুনে মেয়ে চিতকার দিয়ে বলল, "আহা, আমি গল্প লেখব......।" মা মাথা গরম করে বলে, "এই মেয়ে! কত্ত বড় হয়ে গেছিস! তারপরও আবার উল্টাপাল্টা লেখিস কম্পিউটারে?" সে আর কী বলে! সুমিতা বলল, "না, তোমরা ইন্টারনেট আনতে জান। আর নাইলে আগে ইন্টারনেট চালু করেছিলে কিভাবে?" তখন বাবা আবার বলে, "ওরে! কি বলিস তুই? আমরা তো সরকারী কম্পিউটার কিনেছিলাম। ওখানে আগে থেকেই ইন্টারনেট রাখা থাকে সরকারী কম্পিউটারে রে!" "না, তোমরা জান ইন্টারনেট চালাতে। এটা আমি জানি। সরকার কি কম্পিউটার যারা দিয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করনি কেন? এখন আবার যাও, জিজ্ঞেস করে আস।" বাবা কি করবে? আবার গেল সেই সরকারী কম্পিউটারের অফিসে। গিয়ে জিজ্ঞেস করবে। কিন্তু কাকে? সেখানে ম্যানেজারের কাছ থেকে সরকারী কম্পিউটার নিয়েছিল আগে। কিন্তু এখন তো অন্য ম্যানেজার হয়েছে। এখন কি করবে? সেই অন্য ম্যানেজারকেই জিজ্ঞেস করে। "আচ্ছা, আমাদের কম্পিউটারের ইন্টারনেট কিভাবে চালায়?" "ও আমি জানি না। যাও তো তুমি। বিরক্ত করো না। আমার কাছে একজন সরকারী অফিস থেকে লোক আসবে। অন্য আরেকটা সরকারী অফিস থেকে। যাও এখন। সেই লোকের সাথে অনেক জরুরী কথা আছে। তুমি এখন আমাকে দিয়ে সময় নষ্ট করিও নাতো। পরে আমার অনেক কাজ আছে। নাস্তা জোগাড় করতে বলতে হবে রাধুনিকে। রাধুনি এখনো আসেনি। এখনো গাড়িতে। রাধুনি এসে পড়লেই বলতে হবে। এখন তোমার সাথে সময় নষ্ট করে করে আমার কোন লাভ নেই। যাও তো।" তখন বাবা বলে, "আচ্ছা, আপনি কি জানেন, এর আগের ম্যানেজার কে ছিলেন? ওনাকে একটু দেখিয়ে দেবেন?" বলে, "ওরে বোকা! এখন আবার পুরান ম্যানেজারের কথা বলছে। দেখ, বলেছি না, তোমার সাথে সময় নষ্ট করে আমার কোন লাভ নেই। যাও তো এখান থেকে।" বাবা বাসায় গিয়ে বলে, "তারা বলল না তো।" তখন মেয়ে বলে, "না, ওরা বলেছে তোমাকে। যাও এক্ষণি আমাকে নিয়ে চল। আমি দেখব, ম্যানেজাররা কিন্তু কোন সময় কারো গোপন কথা রাখতে চায় না। বলে দেয় সবাইকে। এটা জান তো?" বলে, "হ্যাঁ, জানি। আস আমার সাথে।"- বলে আবার মেয়েকে নিয়ে যেতে হলো। তারপর মেয়েকে নিয়ে ম্যানেজারের কাছে গিয়ে বলে, "ম্যানেজার ভাই! একটু বলে দেবেন? ইন্টারনেট কিভাবে চালায়?" তখন বলে, "ধুত, তুই আবার এসেছিস? তাও আবার নিজের মেয়েকে নিয়ে। বলেছিলাম না? কতবার আমাকে বলতে হয় যে, তোমার সাথে সময় নষ্ট করে আমার লাভ নেই। যাও তো এখান থেকে, যাও। আর এই মেয়ে, তুই নিশ্চয়ই ইন্টারনেটে ভিডিও দেখতে চাস অথবা অন্য কোন কিছু দেখতে চাস, বা অন্য কোন কিছু দেখতে চাস, নাহয় অন্য কোন কিছু লিখতে চাস। আর নাহলে আরো অনেক কিছু করতে চাস। শোন মেয়ে, যদি আবার বাবাকে নিয়ে পাঠিয়েছ, তবে কিন্তু আমি একেবারে ধরে একটা বকা দিয়ে দেব। আমি জানি, নিশ্চয়ই তুমি বাবাকে আবার পাঠিয়েছ। এখন যাও তো।" মেয়েকে নিয়ে বাবা আসল। তখন বলে, "দেখলে, তোকেই কেমন বকা দিল? দেখলে তো, ম্যানেজার বলল কিনা।" তখন বলে, "না, তুমি বলেছ, এটা কাউকে বলতে না। আমি জানি। সে জানে যে, ইন্টারনেট কিভাবে চালায়।" তখন বাবা বলে, "তুমিই তো যাবার আগে বলেছিলে, ম্যানেজাররা কারো কথা গোপন রাখে না, সবাইকে বলে দেয়। এখন দেখ।" এখন বলে, "না, আমি জানি।" তখন বলে, "ওরে দুষ্টু মেয়ে, এখন থেকে আমরা শিশুপার্কে যাব শুধু তোর ছোট বোনকে নিয়ে। তোকে ঘরে রেখে যাব। ছোট বোনকেই মজা করাব। তোকে নেবই না। কালকেই আমরা শিশুপার্কে যাব তোকে ফেলে রেখে।" তখন বলে, "না, আমি যাবই। তবু আমাকে বল, কিভাবে ইন্টারনেট চালায়। আমি ইন্টারনেট চালিয়ে লিখব গল্প।" বলে, "ঠিক আছে, শিশুপার্কে যাবি, কিন্তু কম্পিউটারের কথা যেন আর একবারও না বলিস। এবার একবার যখন বলে দিয়েছি না বলিস, তখন আর বলা যাবে না যে, না, কম্পিউটারের কথা বলব।" তখন একদিন মা কম্পিউটার শেখার স্কুলে বাচ্চাটাকে ভর্তি করে দিল। ইন্টারনেট কিভাবে চালাতে হয় শিখে আসল। তারপর কম্পিউটারে গল্প লিখল।

No comments:

Post a Comment