Friday, June 5, 2015

মা ও চামেলী

এক গ্রামে চামেলী নামে এক ছোট মেয়ে ছিল। তার একটি ছোট ভাই ছিল। তার নাম জামিল। একদিন জামিল চামেলীকে বলল, "চামেলী! ও চামেলী! তুমি বলতে পার, তোমার ছুটি কবে থেকে শুরু হবে?" "এই তো। পরীক্ষা শেষ হয়ে এল। তোমার ছুটি হলেই আমাকে মা স্কুলে ভর্তি করে দেবে প্লে গ্রুপে।" তখন চামেলী বলল, "ওরে ভাই, তুমি কি আর বোঝ না ভাই? আমার ছুটি অনেক দেরী আছে। রোজার মাস আসতে অনেক দেরি। এখন এই কেবল মার্চ মাসের ১২ তারিখ ২০১৫ সালে। আরও তিন চার মাস বাকি আছে। তা হতে কত দেরী হবে বলতো ভাই আমার।" তখন ছোট ভাই মায়ের কাছে গিয়ে বলল, "চামেলীকে জোরে একটা বকা দাও। ও কি বলেছে জান? তাড়াতাড়ি যাও।" বলে, "কি করেছে? নিশ্চয়ই চামেলী তোকে মেরেছে, আমি গিয়ে এক্ষুণি দেখছি।" বলে চামিলী কে বলল, "এই তোর এত বড় সাহস? ্‌ামার ছেলেকে বকিস? দাড়া, তোর আজ খবর আচে।" বলে, "মা, না মা, তা না। আমি ....।" "এই চুপ কর, আর আমি আমি বলে লাভ নেই। আজ দেখিস, তোর কি অবস্থা করি।" বলে, "মা, ও শুধু জিজ্ঞেস করেছিল যে, ছুটি কখন হবে। আমি বলেছি, ও ভাই, ছুটি হতে অনেক দেরি। তাই সে দু:খ পেয়েছে। তুম্ ামায় এত ই করো না। মা তুমি যাও তো। তোমার কাজে যাও।" তখন মা আরে ারেগে বলে, "ওরে খুকুমনি, চামেলী, তোর এত বড় সাহস? আবার মিথ্যে কথা বলতে এসেছিস?" বলে, "না মা, আমি মিথ্যে কথা বলছি না। সত্যিই বলছি।" "ধুর গাধা, এমন গাধার মত বোকামি কেউ করে? দেখিছেস, রূপা কত ছোট মেয়ে। রুপা রবয়স দউ বছর। ও সে তার ছোট বোন এক বয়সী বাচ্চাকে অনেক আদর করে। আর তোর কয় বছর? সাত বছর। আর তোর এই ছোট ভাইয়ের কয় বছর? সাড়ে তিন বছর। জানিস না? মনে হয় যেন, জীবনে মিথ্যে কথা বলেনি, কেবল আজ কেবল মিথ্যে কথা বলছে।" চামেলী বলল, "মা, তুমি জান না। আমার ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করে দেখ।" বলে, "ঠিক আছে, যাচ্ছি এখনই ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করতে।" ছোট ভাই জামিলকে গিয়ে মা বলল, "বল তো আমার সোনা জামিল, তোর বোন তোকে কি বলেছিল?" বলে, "আমি জিজ্ঞেস করছিলাম ওর ছিুটি কখন হবে? আর ও বলছিল তা হতে আরো তিন চার মাস বাকি। তাই আমি তোমাকে এমন করতে বলেছি।" বলে, "ওরে, এটা তো সব দোষ তোর। এততো বড় সাহস তো, তুই আমার চামেলীর নামে এ কথা বলিস।" বলে, "মা, তুমি কিন্তু ভুল বলছ। আমি ওর ছোট। জান না তুমি? এখন আবার এমন বলছ কেন?" "ওরে আবার সাহসী কথা! তোকে আমি চকলেট কিনে দেব না। শুধু চামেলীর জন্য  ছয়টা  চকলেট কিনে দিব। আমি এখন চামেরীর কাছে যাই।"- বলে মা চামেলীর কাছে গিয়ে বলল, "আয় আমার সোনা। আমি তোকে চকলেট কিানে দিলে একটা চকলেটও দিবি না জামিলকে।" বলে, "না মা। তুমিই তো বললে। রূপা ওর ছোট বোনকে অনেক আদর করে।" বলে, "ও রে আমার সোনা রে। তোর জামিল তো কিছুই বোঝে না। জামিলকে আমি স্কুলেই ভর্তি করব না। জামিল স্কুলকে পছন্দ করে। ওর জন্য স্কুলে যাওয়া দরকার। কিন্তু আমি ওকে স্কুলে ভর্তি করব না। বাবাকে বলে রাখিস, যেন জামিলের জন্য একটা চকলেটও না আনে, আর জামিলকে যেন শিশুপার্কের টিকেটও না কাটে তার জন্য।" আর চামেলীকে বলে, "বাবাকে বলে রাখিস যেন এই কথা।" চামেলী মায়ের কথা খুব শুনত। তাই বাবাকে সত্যি সত্যি বলে দিল। আর জামিলকে একটা চকলেটও দিল না। জামিল তো সারাদিন শুধু কাঁদে। বলে, "আমাকে চকলেট্ কিনে দেয় না কেন বাবা? আমাকে মা চকলেট কিনে দেয়নি কেন? চামেলীও আমাকে একটা চকলেট দিল না কেন?"- বলে সে রাগ করে বাড়ির বাইরে গিয়ে অন্য একজন মাঠের বন্ধুর বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিল। সে আর নিজের বাসায় থাকবেই না। সেই বাসায় নাবিল একটি ছেলের নাম, সে রোজ খেলতে যেত, তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। চামেলী, মা, বাবা ও কাজের মেয়ে সকলে মিলে ডাকতে লাগল, "জামিল, তুমি কোথায়? জামিল, রাগ করে বাড়ি থেকে পালিয়েছিস কেন? যদি এমন হয়, তোকে আমি সত্যি সত্যি শিশুপার্কের টিাকেট কাটব না। ও জামিল, তাড়াতাড়ি বের হ, নাহলে কিন্তু সত্যি সত্যি করে দেব এই কাজ। ও জামিল, তুই কোথায়?"  জামিল কিন্তু ঐ ছেলের সাথে খেলতেই ব্যস্ত আছে। কোন কথাই সে শুনল না। সবার বাড়িতে বলে, "জামিল আছে, জামিল? সাড়ে তিন বছরের ছেলে। দেখেছেন কোথাও আপনারা?" বলে সব ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, কেউ বলে না। জামিল যেই বাসায় আছে, সেই বাসার সবাইকে গাড়িতে করে নিয়ে জামিলকেও নিয়ে গেল শিশুপার্কে বেড়াতে, যখন খোঁজাখুঁজি হচ্ছিল। জামিল মিশুপার্কে ঘুরে বেড়িয়ে  ঘোড়ায় চড়ে চকলেট কিনে বেলুন কিনে ঘরে ফিরল। তাও আবার নিজের বাড়িতে নয়, নাবিলের বাড়িতে।

No comments:

Post a Comment