Monday, February 29, 2016

রিমার গল্প

‌এক শহরে বাস করত এক মেয়ে। তার নাম রিমা। তার কিসের সাধ জান? খুবই জটিল। এই সাধ আমরা পূরণ করব কিভাবে? এত ছোট বাচ্চা কিভাবে এই কাজ করতে পারে? রিমা তার বড় বোন সিমাকে বলল, "সিমা আপু! শোন। আমার না একটা শখ। আমি মহাকাশের গবেষণা করতে চাই। আমি সেটার বিজ্ঞানী হতে চাই। এটা একটু পূরণ করে দেবে? শুধু তুমি একা। বড়দেরকে বলো না। বড়রা বলবে, এই পাগল! কি করছ? এটা সম্ভব কিভাবে?- বলে বকবে। বড়দের বলো না। শুধু তুমিই আমার এ ইচ্ছাটা পূরণ করে ফেল।" সিমা বলল, "উহ! আমিও তো ছোট। আমি কি করে তোমার ইচ্ছা পূরণ করব, বল দেখি? আমারও তো বার বছর বয়স। তুমি বরং বড়দেরকেই বল। তার আগে বলো যে, আমাকে কথা দাও যে, আমাকে বকবে না। আমাকে বোকা বা পাগল এই টাইপের কিছু বলবে না। আমি একটা কথা বলছি।- বলে তোমার ইচ্ছে পূরণের কথা সবাইকে বলবে, যদি তারা বলে যে, কথা রাখবে।" "কিন্তু আমি বড়দেরকে বলব? আমার না খুব ভয় করে। যদি বকা দেয়। যদি কথা না রাখে। আমি যদি কাঁদি, তখন আবার বলবে, এত বড় মেয়ে কাঁদে নাকি। বলে আবার বকবে। আমার না ভয় করে খুব। কতবার বলব যে ভয়ের কথা। তুমি বরং বল যে, আমি বিজ্ঞানী হতে চাই।" তখন বড় বোন বলল, "আ-হা-হা-হাহা। সামান্য একটু বকাকে ভয় পেলে চলবে? আ.হা.হা.হা (হাসি)। আমার কাছে তো কোন ব্যাপারই না। আমার ভয়, যদি কোন শাস্তি দেয়। বকা বা মার কোন শাস্তি নাকি? হা..হা..হা...। কতবারে তো হাসতে হবে? আমার অনেক হাসি আসে। আমি চট করে বলব। বকা দেয়ার আগেই সরে যাব। আমার সাথে তোমাকে থাকতে হবে। এততো ভয় পেলে আমি কিন্তু বলে দেব, তুমিই আমাকে বলতে বলেছ, তুমি বকা ভয় পাও। তখন কিন্তু মানুষে হাসবে যে, বড় হয়ে গেল, এত ভয় পেলে চলবে বকাকে?- এই বলে হাসবে। তোমাকে যেতে হবে কিন্তু। আমার আবার পরীক্ষা আছে। আমি একটু দেখি, কি আছে। তারপরই বলছি। হা..হা..হা। এত হাসাচ্ছ কেন?"- এই বলে বড় বোন খাতা দেখে একটু পড়ে ফেলল। তারপর আসল। বলল, "রিমা! কথা মনে আছে? চল, মা-বাবা কোথায়?" তখন রিমা বলল, "চল, যাই। মা রান্নাঘরে। বাবা পাশের রুমে পেপার পড়ছে।" ওরা দু'জন আগে বাবার কাছে গেল। কারণ, মাকে বললে মা বেশি বকা দেবে। মা একটু রাগী। মা এরকম বলবে, "ও..মঁ! উনি নাকি বিজ্ঞানী হবে? কী শখ! লেখা নাই, পড়া নাই, কিছু নাই, এত ছুটু মানুষ! যাহ! এত রাগাস না। একশ বছর হলে বিজ্ঞানী হবি। এত ছোটবেলায় হওয়ার দরকার নেই। যা তো।"- এই বলত মা। তাই তারা বাবার কাছে গেল। বাবাকে বলল, "বাবা! আগে আমাকে কথা দাও, তুমি আমাকে বকবে না, পাগল বা বোকা টাইপের কিছু বলবে না। একটুও বকা যাবে না, একটুও মারা যাবে না। মানা করলে বুঝিয়ে বলবে। কিন্তু একটু যদি বকা দাও, আমি কিন্তু তোমার সব কাজের জিনিস ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেব। কথা দিতে পারবে? আমি একটা কথা বলব। সেই কথার জন্য তুমি কথা দাও।" বাবা ভাবল, কথা দিয়েই দেই। বলল, "আচ্ছা, কথা রাখব। তুমি বল।" তখন রিমা বলল, "আমার বিজ্ঞানী হওয়ার শখ। আমি মহাকাশ গবেষণা করতে চাই। এবার যদি বক, তবে কিন্তু তোমার সব জিনিস ময়লার ঝুড়িতে ফেলবই ফেলব।" তখন বাবা বলল, "এটা আবার কি বলছ? অংকে সবসময় কম নম্বর পাও। অংক না জানলে তো বিজ্ঞানী হতে পারবে না। বিজ্ঞান ক্লাসেও তো কিচ্ছু পড়তে পার না। পরীক্ষায় কিছু পারও না। বিজ্ঞান, অংক এ দুটোই তো বিজ্ঞানী হওয়ার আসল জিনিস। এগুলো ভাল করে পড়বে। অংক পড়লে কিন্তু ডাক্তারও হওয়া যাবে। অনেক বড় হও। তারপরে বিজ্ঞানী হবে। তুমি বড় হয়ে বিজ্ঞানী হতে চাও? আচ্ছা, বিজ্ঞানী বানিয়ে দেব। মহাকাশ বিজ্ঞানী? আচ্ছা, বানিয়ে দেব। এবার যেন বিজ্ঞানে আর অংকে ফুল নম্বর পাও।" তারপর রিমা এখন থেকে প্রতিবারই অংকে এবং বিজ্ঞানে ভাল করে। বড় হয়ে সে বিজ্ঞানী হওয়ার কথাটা মনে করল। বাবাকে বলল, "মনে আছে নাকি বিজ্ঞানী হওয়ার কথাটা? আমার সব ক্লাসের রেজাল্ট দেখ।" বাবা অবাক হয়ে গেল। বলল, "আমার একটা চেনা গবেষণাগার আছে। অনেক দূরে। ঐখানে নাকি দুই সপ্তাহ পর বিজ্ঞানী হওয়ার পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় পাস করতে পারলে বিজ্ঞানী হয়ে যাবে। আজ থেকে পড়া শুরু কর।" তখন রিমা পড়া শুরু করল। পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেল। পাশ করল। সত্যি একজন বিজ্ঞানী হয়ে গেল। এখন প্রতিদিন সে গবেষণাগারে যায় এবং গবেষণা করে। কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা অনেক কিছু শিখতে চায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুধু খোঁজে, কোন কোর্স হয় কিনা। আর বিজ্ঞানীদের কাছে প্রায়ই আসে, আর জানতে চায়, কিছু শেখাতে পারবে কিনা। রিমার কাছেও আসে, শিখে যায়।

No comments:

Post a Comment