Monday, May 18, 2015

বোকা লোকের ভালো দাঁত

এক ছিল এক লোক। লোকটির বড়ই শখ ছিল অনেক সুন্দর দাঁত নিজের মুখে আনার। তাহলে ও বেশি সুন্দর মেয়েকে এবং ভাল মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে। আর তার দাঁত মাজতে মোটেই পছন্দ না। রাত্রেবেলা ঘুমের চোখ নিয়ে দাঁত মেজে তারপর ঘুমোতে যেতে হয়। আর সে লোকটি বড্ড বোকা ছিল। তার যে অনেক আগে দাঁত পড়েছে এটা তার মনেই নেই। আর তার বয়স কত বেশি। এত কয় বছরের কথা মনে থাকে বল? ৮/৯/৭ এই বছরগুলোতে না দাঁত পড়েছে। সেই কথা কি আর মনে থাকে বল? তার বয়স কত হয়েছে? তাই সে আর মনে ছিল না। সে ভাবল, আচ্ছা, দাঁত না মেজে যদি এটা পরিস্কার রাখতে চাই, তবে এই দাঁতগুলো ফেলে দেই, তবে আরো নতুন সুন্দর দাঁত গজাবে। আর বড্ড বোকা ছিল। আর তার এতটুকুও মাথায় ছিল না যে, নতুন দাঁত গজালেও সেটাও মাজতে হবে। আর তার একটা খরগোশ বন্ধু ছিল। খরগোশ বন্ধু তাকে অনেকবার বোকা বুদ্ধি সরিয়ে ভাল বুদ্ধি কিছু শেখাতে চেয়েছিল কিন্তু সে শোনে না। সে শুধু নিজের ইচ্ছামত কাজ করত। তাই খরগোশ বন্ধু রাগ করে তাকে আর কোনদিনই বুদ্ধি দেয় না। সমস্যায় পড়লেও দেয় না। এখন সে তো দাঁত না নড়তে নতুন দাঁত, তবুও সে আরেকটা নতুন দাঁত গজাবে- সেটা সে চায়। এখন সে দাঁত নাড়াতে শুরু করে। একদিন ওদিকের দাঁত, আরেকদিন ওপাশের দাঁত, আরেকদিন এপাশের দাঁত নাড়ায়। দাঁত পড়ার পর আর কোন নতুন দাঁত গজায় না। তারপর একদিন তার খরগোশ বন্ধুটির কাছে গিয়ে বলল, "বাড়িতে আছ? নতুন দাঁত গজিয়ে দাও না।" এমন সময় খরগোশ বেরিয়ে এসে বলে, "তুমি তো আমার একটুও বুদ্ধির কথা শুনছিলে না। এখন দেখ কি হল।" লোকটি বলে, "আমি তোমায় পারলে ৭০টা গাজর মূলা দিতে পারি, আর অনেক ধরনের সবজি দিতে পারি, তুমি নতুন দাঁত গজিয়ে দাও।" "না, না, না। আমি গজিয়ে দিতে পারব না। আমার আগে আমার বোধশক্তি, কথা, বুদ্ধির কথা তুমি জেনে নিলে ভাল হতো। আর নাহলে তোমার এ অবস্থা হতো না। তুমি কেন আমার কথা শুনছিলে না? এখন দেখ, তুমি আমাকে যতই সবজি, গাজর এগুলো দাও না কেন, আমি পারব না। পারলে তুমি নকল দাঁত লাগিয়ে নাও। নকল দাঁত লাগালে দাঁত অনেক ময়লা হয়ে থাকবে। তোমার আগের দাঁত না মাজলেও যতটুকু ময়লা থাকত তার থেকেও অনেক বেশি ময়লা থাকবে। আর দাঁত বেশি মাজতে গেলে নকল দাঁতও পড়ে যেতে পারে। তুমি কেন আমার কথা শুনলে না? বোঝ এবার ঠেলা। তুমি যাও।" এখন সে কি আর করে। দাঁত ময়লা করে, আর একদম অনেক একটি খারাপ বউকে বিয়ে করে। চোর বউ। চুরি করে। একদিন সে লোকটি তো দাঁত সুন্দর নেই। তাই সে ঘরে অনেক পয়সা ছিল, পয়সা দিয়ে নকল সোনা বানিয়ে রাখল। আর সেই নকল সোনা দেখে সবাই মনে করবে যে, আসল সোনা। ভেবে তারা তাকে ঐ সোনা দেখে তাকে বুদ্ধিমান বলবে। আর সেই নকল সোনায় হলুদ রং একটু গাঢ় হালকা বেড়ে কমে গেল। সোনার রং যেটুকু হল সেটুকু হলুদ পেল না। সোনালী রঙের টা পেল না। এমনি কমে-বেড়ে গেল হলুদ রং। অতএব মানুষেরা বলে, "ছি ছি ছি। লজ্জা শরম কিচ্ছু নেই। নকল সোনা বানিয়ে ঘরে রাখে। আবার দাঁত নোংরা করে বসে আছে। এ তো দেখি পরিস্কার খাবারও খায় না, নাকি? এ মনে হচ্ছে একদম ভুতুড়ে কালো কাকের মাংস কাঁচা খায়। তাও আবার রান্না না করে।" এরকম বলে মানুষেরা তো লজ্জায় মরে, "ছি! আমরা একে কতো দেখেছি। এনার সাথে অনেক বন্ধু হয়েছিলাম। সে দাঁত মাজতে কষ্ট হতো, তাই আমরা তাকে ব্রাশ কিনে দিয়েছিলাম। অনেক উপহার দিয়েছিলাম। এখন তো দেখছি, এর কি হল।" এই বলে তো লজ্জায় মরে, আর সেই বেটা তো সবার থেকে, যেরকম লেংটু হলে যেরকম লজ্জা লাগে, তার থেকেও অনেক বেশি লজ্জায় মরে। আর একদিন সে একটা আসল সোনার গলার হার কিনল। আর পায়ের নুপুর। আর একটি রুপোর কানের দুল আর রুপোর হাতের চুরি। সেগুলো সে মেয়ে সাজবে বলে ভাবল। মেয়ে সেজে থাকবে আর মানুষেরা ভাববে, সেই লোকটি নিশ্চয়ই লজ্জায় বিদেশে চলে গেছে। আর ভাববে, নিশ্চয়ই এমন কোন বিদেশে গেছে জায়গা নেই। আর এই মেয়েটি বিদেশ থেকে এসেছে। এটা ভাববে, তাই এগুলো কিনে রেখেছে। আর এই ফাকে বউটা তো চোর ছিল, সেই গয়না সব চুরি করে নিল। আর সেই লোকটির একটি দাঁত ঢাকার কাপড়ও চুরি করে নিল। সেইগুলো নিয়ে সেগুলো অনেক পরিস্কার করে সেই গয়নাগুলো নিজের গায়ে দিল আর সেই কাপড় অনেক ঘষে ঘষে বেশি পরিস্কার করে সেইগুলো দিয়ে নিজের গা মুছল। সেই লোকটি এখন তো মাথা খারাপ! বলে, "হায় হায় রে, কেন যে খরগোশের কথা শুনলাম না রে? খরগোশ উপায় বলে দিল না কেন? আমি তো তাকে অনেক সবজি আর গাজর আর মূলা দিতাম। ইস, কেন যে শুনিনি!" এখন সেই লোকটি যেই জিনিস কিনে ঐ দাঁতের আটকানোর চেষ্টা করে, সেই সব জিনিসই ঐ বউ চুরি করে পরিস্কার করে রাখে নিজের ব্যবহারের জন্য। আর ঐ খরগোশ বলে, "ব্যাটা আমার কথা শোনেনি, এখন বোঝে ঠেলা।" এখন ঐ লোকটি ঘরে লুকোতেও পারে না। বেশি মোটা। লুকোলেও দেখা যায়। এখন কী আর করে? খরগোশের কাছে গিয়ে মাফ চায়। খরগোশ রোজ রাতে ঘুমায়। আর লোকটা তখন টেবিলে অনেক রকমের সবজি রেখে যায়। তারপরও খামাখা তার সবজি নষ্ট হয়, কিন্তু তার সুন্দর দাঁত কোনদিনও আসে না।

শিক্ষা: বেশি ভাল করতে গেলে এই লোকটির মতই অবস্থা হয়। অর্থাত, বেশি খারাপ হয়ে যায়।

No comments:

Post a Comment